‘এজেন্সি টু ইনোভেট’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য মন্ত্রিসভা ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন-২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
এ এজেন্সি তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনীর সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সরকারের একটা পলিসি তৈরি বা ইনোভেশনকে উৎসাহিত করবে- এ রকম একটা পরিবেশ তৈরির জন্য সহযোগিতা দেবে।’
মন্ত্রিসভা আইনটি ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে’ পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটুআই প্রথমে ছিল অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন, তারপর অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট, এখন এসে বলছি এজেন্সি টু ইনোভেট। এটি আগে ছিল প্রকল্প। এখন এজেন্সি হিসেবে গঠনের জন্য আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছিল।’
আইনের উদ্দেশ্য ‘পূরণকল্পে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর’ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দেশের নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের অগ্রসর প্রযুক্তি সম্পর্কিত দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রণোদনা এবং জনসচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদান; জনকল্যাণে প্রযুক্তিবিষয়ক উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণায় উদ্ভাবিত পণ্য ও সেবার মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ; শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশাজীবীসহ দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অংশীদার সৃষ্টি করা হবে।’ এজেন্সিতে সরকারের ক্ষমতা কেমন থাকবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘এটা অনেকখানি স্বায়ত্তশাসিত হবে। তারা যে ক্ষেত্রে কাজ করবেন সে ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করবেন। তবে আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে বিধিবিধান আছে সেটা তারা ব্যবহার করবেন।’
এজেন্সির আর্থিক উৎস সর্ম্পকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকার প্রদত্ত সাহায্য, মঞ্জুরি বা অনুদান, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণ, তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা, এজেন্সির সম্পত্তি বা কোন কার্যক্রম থেকে আয়, এজেন্সি থেকে সেবা বা পরামর্শ বিনিময়ের ফি এবং সরকার অনুমোদনকৃত অন্য কোন বৈধ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়।’
এজেন্সির কর্মীদের বেতন কাঠামোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে যারা চাকরি করবেন তাদের কাঠা মোটা ভিন্ন। তারা বেসরকারি খাতের সঙ্গে ক্লোজলি কাজ করবেন। তাদের কীভাবে উৎসাহিত করা যায়। যেকোন আইডিয়া কীভাবে কার্যকর করা যায় সেক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক সহায়তা করবেন। যিনি চাকরি করবেন আর যিনি পরামর্শক হিসেবে থাকবেন তার বেতন ভিন্ন হবে।’
এজেন্সি পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বোর্ডের সভাপতি হবেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। আর একটি থাকবে নির্বাহী কমিটি, সেখানে ওই বিভাগের সচিব সভাপতি হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যে রকম সাংগঠনিক কাঠামো থাকে সেভাবে পরিচালিত হবে।’
বর্তমানে এটুআইর জনবল একটি প্রকল্পের মধ্যে আছে, তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের মধ্যে জনবল স্থানান্তরের বিষয়ে কোন কিছু বলা নেই। চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দিয়ে নির্ধারিত হবে। প্রথমে একটি সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করতে হয়। জনপ্রশাসন, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হয়।
এটুআই এজেন্সি কর্মীদের কর্মপরিধি সর্ম্পকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘ইনোভেশনকে উৎসাহিত করার জন্য যে যে কাজ তারা সেগুলো করবেন। প্রধানমন্ত্রী রপ্তানি বহুমুখীকরণের যে পরিকল্পনা করেছেন, উনি মনে করছেন গার্মেন্টসের পর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি এবং ফুড প্রসেসিং।’
এছাড়াও সরকার তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইনোভেশনকে’ উৎসাহিত করবে জানিয়ে তিনি আশা করেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান সেই লক্ষ্য অর্জন এবং স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবে। আইসিটি খাতের কাজকে আরও জোরদার করবে এই এটুআই আইন।’
মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৯ মাঘ ১৪২৯, ২৯ জমাদিউল সানি ১৪৪৪
‘এজেন্সি টু ইনোভেট’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য মন্ত্রিসভা ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন-২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
এ এজেন্সি তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনীর সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সরকারের একটা পলিসি তৈরি বা ইনোভেশনকে উৎসাহিত করবে- এ রকম একটা পরিবেশ তৈরির জন্য সহযোগিতা দেবে।’
মন্ত্রিসভা আইনটি ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে’ পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটুআই প্রথমে ছিল অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন, তারপর অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট, এখন এসে বলছি এজেন্সি টু ইনোভেট। এটি আগে ছিল প্রকল্প। এখন এজেন্সি হিসেবে গঠনের জন্য আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছিল।’
আইনের উদ্দেশ্য ‘পূরণকল্পে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর’ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দেশের নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের অগ্রসর প্রযুক্তি সম্পর্কিত দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রণোদনা এবং জনসচেতনতা ও চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদান; জনকল্যাণে প্রযুক্তিবিষয়ক উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণায় উদ্ভাবিত পণ্য ও সেবার মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ; শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশাজীবীসহ দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অংশীদার সৃষ্টি করা হবে।’ এজেন্সিতে সরকারের ক্ষমতা কেমন থাকবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘এটা অনেকখানি স্বায়ত্তশাসিত হবে। তারা যে ক্ষেত্রে কাজ করবেন সে ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করবেন। তবে আর্থিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে বিধিবিধান আছে সেটা তারা ব্যবহার করবেন।’
এজেন্সির আর্থিক উৎস সর্ম্পকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকার প্রদত্ত সাহায্য, মঞ্জুরি বা অনুদান, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণ, তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা, এজেন্সির সম্পত্তি বা কোন কার্যক্রম থেকে আয়, এজেন্সি থেকে সেবা বা পরামর্শ বিনিময়ের ফি এবং সরকার অনুমোদনকৃত অন্য কোন বৈধ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়।’
এজেন্সির কর্মীদের বেতন কাঠামোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে যারা চাকরি করবেন তাদের কাঠা মোটা ভিন্ন। তারা বেসরকারি খাতের সঙ্গে ক্লোজলি কাজ করবেন। তাদের কীভাবে উৎসাহিত করা যায়। যেকোন আইডিয়া কীভাবে কার্যকর করা যায় সেক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক সহায়তা করবেন। যিনি চাকরি করবেন আর যিনি পরামর্শক হিসেবে থাকবেন তার বেতন ভিন্ন হবে।’
এজেন্সি পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বোর্ডের সভাপতি হবেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। আর একটি থাকবে নির্বাহী কমিটি, সেখানে ওই বিভাগের সচিব সভাপতি হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যে রকম সাংগঠনিক কাঠামো থাকে সেভাবে পরিচালিত হবে।’
বর্তমানে এটুআইর জনবল একটি প্রকল্পের মধ্যে আছে, তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের মধ্যে জনবল স্থানান্তরের বিষয়ে কোন কিছু বলা নেই। চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দিয়ে নির্ধারিত হবে। প্রথমে একটি সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করতে হয়। জনপ্রশাসন, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হয়।
এটুআই এজেন্সি কর্মীদের কর্মপরিধি সর্ম্পকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘ইনোভেশনকে উৎসাহিত করার জন্য যে যে কাজ তারা সেগুলো করবেন। প্রধানমন্ত্রী রপ্তানি বহুমুখীকরণের যে পরিকল্পনা করেছেন, উনি মনে করছেন গার্মেন্টসের পর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি এবং ফুড প্রসেসিং।’
এছাড়াও সরকার তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইনোভেশনকে’ উৎসাহিত করবে জানিয়ে তিনি আশা করেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান সেই লক্ষ্য অর্জন এবং স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবে। আইসিটি খাতের কাজকে আরও জোরদার করবে এই এটুআই আইন।’