প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশে থাকাকালীন ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন; চারদিনের মধ্যে এতগুলো ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
‘আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে’ বিএনপি নাশকতা করছে কি না, সরকার তা খতিয়ে দেখছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের কাজে বাইরে, ঠিক সেই সময় আমাদের দেশে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গেছে। এটা নাশকতা কি না স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, অথবা নাশকতা, সেটা সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গুলিস্তান, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, কক্সবাজারের বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ঘটিয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে সরকার।’
স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতার যান প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি ঢাকায় ফেরেন।
এ সময়ের মধ্যে গত মঙ্গলবার ৭ মার্চ গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন নামের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত শতাধিক, যাদের মধ্যে ৭০ জনকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন, যাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তার দুই দিন আগে ৫ মার্চ মিরপুর রোডে বিস্ফোরণে তিনতলা একটি ভবনের আংশিক ধসে পড়ে। তাতে মৃত্যু হয় তিনজনের। ওইদিনই কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আগুনে পুড়ে যায় প্রায় দুই হাজার ঘর। তারও আগের দিন শনিবার ৪ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডে, ঢাকার মিরপুর রোডে বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতে রাজধানীর গুলিস্তনে আরও বড় বিস্ফোরণের নেপথ্যে ‘কী?’, এই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।
গতকাল যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের যখন বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য রাখছিলেন, একই সময় রাজধানীতে দলীয় এক আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন শুধু বিস্ফোরণ হচ্ছে। কীভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে? সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের এসব ভবন দেখাশোনা করার কথা, যাদের নজরদারি করার কথা, তারা কাজ করে না, সব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’ এর আগেও বিস্ফোরণের জন্য সরকারের ‘ব্যর্থতা’কে দায়ী করেন বিএনপি মহাসচিব।
তবে এসব ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতাদের মাথা না ঘামানোরও পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের ‘কারও মাথা ব্যাথার প্রয়োজন নাই। মির্জা ফখরুল হুট করে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তার বিবৃতির ভাষা হচ্ছে যে, এই ধরনের একের পর এক ঘটনার রহস্যজনক।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা তার (মির্জা ফখরুল) সঙ্গে একমত। এই সময়ে দেশে এই ধরনের ঘটনা রহস্যজনক। এই রহস্যের ভেতরের বিষয়টি কী, সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এসব রহস্যজনক ঘটনার পেছনের কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বা দলের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কি না, তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা সিরিয়াসলি খতিয়ে দেখছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনে ব্যর্থতা যাদের, তারা (বিএনপি) এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নাশকতার পথ খুঁজছে কি না, নাশকতার পথে হাঁটছেন কি না, সেটাও আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হলে আগুন সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা সর্তক আছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবদুর রহমান, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান গতকাল যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উন্মে কুলসুম স্মৃতি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনানও উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩ , ২৪ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৬ শবান ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশে থাকাকালীন ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন; চারদিনের মধ্যে এতগুলো ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
‘আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে’ বিএনপি নাশকতা করছে কি না, সরকার তা খতিয়ে দেখছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের কাজে বাইরে, ঠিক সেই সময় আমাদের দেশে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গেছে। এটা নাশকতা কি না স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, অথবা নাশকতা, সেটা সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গুলিস্তান, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, কক্সবাজারের বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ঘটিয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে সরকার।’
স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতার যান প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি ঢাকায় ফেরেন।
এ সময়ের মধ্যে গত মঙ্গলবার ৭ মার্চ গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন নামের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত শতাধিক, যাদের মধ্যে ৭০ জনকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন, যাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তার দুই দিন আগে ৫ মার্চ মিরপুর রোডে বিস্ফোরণে তিনতলা একটি ভবনের আংশিক ধসে পড়ে। তাতে মৃত্যু হয় তিনজনের। ওইদিনই কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আগুনে পুড়ে যায় প্রায় দুই হাজার ঘর। তারও আগের দিন শনিবার ৪ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডে, ঢাকার মিরপুর রোডে বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতে রাজধানীর গুলিস্তনে আরও বড় বিস্ফোরণের নেপথ্যে ‘কী?’, এই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।
গতকাল যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের যখন বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য রাখছিলেন, একই সময় রাজধানীতে দলীয় এক আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন শুধু বিস্ফোরণ হচ্ছে। কীভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে? সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের এসব ভবন দেখাশোনা করার কথা, যাদের নজরদারি করার কথা, তারা কাজ করে না, সব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’ এর আগেও বিস্ফোরণের জন্য সরকারের ‘ব্যর্থতা’কে দায়ী করেন বিএনপি মহাসচিব।
তবে এসব ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতাদের মাথা না ঘামানোরও পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের ‘কারও মাথা ব্যাথার প্রয়োজন নাই। মির্জা ফখরুল হুট করে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তার বিবৃতির ভাষা হচ্ছে যে, এই ধরনের একের পর এক ঘটনার রহস্যজনক।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা তার (মির্জা ফখরুল) সঙ্গে একমত। এই সময়ে দেশে এই ধরনের ঘটনা রহস্যজনক। এই রহস্যের ভেতরের বিষয়টি কী, সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এসব রহস্যজনক ঘটনার পেছনের কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বা দলের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কি না, তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা সিরিয়াসলি খতিয়ে দেখছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনে ব্যর্থতা যাদের, তারা (বিএনপি) এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নাশকতার পথ খুঁজছে কি না, নাশকতার পথে হাঁটছেন কি না, সেটাও আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হলে আগুন সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা সর্তক আছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আবদুর রহমান, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান গতকাল যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উন্মে কুলসুম স্মৃতি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনানও উপস্থিত ছিলেন।