সড়কের এক পাশ দিয়ে চলছে যাওয়া আসা, ভোগান্তিতে মানুষ

গত মঙ্গলবার গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্যাফে কুইন ভবনের সামনের সড়কের একাংশ। ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও সেখানে অনেক মানুষের জটলা দেখা যায়। তবে ঘটনার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনের রাস্তার এক পাশ দিয়ে দুই দিকের যানবাহন চলাচলে যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই এলাকার মানুষ, যাত্রী ও পথচারীরা।

‘দুই কিলো রাস্তা পার হতে ঘণ্টার ওপর চইলা যাইতেছে’ জানিয়ে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘কবে এ রাস্তা ঠিক হবে কে জানে। যে অবস্থা দেখতাছি মনে হয় না খুব সহজে এই রাস্তা খুইলা দিবার পারবো।’ তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটলে এর জন্য অনেককে ভুগতে হয়। আইজ চার দিন ধইরা খুবই সমস্যার মধ্যে চলাফেরা করতাছি।’

কবে নাগাদ এই রাস্তা খুলে দেয়া হবে এটি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলমহলও বলতে পারছে না। গতকালও ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের সরব উপস্থিতি ছিল। উদ্ধার অভিযান না চললেও তারা সেখানে সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন।

উপস্থিত দায়িত্বশীলদের মধ্যে একজন রাজউকের কারিগরি কমিটির সদস্য রঙ্গন মন্ডল। রাস্তা খুলে দেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে না পারলেও ভবনটির বিষয়ে বলেন, ভবনটি যেন ধসে না পড়ে, এজন্য ঠেকানোর কাজ শেষ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে ভবনটি কতটুকু ‘স্টেবল’ হয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে পর্যাপ্ত সাপোর্ট খুঁটি দেয়ার পর সেটি ‘স্টেবল’ হয়েছে কি না তা যাচাই করা হবে। গাড়ি চলাচল করলে সেই গাড়ির জার্কিং বা কম্পন কতটুকু সহ্য করতে পারে তা দেখা হচ্ছে। এরপরই আপাতত বন্ধ সড়কটির একাংশ খুলে দেয়া হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।’

‘এ পর্যন্ত পাঁচটি সাপোর্ট খুঁটি বসানো সম্ভব হয়েছে। তবে ভেতরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে রঙ্গন মন্ডল বলেন, ঠেকনা দেয়ার মতো সাপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। সাপোর্ট খুঁটি বসানোর পর ভবনটি কতটুকু স্টেবল হয়েছে, তা নির্ণয় করে সড়কের এই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের বিষয়ে জানানো যাবে।’

রঙ্গন মন্ডল বলেন, ‘স্টেবল করার পর ভবনটি রেট্রোফিটিংয়ের উপযোগী কি না, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ৪৫ দিন সময় লাগবে। উপযোগী হলে রেট্রোফিটিং করতে অন্তত এক বছর লাগবে।’

গতকালও দেখা যায় ভবনটির সামনের সড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েক গজ দূরত্বে রয়েছে ব্যারিকেড, বিস্ফোরণের ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও প্রচুর মানুষের জটলা দেখা যায়। ভবনটির সামনে ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না ফিতা ঘেরা অংশে। ভবনের গায়ে ঝুলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যানার, বড় বড় করে সেখানে লেখা ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’।

বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, সড়কের পূর্ব অংশ দিয়ে এখন গাড়ি যাতায়াত করছে। কারিগরি কমিটি বলার পর বন্ধ সড়ক খুলে দেয়া হবে।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, ‘আমাদের কোন উদ্ধার কাজ এখন চলছে না। তবে আমরা ঘটনাস্থলে আছি, যেকোন জরুরি প্রয়োজনে রেসপন্স করব।’

সাততলা ওই বাণিজ্যিক ভবনটির মালিক ছিলেন রেজাউর রহমান। এক সময় তিনি ক্যাফে কুইন নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলেছিলেন ওই ভবনে, সেজন্য স্থানীয়রা ভবনটি ক্যাফে কুইন বিল্ডিং নামেই চেনেন।

আরও খবর
বিস্ফোরণ ঘটে ভবনের বেসমেন্টে অবৈধ গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে
শান্তর ঝড়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারালো টাইগাররা
প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও কালো পতাকা
স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ৯ ব্যক্তি ও ১ প্রতিষ্ঠান
বিস্ফোরণে দগ্ধ ও আহতরা কাতরাচ্ছেন হাসপাতালে
বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু, সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩
উত্তরায় সোয়া ১১ কোটি টাকা লুট ৯ ঘণ্টা পর ৯ কোটি উদ্ধার
দাম কমানোর আলোচনার মধ্যেই আদানির বিদ্যুৎ এলো বাংলাদেশে
বড় কোন দুর্যোগে নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কাজের দুর্বলতা কেন?
ধসেপড়া ভবনে তল্লাশি কার্যক্রম বন্ধ
রমজান ঘিরে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য, দিশেহারা মানুষ
খালেদা জিয়া রাজনীতি ও নির্বাচন করতে পারবে কিনা বলবে আদালত : কাদের
উদ্ধার হওয়া টাকার অঙ্ক নিয়ে বিভ্রান্তি
আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে সংবিধান বারবার কাটাছেঁড়া করেছে : ফখরুল
ভারত থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল আসবে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে

শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩ , ২৬ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৮ শবান ১৪৪৪

সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণ

সড়কের এক পাশ দিয়ে চলছে যাওয়া আসা, ভোগান্তিতে মানুষ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

গত মঙ্গলবার গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্যাফে কুইন ভবনের সামনের সড়কের একাংশ। ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও সেখানে অনেক মানুষের জটলা দেখা যায়। তবে ঘটনার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনের রাস্তার এক পাশ দিয়ে দুই দিকের যানবাহন চলাচলে যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই এলাকার মানুষ, যাত্রী ও পথচারীরা।

‘দুই কিলো রাস্তা পার হতে ঘণ্টার ওপর চইলা যাইতেছে’ জানিয়ে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘কবে এ রাস্তা ঠিক হবে কে জানে। যে অবস্থা দেখতাছি মনে হয় না খুব সহজে এই রাস্তা খুইলা দিবার পারবো।’ তিনি বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটলে এর জন্য অনেককে ভুগতে হয়। আইজ চার দিন ধইরা খুবই সমস্যার মধ্যে চলাফেরা করতাছি।’

কবে নাগাদ এই রাস্তা খুলে দেয়া হবে এটি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলমহলও বলতে পারছে না। গতকালও ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের সরব উপস্থিতি ছিল। উদ্ধার অভিযান না চললেও তারা সেখানে সতর্ক অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছেন।

উপস্থিত দায়িত্বশীলদের মধ্যে একজন রাজউকের কারিগরি কমিটির সদস্য রঙ্গন মন্ডল। রাস্তা খুলে দেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে না পারলেও ভবনটির বিষয়ে বলেন, ভবনটি যেন ধসে না পড়ে, এজন্য ঠেকানোর কাজ শেষ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে ভবনটি কতটুকু ‘স্টেবল’ হয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে পর্যাপ্ত সাপোর্ট খুঁটি দেয়ার পর সেটি ‘স্টেবল’ হয়েছে কি না তা যাচাই করা হবে। গাড়ি চলাচল করলে সেই গাড়ির জার্কিং বা কম্পন কতটুকু সহ্য করতে পারে তা দেখা হচ্ছে। এরপরই আপাতত বন্ধ সড়কটির একাংশ খুলে দেয়া হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।’

‘এ পর্যন্ত পাঁচটি সাপোর্ট খুঁটি বসানো সম্ভব হয়েছে। তবে ভেতরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে রঙ্গন মন্ডল বলেন, ঠেকনা দেয়ার মতো সাপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। সাপোর্ট খুঁটি বসানোর পর ভবনটি কতটুকু স্টেবল হয়েছে, তা নির্ণয় করে সড়কের এই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের বিষয়ে জানানো যাবে।’

রঙ্গন মন্ডল বলেন, ‘স্টেবল করার পর ভবনটি রেট্রোফিটিংয়ের উপযোগী কি না, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ৪৫ দিন সময় লাগবে। উপযোগী হলে রেট্রোফিটিং করতে অন্তত এক বছর লাগবে।’

গতকালও দেখা যায় ভবনটির সামনের সড়কের উভয় পাশে বেশ কয়েক গজ দূরত্বে রয়েছে ব্যারিকেড, বিস্ফোরণের ঘটনার পর চতুর্থ দিনেও প্রচুর মানুষের জটলা দেখা যায়। ভবনটির সামনে ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না ফিতা ঘেরা অংশে। ভবনের গায়ে ঝুলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যানার, বড় বড় করে সেখানে লেখা ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’।

বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, সড়কের পূর্ব অংশ দিয়ে এখন গাড়ি যাতায়াত করছে। কারিগরি কমিটি বলার পর বন্ধ সড়ক খুলে দেয়া হবে।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, ‘আমাদের কোন উদ্ধার কাজ এখন চলছে না। তবে আমরা ঘটনাস্থলে আছি, যেকোন জরুরি প্রয়োজনে রেসপন্স করব।’

সাততলা ওই বাণিজ্যিক ভবনটির মালিক ছিলেন রেজাউর রহমান। এক সময় তিনি ক্যাফে কুইন নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলেছিলেন ওই ভবনে, সেজন্য স্থানীয়রা ভবনটি ক্যাফে কুইন বিল্ডিং নামেই চেনেন।