শব্দ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিন

বর্তমানে একটি মারাত্মক সমস্যার নাম শব্দদূষণ। ২০২২ সালের UNEP (United Nations Environment Programme) এর তথ্য মতে, শব্দ দূষণে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে কোলাহলপূর্ণ নগর হিসেবে পরিচিত ঢাকা শহর। Frontuers-২০২২ এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকায় শব্দের গড় মাত্রা ১১৯ ডেসিবেল। যা বিশ্বের ৬১টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের মুরাদাবাদ। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে-পাকিস্তানের ইসলামাবাদ ও বাংলাদেশের রাজশাহী শহর।

শব্দ দূষণের ফলে সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্তের স্বীকার হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশগণ। ১১.৮% ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণশক্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঢাকায় আমরা যে শব্দ শুনি তা সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণ। যদিও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ এবং রাতে ৪৫ ডেসিবেল শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। হাসপাতাল, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, অফিসে-আদালতের আশেপাশে ১শ’ মিটারের মধ্যে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। WHO-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, মানুষের অসুস্থতার প্রথম কারণ বায়ুদূষণ এবং দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে শব্দদূষণ। এই শব্দ দূষণের ফলে হৃদরোগে পরিমাণ বছরে প্রায় ৪৮ হাজার। ফলে ১২ হাজার অপ্রাপ্ত বয়সীর মৃত্যু হয়। ১২ মিলিয়ন মানুষ ক্রনিক হাই এনোয়েন্সের শিকার হয় এবং ৬.৫ মিলিয়ন মানুষ ক্রনিক হাই স্লিপ ডিসটারভেন্সের শিকার হয়।

শব্দ দূষণ রোধে ২০০৬ সাল থেকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন কর্তৃক বিধিমালা রয়েছে কিন্তু এসব আইন প্রয়োগে কারো কোন ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। বিধিমালা অনুযায়ী কেউ যদি নিয়ম বর্হিভূত শব্দ ব্যবহার করে তাহলে ঐ ব্যক্তির একমাসের কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং একই অপরাধ যদি দ্বিতীয়বার করে তাহলে ৬ মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। সাম্প্রতিক তথ্যমতে, করোনা মহামারিতে মারা গেছে ৬.৩১ মিলিয়ন মানুষ। এই দিকে শব্দ দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিবছর ২২ মিলিয়ন মানুষ। তাই বলা যায়, বাংলাদেশ শব্দ দূষণের শীর্ষে থাকায় শব্দ দূষণ দেশের এক নতুন মহামারী রূপে পরিণত হচ্ছে।

রুবেল আহমেদ

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ , ১০ মাঘ ১৪২৯, ৩০ জমাদিউল সানি ১৪৪৪

শব্দ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিন

বর্তমানে একটি মারাত্মক সমস্যার নাম শব্দদূষণ। ২০২২ সালের UNEP (United Nations Environment Programme) এর তথ্য মতে, শব্দ দূষণে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে কোলাহলপূর্ণ নগর হিসেবে পরিচিত ঢাকা শহর। Frontuers-২০২২ এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকায় শব্দের গড় মাত্রা ১১৯ ডেসিবেল। যা বিশ্বের ৬১টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের মুরাদাবাদ। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে-পাকিস্তানের ইসলামাবাদ ও বাংলাদেশের রাজশাহী শহর।

শব্দ দূষণের ফলে সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্তের স্বীকার হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশগণ। ১১.৮% ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণশক্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঢাকায় আমরা যে শব্দ শুনি তা সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণ। যদিও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ এবং রাতে ৪৫ ডেসিবেল শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। হাসপাতাল, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, অফিসে-আদালতের আশেপাশে ১শ’ মিটারের মধ্যে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। WHO-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, মানুষের অসুস্থতার প্রথম কারণ বায়ুদূষণ এবং দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে শব্দদূষণ। এই শব্দ দূষণের ফলে হৃদরোগে পরিমাণ বছরে প্রায় ৪৮ হাজার। ফলে ১২ হাজার অপ্রাপ্ত বয়সীর মৃত্যু হয়। ১২ মিলিয়ন মানুষ ক্রনিক হাই এনোয়েন্সের শিকার হয় এবং ৬.৫ মিলিয়ন মানুষ ক্রনিক হাই স্লিপ ডিসটারভেন্সের শিকার হয়।

শব্দ দূষণ রোধে ২০০৬ সাল থেকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন কর্তৃক বিধিমালা রয়েছে কিন্তু এসব আইন প্রয়োগে কারো কোন ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। বিধিমালা অনুযায়ী কেউ যদি নিয়ম বর্হিভূত শব্দ ব্যবহার করে তাহলে ঐ ব্যক্তির একমাসের কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং একই অপরাধ যদি দ্বিতীয়বার করে তাহলে ৬ মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। সাম্প্রতিক তথ্যমতে, করোনা মহামারিতে মারা গেছে ৬.৩১ মিলিয়ন মানুষ। এই দিকে শব্দ দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিবছর ২২ মিলিয়ন মানুষ। তাই বলা যায়, বাংলাদেশ শব্দ দূষণের শীর্ষে থাকায় শব্দ দূষণ দেশের এক নতুন মহামারী রূপে পরিণত হচ্ছে।

রুবেল আহমেদ