সিভিল সার্জনের বাসভবন ঘেরাও

করোনাকালীন উপজেলা পর্যায়ে গণকরোনা ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্য কর্মীদের বরাদ্দ করা অর্থ উত্তোলন করার পরেও পরিশোধ না করে রংপুরের বদলি হওয়া সিভিল সার্জেন ডা. শামীম আহাম্মেদ গোপনে রংপুর ত্যাগ করার খবর পেয়ে শত শত স্বাস্থ্য কর্মী তার বাসভবন ঘেরাও করে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা পাওনা টাকা পরিশোধ না করে তাকে যেতে দেবেনা বলে ঘোষণা দিয়ে তার বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ করোনাকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টীকা প্রদান করেছে। সে জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দ ২৫ লাখ টাকা সিভিল সার্জেন উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার জন্য তার কাছে রেখেছে। ইতিমধ্যে তাকে ঝালকাঠিতে সিভিল সার্জেন হিসেবে বদলী করায় স্বাস্থ্য কর্মীদের টাকা না দিয়েই গোপনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর ত্যাগ করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা তার বাস ভবন ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে। তারা টাকা দিয়ে তাকে রংপুর ত্যাগ করার আহবান জানায়। পরে রাতে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ২ দিন সময় দিয়ে অবরোধ তুলে নেয় স্বাস্থ্য কর্মীরা।

এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর উপজেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মী আজ্ঞুমান আরা বেগম জানান তারা দুবছর ধরে করোনা ভ্যাকসিন দেবার কাজ করছেন। গত বছরের ১০ জানুয়ারী থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের ২৫ লাখ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। এই অর্থ অনেক আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ দিয়েছে রংপুরের সিভিল সার্জেনের কাছে কিন্তু পুরো উত্তোলন করে সিভিল সার্জেন ডা, শামীম নিজের কাছে রেখেছেন বার বার বলা সত্বেও তিনি সেই অর্থ প্রদান করছেননা। অতি সম্প্রতি সিভিল সার্জেন ডা, শামিমকে ঝালকাঠিতে বদলী করা হয়েছে। তার বদলে ডা, জাহাঙ্গীর কবীরকে রংপুরের সিভিল সার্জেন হিসেবে বদলী করা হয় তিনি ইতিমধ্যেই রংপুরে যোগদান করেছেন। বদলী হওয়া সিভিল সার্জেন বকেয়া টাকা প্রদান না করে গোপনে আজ মঙ্গলবার রংপুর ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন এমন খবর জানাজানি হলে স্বাস্থ্য কর্মীরা দুপুরের দিকে রংপুর নগরীর পুরাতন সদর হাসপাতাল চত্বরে অবস্থিত নব নির্মিত শিশু হাসপাতালের ডক্টর কোয়াটারে অবস্থানরত ডা, শামীমের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীরাও এসে অবস্থান নেয়। তিনি বলেন আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করার পরেই তিনি যেতে পারবেন অন্যথায় তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। একই কথা বলেন বাংলাদেশ হেলথ এ্যাসিসটেন্ট এসোসিয়েশনের রংপুর বিভাঘীয় ও জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক মাসুদার রহমান অপু বলেন আমাদের ঘাম ঝড়ানো ২৫ লাখ টাকা না দিয়েই রংপুর থেকে পালিয়ে যাবেন এটা হতে পারেনা টাকা দিয়েই তাকে যেতে হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

এ ব্যাপারে অবরুদ্ধ সিভিল সার্জেন ডা, শামীম আহাম্মেদ টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করলেও পুরো টাকা ক্যাশিয়ার পলাশের কাছে আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু ক্যাশিয়ার পলাশ বলেছেন টাকা সিভিল সার্জেনের কাছে আছে। তিনি পুরো টাকাটাই তার কাছে রেখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। এমনি অবস্থায় সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে ঘোষনা দিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে সদ্য যোগদাকারী সিভিল সার্জেন ডা, জাহাঙ্গীর কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান করোনা কালিন ভ্যাকসিন দেয়া সংক্রান্ত কোন টাকা এখানে নেই।

এই টাকা অনেক আগেই উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে তারাই ব্যবস্থা নেবেন।

বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩ , ২৪ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৬ শবান ১৪৪৪

রংপুরে গণকরোনা ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাদ্দ আত্মসাৎ

সিভিল সার্জনের বাসভবন ঘেরাও

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

করোনাকালীন উপজেলা পর্যায়ে গণকরোনা ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্য কর্মীদের বরাদ্দ করা অর্থ উত্তোলন করার পরেও পরিশোধ না করে রংপুরের বদলি হওয়া সিভিল সার্জেন ডা. শামীম আহাম্মেদ গোপনে রংপুর ত্যাগ করার খবর পেয়ে শত শত স্বাস্থ্য কর্মী তার বাসভবন ঘেরাও করে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা পাওনা টাকা পরিশোধ না করে তাকে যেতে দেবেনা বলে ঘোষণা দিয়ে তার বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ করোনাকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার টীকা প্রদান করেছে। সে জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দ ২৫ লাখ টাকা সিভিল সার্জেন উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার জন্য তার কাছে রেখেছে। ইতিমধ্যে তাকে ঝালকাঠিতে সিভিল সার্জেন হিসেবে বদলী করায় স্বাস্থ্য কর্মীদের টাকা না দিয়েই গোপনে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর ত্যাগ করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা তার বাস ভবন ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে। তারা টাকা দিয়ে তাকে রংপুর ত্যাগ করার আহবান জানায়। পরে রাতে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ২ দিন সময় দিয়ে অবরোধ তুলে নেয় স্বাস্থ্য কর্মীরা।

এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর উপজেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মী আজ্ঞুমান আরা বেগম জানান তারা দুবছর ধরে করোনা ভ্যাকসিন দেবার কাজ করছেন। গত বছরের ১০ জানুয়ারী থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের ২৫ লাখ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। এই অর্থ অনেক আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ দিয়েছে রংপুরের সিভিল সার্জেনের কাছে কিন্তু পুরো উত্তোলন করে সিভিল সার্জেন ডা, শামীম নিজের কাছে রেখেছেন বার বার বলা সত্বেও তিনি সেই অর্থ প্রদান করছেননা। অতি সম্প্রতি সিভিল সার্জেন ডা, শামিমকে ঝালকাঠিতে বদলী করা হয়েছে। তার বদলে ডা, জাহাঙ্গীর কবীরকে রংপুরের সিভিল সার্জেন হিসেবে বদলী করা হয় তিনি ইতিমধ্যেই রংপুরে যোগদান করেছেন। বদলী হওয়া সিভিল সার্জেন বকেয়া টাকা প্রদান না করে গোপনে আজ মঙ্গলবার রংপুর ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন এমন খবর জানাজানি হলে স্বাস্থ্য কর্মীরা দুপুরের দিকে রংপুর নগরীর পুরাতন সদর হাসপাতাল চত্বরে অবস্থিত নব নির্মিত শিশু হাসপাতালের ডক্টর কোয়াটারে অবস্থানরত ডা, শামীমের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীরাও এসে অবস্থান নেয়। তিনি বলেন আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করার পরেই তিনি যেতে পারবেন অন্যথায় তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। একই কথা বলেন বাংলাদেশ হেলথ এ্যাসিসটেন্ট এসোসিয়েশনের রংপুর বিভাঘীয় ও জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক মাসুদার রহমান অপু বলেন আমাদের ঘাম ঝড়ানো ২৫ লাখ টাকা না দিয়েই রংপুর থেকে পালিয়ে যাবেন এটা হতে পারেনা টাকা দিয়েই তাকে যেতে হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

এ ব্যাপারে অবরুদ্ধ সিভিল সার্জেন ডা, শামীম আহাম্মেদ টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করলেও পুরো টাকা ক্যাশিয়ার পলাশের কাছে আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু ক্যাশিয়ার পলাশ বলেছেন টাকা সিভিল সার্জেনের কাছে আছে। তিনি পুরো টাকাটাই তার কাছে রেখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। এমনি অবস্থায় সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে ঘোষনা দিয়েছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে সদ্য যোগদাকারী সিভিল সার্জেন ডা, জাহাঙ্গীর কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান করোনা কালিন ভ্যাকসিন দেয়া সংক্রান্ত কোন টাকা এখানে নেই।

এই টাকা অনেক আগেই উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে তারাই ব্যবস্থা নেবেন।