সৈয়দপুরে মজুরি বৈষম্যের শিকার নারী শ্রমিকরা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন শ্রম খাতে কাজ করা নারী শ্রমিকরা প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পুরুষ শ্রমিকদের মতো সমানতালে কাজ করলেও চরম মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। উপজেলার নারীরা এখন ঘরে বসে নেই, সকাল-সন্ধ্যা উপজেলার বিভিন্ন শ্রম খাতের সর্বক্ষেত্রে কাজ করছেন। বর্তমানে শ্রম বাজারে প্রায় ১০ হাজার নারী বিক্রি করছেন শ্রম। ফলে শ্রম খাতে দিন দিন বাড়ছে নারী শ্রমিকদের সংখ্যা। সংসারে অভাব-অনটনসহ বেঁচে থাকার তাগিদে নারী শ্রমিকরা শ্রম বাজারে আসছেন।

শ্রম খাতের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলায় নারী শ্রমিকরা যুক্ত আছেন ইমারত নির্মাণ কাজে, কৃষি কাজে, ক্ষুদ্র তৈরী পোশাক কারখানায়, ইটভাটা, মাটি কাটা, বেকারী, বিভিন্ন শিল্প কারখানায় এবং গৃহ শ্রমিকের কাজে। এসব শ্রম খাতে প্রায় ১০ হাজার নারী শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। তবে এসব নারীরা সমপরিমাণ কাজ করলেও পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় মজুরি পাচ্ছে কম।

কথা হয় শহরের নির্মাণ ও শিল্প কারখানায় কাজ করেন এমন কয়েকজন নারী শ্রমিকদের সঙ্গে। তারা বলেন, বাড়িঘর নির্মাণ কাজে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের মত কাজ করলেও আমাদের মজুরি দেয়া হয় ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। অথচ একই কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেয়া হয় ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা।

বিসিক শিল্প নগরীর নারী শ্রমিক জোছনা, খদিজা ও নাসিমা জানান, তাদের মত অনেকে বিসিক এলাকায় জুট, ময়দা ও প্লাইউড ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন। সকাল-সন্ধ্যা কাজ করে দিন শেষে মজুরি দেয়া হয় ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। অথচ একই কাজের জন্য পুরুষ শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হয় ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। অথচ আমরা পুরুষের মত কাজে ফাঁকি দেই না, বরং বেশী পরিশ্রম করে থাকি। অথচ মজুরির বেলায় কম মজুরি দেয়া হয়। তারা আরো বলেন, বিসিক ছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকায় কলকারখানা ও ফ্যাক্টরীতে জড়িত নারীরা আরো কম মজুরি পান। তাদেরকে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা মজুরি দেয়া হয়। মজুরি কম নিয়ে কথা বলা যায় না, কথা বললেই কাজ থেকে বাদ দেয়া হয়। বর্তমান চড়া বাজারে পেটের তাগিদে মজুরি যা পাই, তাই আমাদের এখন বাঁচার অবলম্বন। এছাড়া আমাদের উপায় কী!

সৈয়দপুর নারী আন্দোলনের সভানেত্রী কামরুন নাহার ইরা বলেন, নারীরা ক্ষমতায়নে এগিয়ে গেলেও নারী শ্রমিকরা এখনও ন্যায্য মজুরি পায় না।

আমরা এই বৈষম্য দূর করতে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের সচেতন করার পাশাপাশি মজুরি সমতার দাবি জানিয়ে আসছি। তবে মাঠ পর্যায়ে মজুরি বৈষম্য দূর করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও নারী শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

image

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : এভাবেই নারী শ্রমিকরা পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন -সংবাদ

আরও খবর
সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, দুর্ভোগ চরমে
নোয়াখালীতে চেয়ারম্যানের অফিসে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট, আহত ৭
পরমাণু গবেষণার নির্মাণাধীন ভবনে ধস, আহত ১৫
কিশোরগঞ্জে গণতন্ত্রী পার্টির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত
বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
কলাপাড়ায় নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাখার কর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ
নবীগঞ্জে বাস-বাইক সংঘর্ষে নিহত এক
নান্দিনা মধু বিলের পাশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ঝুলছে তালা
কলারোয়ায় কবর খুঁড়তে গিয়ে পেল মাইন
বোয়ালখালীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা
অসহায় বিধবাকে ঘর দিলেন হোগলা ইউপি চেয়ারম্যান

রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩ , ২৭ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৯ শবান ১৪৪৪

সৈয়দপুরে মজুরি বৈষম্যের শিকার নারী শ্রমিকরা

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

image

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : এভাবেই নারী শ্রমিকরা পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন -সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন শ্রম খাতে কাজ করা নারী শ্রমিকরা প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পুরুষ শ্রমিকদের মতো সমানতালে কাজ করলেও চরম মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। উপজেলার নারীরা এখন ঘরে বসে নেই, সকাল-সন্ধ্যা উপজেলার বিভিন্ন শ্রম খাতের সর্বক্ষেত্রে কাজ করছেন। বর্তমানে শ্রম বাজারে প্রায় ১০ হাজার নারী বিক্রি করছেন শ্রম। ফলে শ্রম খাতে দিন দিন বাড়ছে নারী শ্রমিকদের সংখ্যা। সংসারে অভাব-অনটনসহ বেঁচে থাকার তাগিদে নারী শ্রমিকরা শ্রম বাজারে আসছেন।

শ্রম খাতের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলায় নারী শ্রমিকরা যুক্ত আছেন ইমারত নির্মাণ কাজে, কৃষি কাজে, ক্ষুদ্র তৈরী পোশাক কারখানায়, ইটভাটা, মাটি কাটা, বেকারী, বিভিন্ন শিল্প কারখানায় এবং গৃহ শ্রমিকের কাজে। এসব শ্রম খাতে প্রায় ১০ হাজার নারী শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। তবে এসব নারীরা সমপরিমাণ কাজ করলেও পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় মজুরি পাচ্ছে কম।

কথা হয় শহরের নির্মাণ ও শিল্প কারখানায় কাজ করেন এমন কয়েকজন নারী শ্রমিকদের সঙ্গে। তারা বলেন, বাড়িঘর নির্মাণ কাজে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের মত কাজ করলেও আমাদের মজুরি দেয়া হয় ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। অথচ একই কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেয়া হয় ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা।

বিসিক শিল্প নগরীর নারী শ্রমিক জোছনা, খদিজা ও নাসিমা জানান, তাদের মত অনেকে বিসিক এলাকায় জুট, ময়দা ও প্লাইউড ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন। সকাল-সন্ধ্যা কাজ করে দিন শেষে মজুরি দেয়া হয় ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। অথচ একই কাজের জন্য পুরুষ শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হয় ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। অথচ আমরা পুরুষের মত কাজে ফাঁকি দেই না, বরং বেশী পরিশ্রম করে থাকি। অথচ মজুরির বেলায় কম মজুরি দেয়া হয়। তারা আরো বলেন, বিসিক ছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকায় কলকারখানা ও ফ্যাক্টরীতে জড়িত নারীরা আরো কম মজুরি পান। তাদেরকে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা মজুরি দেয়া হয়। মজুরি কম নিয়ে কথা বলা যায় না, কথা বললেই কাজ থেকে বাদ দেয়া হয়। বর্তমান চড়া বাজারে পেটের তাগিদে মজুরি যা পাই, তাই আমাদের এখন বাঁচার অবলম্বন। এছাড়া আমাদের উপায় কী!

সৈয়দপুর নারী আন্দোলনের সভানেত্রী কামরুন নাহার ইরা বলেন, নারীরা ক্ষমতায়নে এগিয়ে গেলেও নারী শ্রমিকরা এখনও ন্যায্য মজুরি পায় না।

আমরা এই বৈষম্য দূর করতে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের সচেতন করার পাশাপাশি মজুরি সমতার দাবি জানিয়ে আসছি। তবে মাঠ পর্যায়ে মজুরি বৈষম্য দূর করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও নারী শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।