চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন পেসার হাসান

দ্বিতীয় টি-২০’র আগে গতকাল অনুশীলন সেরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে পেসার হাসান মাহমুদ বলেন, উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তেও নিজেকে স্থির ও শান্ত রাখতে পারার কারণেই ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা সহায়ক হয়েছে।

প্রথম টি-২০তে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৩০ বলে ৫১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন ব্যাটার নাজমুল হাসান শান্ত। তবে ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন হাসান। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেন তিনি।

ম্যাচে ২৬ রানে ২ উইকেট নেন হাসান। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি ছিল ইংল্যান্ডের আক্রমণাত্মক ব্যাটার জশ বাটলারের। তার ব্যাটিং নৈপুন্যে ১৮০ রানের স্কোর পাবার স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৬ রান করে ইংলিশরা। যা সহজেই টপকে যায় বাংলাদেশ।

৪২ বলে ৬৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে হাসানের দুই বলে দু’টি ছক্কা মারেন বাটলার। ১৩তম ওভারে হাসানকে টানা দুটি ছয়ে উড়ান বাটলার। ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে ছিলেন খরুচে। পরের স্পেলে ফিরে সেই বাটলারকেই কাবু করে ফেরান বাংলাদেশকে। জানান, ছয় মারার বলগুলো ভুলে গিয়ে নিজের পরিকল্পনায় অটুট ছিলেন তিনি, ‘ওই সময় ও যে আমাকে ছক্কা মারছে দুইটা পরপর, আমি ছয়ের দিকে তাকাই না, আমি দেখিই নাই ও কী করছিল। আমি ভাবছিলাম আমি কী করবো। শেষ দুই ওভারে আমার চ্যালেঞ্জ ছিল যেকোনভাবে আটকাতে হবে। আমি সেটা করার চেষ্টা করেছি।’

হাসান বলেন, ‘আমি সবসময় বল বাই বল চিন্তা করি এবং একটি বাজে ডেলিভারির জন্য হতাশ হই না। আমি আমার শক্তির ওপর নির্ভর করি। ঐ সময় আমার সেরাটা দিতে পছন্দ করি। আমি সত্যিই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি।’

গত বছর টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বোলিং পারফরমেন্স ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে বলে বিশ^াস করেন হাসান। ঐ ম্যাচে ৪৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারী ছিলেন তিনি। যদিও ঘটনাবহুল সেই ম্যাচটি হেরেছিল বাংলাদেশ।

এখন অবধি ৬ ওয়ানডেতে ৮ উইকেট ও ১১টি টি-২০তে ১৫ উইকেট পাওয়া হাসান বলেন, ‘ঐ ম্যাচটি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। আউট করেছিলেন রোহিত শর্মাকে। ৩ উইকেট নেয়ার পথে হার্দিক পান্ডিয়া ও আকসার প্যাটেলের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পরের দিকে যদিও দিয়ে দেন কিছুটা বাড়তি রান। ‘ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ ছিল। ওই ম্যাচের পর আমার ভয়টা কেটে গিয়েছে। এখানে আরেকটু সহজ হয়েছে।’

বেশ কয়েকবারই ইনজুরিতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে হাসানের ছোট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। অন্তত দেড় বছর মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ দিয়ে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার। শক্তিশালী রূপে ফিরে আসার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

‘এই মুহূর্তে টি-২০তে আমাদের দল আছে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের সমন্বয় আমি দেখছি এরমধ্যে। খুবই উজ্জীবিত সবাই, মাঠে খুবই এফোর্ট দেয় শেষ পর্যন্ত। এটা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি এই ম্যাচটাকে এগিয়ে নিতে পারি তাহলে আমি মনে করি টি-২০ হোক বা ওয়ানডে, যেকোন ফরম্যাটে আমরা এগিয়ে থাকবে সবার থেকে।’

আজ ও মঙ্গলবার দুই ম্যাচের যেকোন একটা জিততে পারলে সিরিজ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। এমন অর্জন হলে নিঃসন্দেহে সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে থিতু দল পেতে বড় একটা ধাপ এগুনো যাবে। প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে থাকায় সিরিজ জিততেও জোর শক্তি পাচ্ছেন হাসান, ‘আমরা ইনশাআল্লাহ্? সিরিজ জিতব। মোমেন্টাম যেহেতু আমাদের দিকে আছে, ভালো কিছু হবে। অধিনায়ক আমাদের সাহস দিচ্ছেন। আমরা তরুণ আছি সবাই। সব কিছু মিলে ঠিকঠাক চলছে।’

‘এখন পর্যন্ত আমরা খুব ভালো খেলেছি। ওদেরকে চট্টগ্রামে হারিয়েছি। চেষ্টা থাকবে ওদেরকে এখানেও হারানোর।’

ক্যারিয়ার শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫শ’ উইকেট নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন হাসান। তিনি বলেন, ‘আমি ৫০০ উইকেট নিতে চাই। এটাই লক্ষ্য।’

রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩ , ২৭ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৯ শবান ১৪৪৪

চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন পেসার হাসান

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

দ্বিতীয় টি-২০’র আগে গতকাল অনুশীলন সেরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে পেসার হাসান মাহমুদ বলেন, উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তেও নিজেকে স্থির ও শান্ত রাখতে পারার কারণেই ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা সহায়ক হয়েছে।

প্রথম টি-২০তে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৩০ বলে ৫১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন ব্যাটার নাজমুল হাসান শান্ত। তবে ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন হাসান। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেন তিনি।

ম্যাচে ২৬ রানে ২ উইকেট নেন হাসান। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি ছিল ইংল্যান্ডের আক্রমণাত্মক ব্যাটার জশ বাটলারের। তার ব্যাটিং নৈপুন্যে ১৮০ রানের স্কোর পাবার স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৬ রান করে ইংলিশরা। যা সহজেই টপকে যায় বাংলাদেশ।

৪২ বলে ৬৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে হাসানের দুই বলে দু’টি ছক্কা মারেন বাটলার। ১৩তম ওভারে হাসানকে টানা দুটি ছয়ে উড়ান বাটলার। ২ ওভারে ২১ রান দিয়ে ছিলেন খরুচে। পরের স্পেলে ফিরে সেই বাটলারকেই কাবু করে ফেরান বাংলাদেশকে। জানান, ছয় মারার বলগুলো ভুলে গিয়ে নিজের পরিকল্পনায় অটুট ছিলেন তিনি, ‘ওই সময় ও যে আমাকে ছক্কা মারছে দুইটা পরপর, আমি ছয়ের দিকে তাকাই না, আমি দেখিই নাই ও কী করছিল। আমি ভাবছিলাম আমি কী করবো। শেষ দুই ওভারে আমার চ্যালেঞ্জ ছিল যেকোনভাবে আটকাতে হবে। আমি সেটা করার চেষ্টা করেছি।’

হাসান বলেন, ‘আমি সবসময় বল বাই বল চিন্তা করি এবং একটি বাজে ডেলিভারির জন্য হতাশ হই না। আমি আমার শক্তির ওপর নির্ভর করি। ঐ সময় আমার সেরাটা দিতে পছন্দ করি। আমি সত্যিই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি।’

গত বছর টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বোলিং পারফরমেন্স ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে বলে বিশ^াস করেন হাসান। ঐ ম্যাচে ৪৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারী ছিলেন তিনি। যদিও ঘটনাবহুল সেই ম্যাচটি হেরেছিল বাংলাদেশ।

এখন অবধি ৬ ওয়ানডেতে ৮ উইকেট ও ১১টি টি-২০তে ১৫ উইকেট পাওয়া হাসান বলেন, ‘ঐ ম্যাচটি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। আউট করেছিলেন রোহিত শর্মাকে। ৩ উইকেট নেয়ার পথে হার্দিক পান্ডিয়া ও আকসার প্যাটেলের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পরের দিকে যদিও দিয়ে দেন কিছুটা বাড়তি রান। ‘ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ ছিল। ওই ম্যাচের পর আমার ভয়টা কেটে গিয়েছে। এখানে আরেকটু সহজ হয়েছে।’

বেশ কয়েকবারই ইনজুরিতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে হাসানের ছোট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। অন্তত দেড় বছর মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ দিয়ে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার। শক্তিশালী রূপে ফিরে আসার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।

‘এই মুহূর্তে টি-২০তে আমাদের দল আছে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের সমন্বয় আমি দেখছি এরমধ্যে। খুবই উজ্জীবিত সবাই, মাঠে খুবই এফোর্ট দেয় শেষ পর্যন্ত। এটা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি এই ম্যাচটাকে এগিয়ে নিতে পারি তাহলে আমি মনে করি টি-২০ হোক বা ওয়ানডে, যেকোন ফরম্যাটে আমরা এগিয়ে থাকবে সবার থেকে।’

আজ ও মঙ্গলবার দুই ম্যাচের যেকোন একটা জিততে পারলে সিরিজ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। এমন অর্জন হলে নিঃসন্দেহে সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে থিতু দল পেতে বড় একটা ধাপ এগুনো যাবে। প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে থাকায় সিরিজ জিততেও জোর শক্তি পাচ্ছেন হাসান, ‘আমরা ইনশাআল্লাহ্? সিরিজ জিতব। মোমেন্টাম যেহেতু আমাদের দিকে আছে, ভালো কিছু হবে। অধিনায়ক আমাদের সাহস দিচ্ছেন। আমরা তরুণ আছি সবাই। সব কিছু মিলে ঠিকঠাক চলছে।’

‘এখন পর্যন্ত আমরা খুব ভালো খেলেছি। ওদেরকে চট্টগ্রামে হারিয়েছি। চেষ্টা থাকবে ওদেরকে এখানেও হারানোর।’

ক্যারিয়ার শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫শ’ উইকেট নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন হাসান। তিনি বলেন, ‘আমি ৫০০ উইকেট নিতে চাই। এটাই লক্ষ্য।’