রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২ : মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশে তৈরি প্রথম রকেট

বাংলাদেশে রকেট তৈরির আইডিয়া দিয়ে দুই উদ্ভাবক রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২ এর সেরা উদ্ভাবক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশে তৈরি সেই প্রথম রকেট। গত ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ রাজধানীর বিএএফ শাহীন হলে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমআরএএইউ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২-এর বিজয়ী উদ্ভাবকদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেয়া হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসএমআরএএইউ-এর উপাচার্য এয়ার ভাইস মার্শাল এ এস এম ফখরুল ইসলাম।

শিক্ষামন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী উদ্ভাবক আজাদুল হককে (ব্রিজ টু বাংলাদেশ) ১ কোটি টাকা এবং উদ্ভাবক নাহিয়ান আল রহমান অলিকে (ধুমকেতু এক্স) ৫০ লাখ টাকার সিডমানি এবং সার্টিফিকেট তুলে দেন। রকেট নির্মাণ-উৎক্ষেপণ, উড্ডয়ন-পরীক্ষণ, গবেষণা-উন্নয়ন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রমে আগ্রহ বৃদ্ধি এবং দেশে একটি রকেট্রি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটুআই এবং বিএসএমআরএএইউ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২ আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে আসা ১২৪টি উদ্ভাবনী আইডিয়া থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই, বুটক্যাম্প, গ্রুমিং এবং টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন প্যানেলসহ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে বিচারকম-লী দুটি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি মহাকাশ গবেষণায় উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মহাকাশবিষয়ক উচ্চশিক্ষার জন্য সরকার ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারো স্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া মহাকাশ গবেষণায় দেশীয় সক্ষমতা অর্জনে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির উদ্দেশ্যে ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের গবেষণা খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নেন, তখন অনেকেই বলেছেন আমাদের দেশের মানুষ ৩ বেলা খেয়ে বেঁচে থাকলেই হয়, সেখানে কেন এই উদ্যোগ নিচ্ছেন? কিন্তু আজ ১৪ বছর পর করোনাকালীন সময় বাংলাদেশের সব মানুষ বুঝতে পেরেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন না করলে করোনাকালীন সময়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শিক্ষা-বাণিজ্য-বিচার ব্যবস্থা চলমান রাখতে পারতাম না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক এবং উন্নত আয়ের উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা স্মার্ট লিডারশিপ একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্যাশলেস, ট্রান্সপারেন্ট এবং অ্যাকাউন্টেবল পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের সব কার্যক্রমে পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি স্মার্ট গভর্নমেন্ট তৈরি করা হবে। স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার, এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, মানুষের উদ্ভাবনী চিন্তাগুলোকে মাঠপর্যায় থেকে তুলে এনে সফলভাবে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে এটুআই কাজ করে যাচ্ছে। এটুআই ইতোমধ্যে ২৭৩টি উদ্ভাবনকে ইনোভেশন ফান্ড প্রদান করা হয়েছে। এইসব উদ্ভাবনের মধ্যে ইতোমধ্যে ডুয়েল সিস্টেম রেফ্রিজারেটর এবং স্বল্পমূল্যের ইলেক্ট্রিক যানবাহনসহ অনেকগুলো উদ্ভাবনকে বাজারজাতকরণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। আমরা শুধু রকেট লঞ্চ নিয়ে ভাবছি না, বরং ভবিষ্যতে স্পেস ইকোনমি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে কাজ করতে চাই। এ লক্ষ্যে স্পারসোর সঙ্গে আমরা দ্রুতই কাজ শুরু করব।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসএমআরএএইউ-এর প্রো-উপাচার্য এয়ার কমোডর এ টি এম হাবিবুর রহমান; এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, এটুআই ইনোভেশন ফান্ড প্রধান নাঈম আশরাফী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৯ মাঘ ১৪২৯, ২৯ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২ : মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশে তৈরি প্রথম রকেট

image

বাংলাদেশে রকেট তৈরির আইডিয়া দিয়ে দুই উদ্ভাবক রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২ এর সেরা উদ্ভাবক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশে তৈরি সেই প্রথম রকেট। গত ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ রাজধানীর বিএএফ শাহীন হলে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমআরএএইউ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২-এর বিজয়ী উদ্ভাবকদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেয়া হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসএমআরএএইউ-এর উপাচার্য এয়ার ভাইস মার্শাল এ এস এম ফখরুল ইসলাম।

শিক্ষামন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী উদ্ভাবক আজাদুল হককে (ব্রিজ টু বাংলাদেশ) ১ কোটি টাকা এবং উদ্ভাবক নাহিয়ান আল রহমান অলিকে (ধুমকেতু এক্স) ৫০ লাখ টাকার সিডমানি এবং সার্টিফিকেট তুলে দেন। রকেট নির্মাণ-উৎক্ষেপণ, উড্ডয়ন-পরীক্ষণ, গবেষণা-উন্নয়ন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রমে আগ্রহ বৃদ্ধি এবং দেশে একটি রকেট্রি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটুআই এবং বিএসএমআরএএইউ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২ আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে আসা ১২৪টি উদ্ভাবনী আইডিয়া থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই, বুটক্যাম্প, গ্রুমিং এবং টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন প্যানেলসহ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে বিচারকম-লী দুটি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি মহাকাশ গবেষণায় উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মহাকাশবিষয়ক উচ্চশিক্ষার জন্য সরকার ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারো স্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া মহাকাশ গবেষণায় দেশীয় সক্ষমতা অর্জনে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির উদ্দেশ্যে ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের গবেষণা খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নেন, তখন অনেকেই বলেছেন আমাদের দেশের মানুষ ৩ বেলা খেয়ে বেঁচে থাকলেই হয়, সেখানে কেন এই উদ্যোগ নিচ্ছেন? কিন্তু আজ ১৪ বছর পর করোনাকালীন সময় বাংলাদেশের সব মানুষ বুঝতে পেরেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন না করলে করোনাকালীন সময়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শিক্ষা-বাণিজ্য-বিচার ব্যবস্থা চলমান রাখতে পারতাম না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক এবং উন্নত আয়ের উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা স্মার্ট লিডারশিপ একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্যাশলেস, ট্রান্সপারেন্ট এবং অ্যাকাউন্টেবল পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের সব কার্যক্রমে পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি স্মার্ট গভর্নমেন্ট তৈরি করা হবে। স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার, এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, মানুষের উদ্ভাবনী চিন্তাগুলোকে মাঠপর্যায় থেকে তুলে এনে সফলভাবে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে এটুআই কাজ করে যাচ্ছে। এটুআই ইতোমধ্যে ২৭৩টি উদ্ভাবনকে ইনোভেশন ফান্ড প্রদান করা হয়েছে। এইসব উদ্ভাবনের মধ্যে ইতোমধ্যে ডুয়েল সিস্টেম রেফ্রিজারেটর এবং স্বল্পমূল্যের ইলেক্ট্রিক যানবাহনসহ অনেকগুলো উদ্ভাবনকে বাজারজাতকরণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। আমরা শুধু রকেট লঞ্চ নিয়ে ভাবছি না, বরং ভবিষ্যতে স্পেস ইকোনমি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে কাজ করতে চাই। এ লক্ষ্যে স্পারসোর সঙ্গে আমরা দ্রুতই কাজ শুরু করব।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসএমআরএএইউ-এর প্রো-উপাচার্য এয়ার কমোডর এ টি এম হাবিবুর রহমান; এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, এটুআই ইনোভেশন ফান্ড প্রধান নাঈম আশরাফী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।