চট্টগ্রাম মহানগরের কাজীর দেউড়ি স্টেডিয়াম এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আটক হওয়া স্কুল শিক্ষার্থী সাকিব আলী এখন মামলার আসামি হয়ে কারাগারে। তার মায়ের দাবি, জেএসসি পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী ছেলের বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। কিন্তু পুলিশের মামলায় তার বয়স দেখানো হয়েছে ১৯ বছর। ওই শিক্ষার্থীর মা বলছেন, তার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। ১৬ জানুয়ারি ক্রিকেট খেলার জার্সি কিনতে স্টেডিয়াম এলাকায় গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টাকালে পুলিশ তার শার্টের কলার ধরে নিয়ে যায়। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সাকিব। পড়ালেখার খরচ জোগাতে এলাকার ভাই ভাই ফার্মেসিতে মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে বলে জানিয়েছে পরিবার। পশ্চিম মাদারবাড়ি যুগীচাঁদ মসজিদ লেইন এলাকার কোরবান আলীর বাড়ির বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাকিব পাঠানটুলি সিটি করপোরেশন উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, শিশু আইনের ৪ ধারা অনুসারে, ১৮ বছর পর্যন্ত সবাই শিশু হিসেবে গণ্য হবে। ৩৪ (১) ধারা অনুযায়ী, কোন শিশু মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-নীয় অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে শিশু আদালত তাকে অনূর্ধ্ব ১০ বছর এবং অন্যূন তিন বছর মেয়াদে আটকাদেশ দিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন।

সাকিবের আইনজীবী অ্যাড. এরফানুর রহমান বলেন, পুলিশের মামলার এজাহারে বয়স বেশি দেখিয়ে সাকিবকে আসামি করা হয়েছে। সে সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত ছিল না। তার পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন করা হবে।

কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আটক করেছে। কোন শিক্ষার্থী অপরাধে জড়ালে তাকে কি মামলায় আসামি করা যাবে না? প্রাথমিকভাবে ছেলেটির বয়স ১৯ হতে পারে বলে মনে হয়েছে, সেটাই এজাহারে লেখা হয়েছে। যদি বয়স ১৮ বছরের কম হয়, তাহলে তদন্ত করে শিশু আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে তার মায়ের ভাষ্য, ছেলে নিজেকে স্কুল শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও পুলিশ সদস্যরা শোনেনি। তাকে আটকের খবর পেয়ে সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত কোতোয়ালী থানায় অপেক্ষা করেও বুঝাতে পারিনি, পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ছেলেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।

পাঠানটুলি সিটি করপোরেশন উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমীরণ বড়ুয়া বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে সাকিব আলী। সে রাজনীতি করে না। তাকে আটক করলেও ছেড়ে দেয়া উচিত।