কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ নিন

যতই দিন যাচ্ছে কৃষিজমির পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ কৃষিশুমারী-২০১৯ ফলাফলে দেখা যায়, আবাদি জমির পরিমাণ আশংকাজনক হারে কমছে। ২০০৮ সালে নীট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার একর। ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে আবাদি জমির পরিমাণ কমে গিয়ে ২০১৯ সালের জরিপে দেখা যাচ্ছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার একর। নীট আবাদি জমির পরিমাণ কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর।

জিডিপিতে কৃষির অবদান কম হলেও গুরুত্ব কম নয়। কৃষি খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতি বছর বিভিন্নভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমতে থাকে। কৃষিজমি থেকে মাটি কাটে মাটি খেকো সিন্ডিকেট। বৈধ-অবৈধ ইটভাটার মালিকদের প্রলোভনে পড়ে কিছু জমির মালিক না বুঝে আবাদি জমির মাটি বিক্রি করে দেয়। এতে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফসল উৎপাদনও আর সম্ভব হয় না। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার প্রবণতা ভয়ঙ্কর। কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে দেশের বেশির ভাগ মানুষ সাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। কৃষকরাও তাদের সন্তানদের এই পেশায় আনতে আগ্রহী নেন। একসময় দেশের ৮৫% মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ৪৮%-এ নেমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে তার ওপর জোর দিয়েছেন। বাড়ির আনাচে-কানাচে যেখানে সম্ভব শাক সবজি বাগান বা বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করার জন্য বলেছেন। এভাবে আবাদি জমি দখল করে কেউ যাতে স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কৃষক ও জনসাধারণকে এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে, কৃষি হচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

এ ব্যাপারে গ্রামের জন সাধারণকে সচেতন করার জন্য গণমাধ্যম বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। খাদ্য ঘাটতি পূরণ করার জন্য কৃষি জমির গুরুত্ব অনুধাবন করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, বাঁচাতে হবে কৃষি এবং দেশকে।

গাজী আরিফ মান্নান

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ , ১০ মাঘ ১৪২৯, ৩০ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ নিন

যতই দিন যাচ্ছে কৃষিজমির পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ কৃষিশুমারী-২০১৯ ফলাফলে দেখা যায়, আবাদি জমির পরিমাণ আশংকাজনক হারে কমছে। ২০০৮ সালে নীট আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার একর। ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে আবাদি জমির পরিমাণ কমে গিয়ে ২০১৯ সালের জরিপে দেখা যাচ্ছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার একর। নীট আবাদি জমির পরিমাণ কমেছে ৪ লাখ ১৬ হাজার একর।

জিডিপিতে কৃষির অবদান কম হলেও গুরুত্ব কম নয়। কৃষি খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতি বছর বিভিন্নভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমতে থাকে। কৃষিজমি থেকে মাটি কাটে মাটি খেকো সিন্ডিকেট। বৈধ-অবৈধ ইটভাটার মালিকদের প্রলোভনে পড়ে কিছু জমির মালিক না বুঝে আবাদি জমির মাটি বিক্রি করে দেয়। এতে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফসল উৎপাদনও আর সম্ভব হয় না। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার প্রবণতা ভয়ঙ্কর। কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে দেশের বেশির ভাগ মানুষ সাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। কৃষকরাও তাদের সন্তানদের এই পেশায় আনতে আগ্রহী নেন। একসময় দেশের ৮৫% মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে ৪৮%-এ নেমে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে তার ওপর জোর দিয়েছেন। বাড়ির আনাচে-কানাচে যেখানে সম্ভব শাক সবজি বাগান বা বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করার জন্য বলেছেন। এভাবে আবাদি জমি দখল করে কেউ যাতে স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কৃষক ও জনসাধারণকে এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে, কৃষি হচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

এ ব্যাপারে গ্রামের জন সাধারণকে সচেতন করার জন্য গণমাধ্যম বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। খাদ্য ঘাটতি পূরণ করার জন্য কৃষি জমির গুরুত্ব অনুধাবন করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, বাঁচাতে হবে কৃষি এবং দেশকে।

গাজী আরিফ মান্নান