শতবর্ষ পুরোনো খাল দখল করে বাড়ি ও বাঁধ নির্মাণ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উত্তর কাওন্নারা খালের ওপর বসত বাড়ি ও বাঁধ দিয়ে দখল করে নিচ্ছে খাল পাড়ে বসবাসকারীরা। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পানি পানি প্রবাহ বন্ধ। হুমকির মুখে পড়েছে ফসল আবাদ। দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

জানা যায়, পূর্ব কুষ্টিয়া হতে উত্তর কাওন্নারা দিয়ে সাটুরিয়ার চন্দ্রাখালী নদীতে মিশে গেছে শত বছরের পুরনে এই খাল । এক সময় সড়ক পথে চলাচল ভালো না থাকায় বর্ষা মৌসুমে মানুষজন নদী পথে ছোট বড় পাল তোলা নৌকা নিয়ে মালপত্র আনা-নেওয়া করত এই খাল দিয়ে।

এছাড়া কৃষকের উৎপাদনে শষ্য বাজারজাতকরণের এই খালের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেই খাল এখন দখলদারের কবলে পড়ে হারিয়েছে তার নিজস্ব গতি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাটুরিয়া সিনেমাহল সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটির পূর্ব পাশে বসবাসকারীরা প্রথমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতো। এরপর তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাটি ফেলে খালের ¯্রােতের গতি কমানোর জন্য মাটি ফেলে ভরাট করে। প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা খালের মধ্যে ৪০টি বাঁধ দিয়ে খালের পানি নিঃস্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে। খাল পারে বসবাসরত মানুষ ময়লা ফেলায় এখন ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। ফলে খালের মধ্যে জমানো পানি দুর্গন্ধ হয়ে পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়েছে। এই খাল দিয়ে বালিয়াটি, হাজিপুর, কুষ্টিয়া, উত্তর কাওন্নারা ও সাটুরিয়ার কৃষি জমির পানি বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে ঢুকে ও বর্ষা শেষে একই খাল দিয়ে পানি বের হত। ফলে কৃষকরা সময় মতো তাদের শস্য ফলাতে পারত। প্রায় ২০ বছর ধরে এ খাল দিয়ে পানি ঢুকতে না পারায় কৃষি জমির মাটি উর্বরতা হারিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে কৃষিজমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কৃষকরা। এই খাল দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে খালটি পুনঃ খনন করার দাবী জানান তারা।

সাটুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সামাদ মিয়া নামে এক ব্যাক্তি খাল দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছে। মোকাদছ আলী, শাহ আলম ও তানি আলমরা খাল দখল করে বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছে। সাটুরিয়া ৬ নম্বর ইউপি সদস্য মো. শহর আলী বলেন, খাল পাড়ে বসবাসকারীরা খালের উপর বাঁধ দিয়ে চলাচলের রাস্তা করেছে। এভাবেই খালটি দখল করে নেন তারা। পূর্ব কুষ্টিয়া থেকে সাটুরিয়া বাজার পর্যন্ত খালের উপর ৪০ বাঁধ দেওয়ায় সটুরিয়ার ইউএনও ও সহকারি কমিশনার ভূমি কর্মকর্তাকে একাধিকবার বলা হলেও কোন কাজে আসেনি। দখলদাররা দখল করেই চলছে। সাটুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন পিন্টু বলেন, সিনেমাহল রুটের খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দখলকারীদের উচ্ছেদ করে দ্রুত খালটি পুণর্সংস্কারের দাবি জানান। এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আরা বলেন, খালটির দখলদারদের তথ্য দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

­রিপোর্ট হাতে পেলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩ , ২৪ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৬ শবান ১৪৪৪

শতবর্ষ পুরোনো খাল দখল করে বাড়ি ও বাঁধ নির্মাণ

প্রতিনিধি, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)

image

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) : সাটুরিয়া উত্তর কাওন্নারা খালের উপর বসতবাড়ি ও বাঁধ দিয়ে দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা -সংবাদ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উত্তর কাওন্নারা খালের ওপর বসত বাড়ি ও বাঁধ দিয়ে দখল করে নিচ্ছে খাল পাড়ে বসবাসকারীরা। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পানি পানি প্রবাহ বন্ধ। হুমকির মুখে পড়েছে ফসল আবাদ। দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

জানা যায়, পূর্ব কুষ্টিয়া হতে উত্তর কাওন্নারা দিয়ে সাটুরিয়ার চন্দ্রাখালী নদীতে মিশে গেছে শত বছরের পুরনে এই খাল । এক সময় সড়ক পথে চলাচল ভালো না থাকায় বর্ষা মৌসুমে মানুষজন নদী পথে ছোট বড় পাল তোলা নৌকা নিয়ে মালপত্র আনা-নেওয়া করত এই খাল দিয়ে।

এছাড়া কৃষকের উৎপাদনে শষ্য বাজারজাতকরণের এই খালের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেই খাল এখন দখলদারের কবলে পড়ে হারিয়েছে তার নিজস্ব গতি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাটুরিয়া সিনেমাহল সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটির পূর্ব পাশে বসবাসকারীরা প্রথমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতো। এরপর তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাটি ফেলে খালের ¯্রােতের গতি কমানোর জন্য মাটি ফেলে ভরাট করে। প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা খালের মধ্যে ৪০টি বাঁধ দিয়ে খালের পানি নিঃস্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে। খাল পারে বসবাসরত মানুষ ময়লা ফেলায় এখন ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। ফলে খালের মধ্যে জমানো পানি দুর্গন্ধ হয়ে পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়েছে। এই খাল দিয়ে বালিয়াটি, হাজিপুর, কুষ্টিয়া, উত্তর কাওন্নারা ও সাটুরিয়ার কৃষি জমির পানি বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে ঢুকে ও বর্ষা শেষে একই খাল দিয়ে পানি বের হত। ফলে কৃষকরা সময় মতো তাদের শস্য ফলাতে পারত। প্রায় ২০ বছর ধরে এ খাল দিয়ে পানি ঢুকতে না পারায় কৃষি জমির মাটি উর্বরতা হারিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে কৃষিজমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কৃষকরা। এই খাল দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে খালটি পুনঃ খনন করার দাবী জানান তারা।

সাটুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সামাদ মিয়া নামে এক ব্যাক্তি খাল দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছে। মোকাদছ আলী, শাহ আলম ও তানি আলমরা খাল দখল করে বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছে। সাটুরিয়া ৬ নম্বর ইউপি সদস্য মো. শহর আলী বলেন, খাল পাড়ে বসবাসকারীরা খালের উপর বাঁধ দিয়ে চলাচলের রাস্তা করেছে। এভাবেই খালটি দখল করে নেন তারা। পূর্ব কুষ্টিয়া থেকে সাটুরিয়া বাজার পর্যন্ত খালের উপর ৪০ বাঁধ দেওয়ায় সটুরিয়ার ইউএনও ও সহকারি কমিশনার ভূমি কর্মকর্তাকে একাধিকবার বলা হলেও কোন কাজে আসেনি। দখলদাররা দখল করেই চলছে। সাটুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন পিন্টু বলেন, সিনেমাহল রুটের খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দখলকারীদের উচ্ছেদ করে দ্রুত খালটি পুণর্সংস্কারের দাবি জানান। এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আরা বলেন, খালটির দখলদারদের তথ্য দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

­রিপোর্ট হাতে পেলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।