সড়ক পরিবহন আইনে নতুন অধ্যায় সংযোজন দাবি

বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এ সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে নতুন অধ্যায় সংযোজন অথবা পৃথক আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যু ও দীর্ঘমেয়াদি পঙ্গুত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০১৮’এর তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় (রোড ক্রাশ) প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২০-৫০ লাখ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয় বা পঙ্গুত্বের শিকার হয়। সড়ক দুর্ঘটনা (রোড ক্রাশ) ৫-২৯ বছর এবং আরও কমবয়সী শিশুদের জন্য মৃত্যুর ১ নম্বর কারণ এবং সব বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে ৮ম প্রধান কারণ। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাপী শতকরা ৯০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশসমূহে যার সংখ্যা উন্নত দেশসমূহের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনাকে সহনীয় মাত্রায় রাখতে তথা সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব ও অসুস্থতা এবং সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি লাঘবের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ তার সদস্যভুক্ত প্রায় প্রতিটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে সঙ্গে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ কমানোর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-৩.৬) অর্জনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা। এছাড়া ‘গ্লোবাল প্ল্যান ফর সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেফটি ২০২১-২০৩০’ নিশ্চিত করতে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সেগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী গৃহীত পদক্ষেপসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশ একাত্মতা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কর্মপন্থা নির্ধারণপূর্বক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার বিগত ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর আওতায় ‘সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২’ জারি করে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে ‘রোড সেফটি সেল’ নামে একটি পৃথক সেল গঠন করার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এজন্য বর্তমান সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগসহ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের অধীন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও দপ্তরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

কিছু সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য বিষয় এই যে, সড়ক পরিবহন বিধিমালা জারির বিষয়টি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়ক পরিবহন আইন এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত। এই আইন ও বিধিমালা সড়ক নিরাপত্তা বিধিমালা নিশ্চিতকরণে যথেষ্ট নয়। কারণ জাতিসংঘের সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেইফটি ২০২১-২০৩০ এ বর্ণিত পাঁচটি পিলার (নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা) এবং বাংলাদেশ সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বর্ণিত পাঁচটি পিলারের আলোকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ প্রণীত হয়নি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় এই আইন বা বিধিতে সড়ক অবকাঠামো নিরাপত্তা এবং যানবাহন নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। অনুরূপভাবে সিটবেল্ট এবং শিশু নিরাপত্তার বিষয়টিও অবহেলিত রয়ে গেছে। সেইসঙ্গে নেশাগ্রস্ত ও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালনার বিষয়টি স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়নি। পরিতাপের বিষয়, দুর্ঘটনা পরবর্তী আহত ব্যক্তির যথাযথ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোন বিধান উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি দুর্ঘটনায় পতিত ব্যক্তির সহযোগিতার বিষয়ে সেবা প্রদানকারীদের আইনি সুরক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় সড়ককে অধিকতর নিরাপদ করার লক্ষ্যে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নি¤েœাক্ত বিষয়সমূহ কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন দাবি জানিয়ে বলেন, সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সমন্বয়ে বর্তমান আইনে একটি পৃথক অধ্যায় সংযোজন করা হোক; অথবা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাঁচটি পিলার বা ‘সেইফ সিস্টেমস অ্যাপ্রোচ’ (সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থাপনা) পদ্ধতিতে একটি পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হোক।

সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী যে, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসমূহের পাশাপাশি রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ-এর সম্মিলিত উদ্যোগ এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টা দেশের সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার মাধ্যমে দুর্ঘটনাজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি কমানোর পথ সুগম করবে যার মাধ্যমে এসডিজির ধারা ৩.৬ এবং ১১.২ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর শরিফুল আলম, ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন, রোড সেফটির প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা, বুয়েটের অধ্যাপক ড. শাইফুন নেওয়াজ প্রমুখ।

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ , ১০ মাঘ ১৪২৯, ৩০ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

সড়ক পরিবহন আইনে নতুন অধ্যায় সংযোজন দাবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এ সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে নতুন অধ্যায় সংযোজন অথবা পৃথক আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যু ও দীর্ঘমেয়াদি পঙ্গুত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০১৮’এর তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় (রোড ক্রাশ) প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২০-৫০ লাখ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয় বা পঙ্গুত্বের শিকার হয়। সড়ক দুর্ঘটনা (রোড ক্রাশ) ৫-২৯ বছর এবং আরও কমবয়সী শিশুদের জন্য মৃত্যুর ১ নম্বর কারণ এবং সব বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে ৮ম প্রধান কারণ। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাপী শতকরা ৯০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশসমূহে যার সংখ্যা উন্নত দেশসমূহের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনাকে সহনীয় মাত্রায় রাখতে তথা সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব ও অসুস্থতা এবং সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি লাঘবের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ তার সদস্যভুক্ত প্রায় প্রতিটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে সঙ্গে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ কমানোর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-৩.৬) অর্জনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা। এছাড়া ‘গ্লোবাল প্ল্যান ফর সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেফটি ২০২১-২০৩০’ নিশ্চিত করতে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সেগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী গৃহীত পদক্ষেপসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশ একাত্মতা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কর্মপন্থা নির্ধারণপূর্বক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার বিগত ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর আওতায় ‘সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২’ জারি করে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে ‘রোড সেফটি সেল’ নামে একটি পৃথক সেল গঠন করার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এজন্য বর্তমান সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগসহ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের অধীন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও দপ্তরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

কিছু সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য বিষয় এই যে, সড়ক পরিবহন বিধিমালা জারির বিষয়টি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়ক পরিবহন আইন এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সংক্রান্ত। এই আইন ও বিধিমালা সড়ক নিরাপত্তা বিধিমালা নিশ্চিতকরণে যথেষ্ট নয়। কারণ জাতিসংঘের সেকেন্ড ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেইফটি ২০২১-২০৩০ এ বর্ণিত পাঁচটি পিলার (নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা) এবং বাংলাদেশ সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বর্ণিত পাঁচটি পিলারের আলোকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ প্রণীত হয়নি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় এই আইন বা বিধিতে সড়ক অবকাঠামো নিরাপত্তা এবং যানবাহন নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। অনুরূপভাবে সিটবেল্ট এবং শিশু নিরাপত্তার বিষয়টিও অবহেলিত রয়ে গেছে। সেইসঙ্গে নেশাগ্রস্ত ও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালনার বিষয়টি স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়নি। পরিতাপের বিষয়, দুর্ঘটনা পরবর্তী আহত ব্যক্তির যথাযথ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোন বিধান উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি দুর্ঘটনায় পতিত ব্যক্তির সহযোগিতার বিষয়ে সেবা প্রদানকারীদের আইনি সুরক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় সড়ককে অধিকতর নিরাপদ করার লক্ষ্যে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নি¤েœাক্ত বিষয়সমূহ কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন দাবি জানিয়ে বলেন, সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সমন্বয়ে বর্তমান আইনে একটি পৃথক অধ্যায় সংযোজন করা হোক; অথবা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাঁচটি পিলার বা ‘সেইফ সিস্টেমস অ্যাপ্রোচ’ (সড়ক ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ মোটরযান, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, এবং দুর্ঘটনা-পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থাপনা) পদ্ধতিতে একটি পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হোক।

সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী যে, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসমূহের পাশাপাশি রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ-এর সম্মিলিত উদ্যোগ এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টা দেশের সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার মাধ্যমে দুর্ঘটনাজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি কমানোর পথ সুগম করবে যার মাধ্যমে এসডিজির ধারা ৩.৬ এবং ১১.২ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর শরিফুল আলম, ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন, রোড সেফটির প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা, বুয়েটের অধ্যাপক ড. শাইফুন নেওয়াজ প্রমুখ।