রাজনীতিতে সৎ নেতৃত্ব

আত্মপরিচয় ও চেতনা একটি জাতির উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। একটি সভ্যতাকে কেন্দ্র করে উৎপত্তি হয় কোর রাষ্ট্রের। আর সভ্যতার নিজ চেতনা ও দর্শনকে সামনে রেখে ব্যক্তি, সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি পরিচালিত হয়।

পশ্চিমা বিশ্বের উন্নয়নে তাদের মূল্যবোধ, চেতনা ও বিশ্বাসসমূহ হলো- ব্যক্তি স্বাধীনতা, সমতা, গণতন্ত্র, ব্যক্তিস্বতন্ত্র, সরকারের প্রতি সন্দিহান থাকা ইত্যাদি। এসব চেতনার ওপর ভিত্তি করেই তারা বিশ্ব শাসন করছে। অন্যদিকে বিশ্বের নব্য পরাশক্তি চীনের উন্নতি হয়েছে কনফুসিয় ধারার মধ্য দিয়ে। কনফুসিয় মতবাদের মধ্যে রয়েছে- মূল্যবোধের প্রতি গুরুত্বারোপ, কর্তৃপক্ষের প্রতি মান্য, পদসোপান পুরোহিততন্ত্র, ব্যক্তিগত অধিকার বা স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া, ঐকমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ এবং সর্বোপরি সামাজ ও ব্যক্তির ওপর রাষ্ট্রের আধিপত্য ও শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা।

এছাড়া জাপান, ম্যাক্সিকো, রাশিয়া, ভারতসহ অনেক রাষ্ট্র রয়েছে যারা নিজেদের চেতনা ও মূল্যবোধকে ব্যবহার করে একটি কোর রাষ্ট্র হিসাবে দাঁড় করিয়েছে। কাতার, কুয়েত, আরব অমিরাত, জার্মান, সিঙ্গাপুর, মালায়েশিয়াসহ আমদের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী অনেক দেশ শক্তিশালী অর্থনীতি ও প্রশাসন তৈরি করেছে। অথচ আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে স্বনির্ভর অর্থনীতি, শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামো, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে ব্যর্থ হয়েছি। যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য লজ্জাজনক। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, এসবাই চেতনাকে সামনে রেখে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন বৈষম্যহীন স্বনির্ভর, স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি জাতির।

এখন আমাদের প্রয়োজন সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করা। অতঃপর রাজনীতি ও জাতীয় উন্নয়নে সৎ নেতৃত্বকে সম্পৃক্ত করে সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করি।

নাজমুল ইসলাম

রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩ , ২৭ ফাল্গুন ১৪২৯, ১৯ শবান ১৪৪৪

রাজনীতিতে সৎ নেতৃত্ব

আত্মপরিচয় ও চেতনা একটি জাতির উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। একটি সভ্যতাকে কেন্দ্র করে উৎপত্তি হয় কোর রাষ্ট্রের। আর সভ্যতার নিজ চেতনা ও দর্শনকে সামনে রেখে ব্যক্তি, সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি পরিচালিত হয়।

পশ্চিমা বিশ্বের উন্নয়নে তাদের মূল্যবোধ, চেতনা ও বিশ্বাসসমূহ হলো- ব্যক্তি স্বাধীনতা, সমতা, গণতন্ত্র, ব্যক্তিস্বতন্ত্র, সরকারের প্রতি সন্দিহান থাকা ইত্যাদি। এসব চেতনার ওপর ভিত্তি করেই তারা বিশ্ব শাসন করছে। অন্যদিকে বিশ্বের নব্য পরাশক্তি চীনের উন্নতি হয়েছে কনফুসিয় ধারার মধ্য দিয়ে। কনফুসিয় মতবাদের মধ্যে রয়েছে- মূল্যবোধের প্রতি গুরুত্বারোপ, কর্তৃপক্ষের প্রতি মান্য, পদসোপান পুরোহিততন্ত্র, ব্যক্তিগত অধিকার বা স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া, ঐকমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ এবং সর্বোপরি সামাজ ও ব্যক্তির ওপর রাষ্ট্রের আধিপত্য ও শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা।

এছাড়া জাপান, ম্যাক্সিকো, রাশিয়া, ভারতসহ অনেক রাষ্ট্র রয়েছে যারা নিজেদের চেতনা ও মূল্যবোধকে ব্যবহার করে একটি কোর রাষ্ট্র হিসাবে দাঁড় করিয়েছে। কাতার, কুয়েত, আরব অমিরাত, জার্মান, সিঙ্গাপুর, মালায়েশিয়াসহ আমদের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী অনেক দেশ শক্তিশালী অর্থনীতি ও প্রশাসন তৈরি করেছে। অথচ আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে স্বনির্ভর অর্থনীতি, শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামো, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে ব্যর্থ হয়েছি। যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য লজ্জাজনক। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, এসবাই চেতনাকে সামনে রেখে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন বৈষম্যহীন স্বনির্ভর, স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি জাতির।

এখন আমাদের প্রয়োজন সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করা। অতঃপর রাজনীতি ও জাতীয় উন্নয়নে সৎ নেতৃত্বকে সম্পৃক্ত করে সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করি।

নাজমুল ইসলাম