পাঠ্যবই নিয়ে যৌক্তিক মতামত গ্রহণ করা হবে শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে কোন ইস্যু না পেয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে কেউ কেউ নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের নিয়ে করুণা করা যায়। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে তারা যা বলছেন তা ‘মিথ্যাচার’। সেটি মেনে নেয়া যায় না।

পাঠ্যপুস্তকে যেসব ভুল এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে তা সংশোধন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাকি বইগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত আছে। সবাই মতামত দিতে পারেন। যেসব মতামত যৌক্তিক তা গ্রহণ করা হবে।

তিনি গতকাল বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি সবার কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত যে, শুধু শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ড নয়, দেশের সব মানুষ পাঠ্যবই পড়ছেন। আমি চাই, এটি তারা আরও সূক্ষ্মভাবে দেখুন। যত গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ রয়েছে আমাদের দিক, আমরা খোলা মনে সব পরামর্শ বিবেচনা করবো। যৌক্তিক মনে হলে পরিমার্জন, পরিশোধন, পরিশীলন করা হবে। এটি আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’

কেউ কেউ বই না পড়ে, না দেখে ‘শোনা কথায় কান’ দিয়ে অপরাজনৈতিক হিংসা ও বিদ্বেষের বশে সমালোচনা করছেন দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তারা এ সরকারকে চায় না। স্মার্ট বাংলাদেশ নয়, তারা চায় পাকিস্তান। এরকম একটি গোষ্ঠী বলছে, নতুন বইয়ে ইসলাম নেই, যা আছে ওটা নাকি ইসলাম বিরোধী। আমি তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনার আশপাশে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ওয়েবসাইটে বই আছে, ভালো করে দেখে নিন। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পেছনে না ছুটে নিজের চোখে আগে দেখুন।’

এবারের বইগুলো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিয়ে করা হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘আমরা তো মানুষ, আমাদের ভুল হতে পারে। ৩৫ কোটি বই ছাপা হয়, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। গত বছর বিদ্যুতের সমস্যা ও কাগজের সংকট ছিল। প্রকাশকদের নিয়েও নানা সমস্যা সমাধান হয়েছে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বাতিল করা একটি বইয়ের বর্ণপরিচয় থাকা একটি পৃষ্ঠার সঙ্গে আমার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে যে আমি পৌত্তলিকতা শেখাচ্ছি। সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের হুমকি দেয়া হলে তা সামাজিকতা নয়।’

যেসব শিক্ষক সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে দিনের পর দিন কষ্ট করে বইগুলো সম্পাদনা করেন তাদের হুমকি দেয়া কাম্য নয়-মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যাচার ও অপপ্রচার সহ্য করা হবে না।’

নবম-দশম শ্রেণীর বই নিয়ে নতুন করে বিতর্ক ওঠলেও তা ১০ বছর আগের তৈরি জানিয়ে তিনি বলেন, সেসব বইয়ের ত্রুটি ১০ বছর পরে ধরা পড়ছে। এটি দেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ সংশোধন করেছেন। তিন দফায় সেটি সংশোধন করা হলেও ভুল রয়েই গেছে। সেটি এবার সংশোধন করে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ , ০৯ মাঘ ১৪২৯, ২৯ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

পাঠ্যবই নিয়ে যৌক্তিক মতামত গ্রহণ করা হবে শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে কোন ইস্যু না পেয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে কেউ কেউ নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের নিয়ে করুণা করা যায়। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে তারা যা বলছেন তা ‘মিথ্যাচার’। সেটি মেনে নেয়া যায় না।

পাঠ্যপুস্তকে যেসব ভুল এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে তা সংশোধন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাকি বইগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত আছে। সবাই মতামত দিতে পারেন। যেসব মতামত যৌক্তিক তা গ্রহণ করা হবে।

তিনি গতকাল বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি সবার কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত যে, শুধু শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ড নয়, দেশের সব মানুষ পাঠ্যবই পড়ছেন। আমি চাই, এটি তারা আরও সূক্ষ্মভাবে দেখুন। যত গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ রয়েছে আমাদের দিক, আমরা খোলা মনে সব পরামর্শ বিবেচনা করবো। যৌক্তিক মনে হলে পরিমার্জন, পরিশোধন, পরিশীলন করা হবে। এটি আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’

কেউ কেউ বই না পড়ে, না দেখে ‘শোনা কথায় কান’ দিয়ে অপরাজনৈতিক হিংসা ও বিদ্বেষের বশে সমালোচনা করছেন দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তারা এ সরকারকে চায় না। স্মার্ট বাংলাদেশ নয়, তারা চায় পাকিস্তান। এরকম একটি গোষ্ঠী বলছে, নতুন বইয়ে ইসলাম নেই, যা আছে ওটা নাকি ইসলাম বিরোধী। আমি তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনার আশপাশে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ওয়েবসাইটে বই আছে, ভালো করে দেখে নিন। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পেছনে না ছুটে নিজের চোখে আগে দেখুন।’

এবারের বইগুলো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিয়ে করা হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘আমরা তো মানুষ, আমাদের ভুল হতে পারে। ৩৫ কোটি বই ছাপা হয়, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। গত বছর বিদ্যুতের সমস্যা ও কাগজের সংকট ছিল। প্রকাশকদের নিয়েও নানা সমস্যা সমাধান হয়েছে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বাতিল করা একটি বইয়ের বর্ণপরিচয় থাকা একটি পৃষ্ঠার সঙ্গে আমার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে যে আমি পৌত্তলিকতা শেখাচ্ছি। সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের হুমকি দেয়া হলে তা সামাজিকতা নয়।’

যেসব শিক্ষক সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে দিনের পর দিন কষ্ট করে বইগুলো সম্পাদনা করেন তাদের হুমকি দেয়া কাম্য নয়-মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যাচার ও অপপ্রচার সহ্য করা হবে না।’

নবম-দশম শ্রেণীর বই নিয়ে নতুন করে বিতর্ক ওঠলেও তা ১০ বছর আগের তৈরি জানিয়ে তিনি বলেন, সেসব বইয়ের ত্রুটি ১০ বছর পরে ধরা পড়ছে। এটি দেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ সংশোধন করেছেন। তিন দফায় সেটি সংশোধন করা হলেও ভুল রয়েই গেছে। সেটি এবার সংশোধন করে দেয়া হয়েছে।