যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারাতেই আছে। এ বছরের প্রথম মাসে মোট রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৬৭ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলারে, যেটি ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৭৫১ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাজারে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে চীন ও ভিয়েতনামের পরে বাংলাদেশের তার একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্যে তৃতীয় স্থানে ছিল। যেখানে ২০২২ সালের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) দেয়া পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
অটেক্সা অনুসারে, ২০২৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রে মোট পোশাক রপ্তানি ৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি পেয়ছে। অন্যদের তুলনামূলক কম বৃদ্ধি হয়েছে।
রপ্তানিকারকদের মধ্যে, চীন ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ রপ্তানি করে ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যা ২০২২ সালের একই সময়ের ১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ এ নেমে এসেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে।
২০২২ সালে এটি ছিল ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ০ দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে তাদের রপ্তানি।
বাংলাদেশের পরে থাকা ভারত ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৮৪ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যা বাজারের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আগের বছর তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৪১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ তাদের রপ্তানি ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে।
অটেক্সার তথ্য অনুসারে, ইন্দোনেশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ২০২৩ সালের প্রথম মাসে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৪৫৩ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। একই সময়ে কম্বোডিয়া থেকে বাজারটিতে ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ রপ্তানি কমে ২৮২ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশ দুটি ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ও ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ পোশাক পণ্য রপ্তানি করে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
বিভিন্ন অনুমান অনুসারে, ভোক্তাদের আর্থিক উদ্বেগ ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বিক্রয় হ্রাস পাবে বলে আশা করা হয়েছিল।
ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্যাশন শিল্প আবার একটি চ্যালেঞ্জিং জলবায়ুর মুখোমুখি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এই মন্থরতা ২০২৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিষণœতা ক্রমবর্ধমানভাবে গ্রাহকদের কেনাকাটার অভ্যাসের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ফ্যাশন শিল্প একটি দুর্বল চাহিদার মুখোমুখি হচ্ছে যার অর্থ সামনে একটি অপ্রত্যাশিত বছর আসতে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, ভোক্তারা বিভিন্ন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অশান্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যা তাদের বিবেচনামূলক ক্রয় স্থগিত করতে বা হ্রাস করতে বাধ্য করছে; অথবা দর কষাকষি, পুনঃবিক্রয়, ভাড়া ও কমদামি পণ্য সন্ধান করতে উৎসাহ দিচ্ছে। ২০২২ সালের বাংলাদেশ মার্কিন বাজার থেকে ৯ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে যা ২০২১ সালের ৭ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩ , ২৬ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৮ শবান ১৪৪৪
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারাতেই আছে। এ বছরের প্রথম মাসে মোট রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৬৭ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলারে, যেটি ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৭৫১ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাজারে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে চীন ও ভিয়েতনামের পরে বাংলাদেশের তার একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্যে তৃতীয় স্থানে ছিল। যেখানে ২০২২ সালের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) দেয়া পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
অটেক্সা অনুসারে, ২০২৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রে মোট পোশাক রপ্তানি ৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি পেয়ছে। অন্যদের তুলনামূলক কম বৃদ্ধি হয়েছে।
রপ্তানিকারকদের মধ্যে, চীন ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ রপ্তানি করে ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যা ২০২২ সালের একই সময়ের ১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ এ নেমে এসেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে।
২০২২ সালে এটি ছিল ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ০ দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে তাদের রপ্তানি।
বাংলাদেশের পরে থাকা ভারত ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৮৪ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যা বাজারের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আগের বছর তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৪১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ তাদের রপ্তানি ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে।
অটেক্সার তথ্য অনুসারে, ইন্দোনেশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ২০২৩ সালের প্রথম মাসে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৪৫৩ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। একই সময়ে কম্বোডিয়া থেকে বাজারটিতে ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ রপ্তানি কমে ২৮২ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশ দুটি ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ও ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ পোশাক পণ্য রপ্তানি করে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
বিভিন্ন অনুমান অনুসারে, ভোক্তাদের আর্থিক উদ্বেগ ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বিক্রয় হ্রাস পাবে বলে আশা করা হয়েছিল।
ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্যাশন শিল্প আবার একটি চ্যালেঞ্জিং জলবায়ুর মুখোমুখি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এই মন্থরতা ২০২৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিষণœতা ক্রমবর্ধমানভাবে গ্রাহকদের কেনাকাটার অভ্যাসের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ফ্যাশন শিল্প একটি দুর্বল চাহিদার মুখোমুখি হচ্ছে যার অর্থ সামনে একটি অপ্রত্যাশিত বছর আসতে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, ভোক্তারা বিভিন্ন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অশান্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যা তাদের বিবেচনামূলক ক্রয় স্থগিত করতে বা হ্রাস করতে বাধ্য করছে; অথবা দর কষাকষি, পুনঃবিক্রয়, ভাড়া ও কমদামি পণ্য সন্ধান করতে উৎসাহ দিচ্ছে। ২০২২ সালের বাংলাদেশ মার্কিন বাজার থেকে ৯ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে যা ২০২১ সালের ৭ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।