দুর্বল কুড়ি-বিশে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সিরিজ জিতলো টাইগাররা

ইতিহাস গড়ার ম্যাচে প্রয়োজন ছিল ‘টোটাল ক্রিকেট’-এর। সহজভাবে যাকে বলা যায় ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং এই তিন বিভাগেই নৈপুন্য তথা অল-রাউন্ড পারফরম্যান্স। ঠিক তেমনটাই করে দেখিয়েছে নবীনদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশের টি-২০ দল। ক্রিকেটের ছোটো ফরম্যাটে বরাবরই ‘দুর্বল’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো টি-২০ সিরিজ জিতেছে এই ফরম্যাটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া টাইগারদের নবীন দলটা গতকাল দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে পেয়েছে চার উইকেটের জয়। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ দল।

২০০৬ সালে টি-২০ ফরম্যাটে যাত্রা শুরুর পর চলতি সিরিজের আগে ১৪৪ ম্যাচ খেলে টাইগারদের জয় ছিল কেবল ৪৯ ম্যাচে। চলতি সিরিজের আগে ইংল্যান্ডের সঙ্গে একবারের মোকাবিলায় (২০১৫ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ) পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ দল। এবারের সিরিজে টানা দুই ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের হিসাবটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে এলো টাইগাররা।

প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ডের কাছে ওডিআই সিরিজ খোয়ানো বাংলাদেশ দল চট্টগ্রামে গিয়ে কোন যাদুমন্ত্রে জেগে উঠেছিল, তার খবর পাওয়া যাবে না কোনোদিনই। কিন্তু তৃতীয় ওডিআইতে দাপুটে জয়ের পর বিশ্চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে টানা দুটো টি-২০ জয় নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেটে নবীনদের উঠে আসার জোরালো বার্তাই ঘোষণা করেছে।

গতকালকের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া ইংল্যান্ড দলকে মাত্র ১১৭ রানে আটকে দিয়ে বোলাররা নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকমতই সেরে রেখেছিলেন। বিশেষ করে অনেকদিন ধরেই যেকোন ফরম্যাটে আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (১৩ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট) করার পাশাপাশি রান তাড়া করতে নামা বাংলাদেশ দলের উইকেট হারাতে থাকার সময়ে ১৬ বলে দুই ছক্কায় ২০ রানের ইনিংস খেলে শান্ত-তাসকিনের জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছেন।

ইতিহাস গড়া জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। এমন সমীকরণের সামনে ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন ক্রিস জর্ডান। এই পেসারের প্রথম বলটাই সীমানার দড়ি পার করে সমীকরণ সহজ করেন শান্ত। একই ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বল দুটোকে সীমানা পার করে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন তাসকিন। সব ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

অথচ জয়ের জন্য সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জুড়ে ব্যর্থ লিটন গতকালও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-২০ সিরিজেও ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনি। কিছুতেই যেন খোলস ছেড়ে বের হতে পারছেন না এই ওপেনার।

লিটনের বিদায়ের পর টেকেনি আট বছর পর চলতি সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা রনি তালুকদার (৯)। উইকেটে থিতু হয়েও জোফরা আর্চারের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।

মাত্র ২৭ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার ফেরার পর ঈষান কোনে জমা হওয়া কালো মেঘ কাটানোর কাজটা করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দুই তরুণের সাবলীল ব্যাটিংয়ে দশম ওভারে ৫০ রানের কোটা স্পর্শ করে বাংলাদেশ। এরপরই থেমে গেছেন হৃদয় (১৭), শিকার হয়েছেন ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত স্পিনার রেহান আহমেদের।

এরপর মিরাজ-শান্তর ৪১ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। মিরাজ (২০) সাজঘরে ফেরার পর সাকিব (০) ও আফিফ (২) ক্রিজে আসা যাওয়া করলে আবারও ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। তবে শান্ত নিজের নামের মতই একটা প্রান্ত আগলে রেখেছেন ধীর-স্থিরভাবে। এই টপ-অর্ডার ব্যাটারের অপরাজিত ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

এর আগে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা দুই ওপেনার ডেভিড মালান ও ফিল সল্টের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল। তবে তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন আহমেদ। ডেভিড মালানকে (৫) ফিরিয়ে প্রথম আঘাতটা করেন এই পেসার। মালানকে হারালেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন ফিল সল্ট। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন মঈন আলি। বল হাতে নিয়েই টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ফিল সল্টের (২৫) ফিরতি ক্যাচ নিলে পরের দিকের ব্যাটাররা আর নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। বিগ হিট করার ইচ্ছায় পপিং ক্রিজ থেকে অনেকটাই সরে গিয়েছিলেন সল্ট। তাকে সরে যেতে দেখে অফ স্টাম্পের ওপর বল রেখেছিলেন সাকিব। সেই বলে টার্নের সঙ্গে ছিল বাউন্স। সাকিবের গতি ও টার্নের পরীক্ষায় ফেল করেন ইংলিশদের ডান-হাতি এই ওপেনার। ফেরার আগে সল্ট ১৯ বলের ইনিংসে তিন চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছিলেন একটি ছক্কা।

ধারাবাহিকভাবে ওপেনিংয়ে খেলা জস বাটলার (৪) গতকাল ব্যাটিং অর্ডার বদলে চার নম্বরে নেমেও টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাসান মাহমুদের ইয়র্কারে কাটা পড়েছেন। আগের ম্যাচে একই বোলারের বলে দিয়েছিলেন ক্যাচ, এবার হারালেন স্ট্যাম্প। হাসানের স্বপ্নের মতো ডেলিভারির কোন জবাব ছিল না ইংলিশ অধিনায়কের কাছে।

সল্ট,বাটলারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার দায়িত্বটা ছিল মঈন আলির (১৫)। তিনি পাল্টা আক্রমণ করতে গিয়ে দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে মিরাজের বলে সুইপ করে ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন ডিপ-মিডউইকেটে।

৫৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে স্যাম কারান এবং বেন ডাকেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু মিরাজের দ্বিতীয় উইকেট হিসাবে ফিরেছেন স্যাম কারান (১২), একই ওভারে রান আউটের শিকার হয়েছেন ক্রিস ওকস (০)। মিরাজের করা ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে প্রান্ত বদল করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর নিচের সারির ব্যাটাররাও সুবিধা করতে পারেননি। যার ফলে বেশি দূর এগুয়নি তাদের ইনিংস। শেষদিকে অভিষিক্ত রেহান আহমেদের ব্যাট থেকে ১১ রান আসলে ২০ ওভার শেষে ১১৭ রান তুলে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।

আগামী ১৪ মার্চ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩ , ২৮ ফাল্গুন ১৪২৯, ২০ শবান ১৪৪৪

দুর্বল কুড়ি-বিশে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সিরিজ জিতলো টাইগাররা

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

সিরিজ জয়ের পর তাসকিন আহমেদ ও নাজমুল হোসেন শান্তর উল্লাস। তাকিয়ে দেখছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার ও মঈন আলী -সংগৃহীত

ইতিহাস গড়ার ম্যাচে প্রয়োজন ছিল ‘টোটাল ক্রিকেট’-এর। সহজভাবে যাকে বলা যায় ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং এই তিন বিভাগেই নৈপুন্য তথা অল-রাউন্ড পারফরম্যান্স। ঠিক তেমনটাই করে দেখিয়েছে নবীনদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশের টি-২০ দল। ক্রিকেটের ছোটো ফরম্যাটে বরাবরই ‘দুর্বল’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো টি-২০ সিরিজ জিতেছে এই ফরম্যাটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া টাইগারদের নবীন দলটা গতকাল দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে পেয়েছে চার উইকেটের জয়। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ দল।

২০০৬ সালে টি-২০ ফরম্যাটে যাত্রা শুরুর পর চলতি সিরিজের আগে ১৪৪ ম্যাচ খেলে টাইগারদের জয় ছিল কেবল ৪৯ ম্যাচে। চলতি সিরিজের আগে ইংল্যান্ডের সঙ্গে একবারের মোকাবিলায় (২০১৫ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ) পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ দল। এবারের সিরিজে টানা দুই ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের হিসাবটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে এলো টাইগাররা।

প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ডের কাছে ওডিআই সিরিজ খোয়ানো বাংলাদেশ দল চট্টগ্রামে গিয়ে কোন যাদুমন্ত্রে জেগে উঠেছিল, তার খবর পাওয়া যাবে না কোনোদিনই। কিন্তু তৃতীয় ওডিআইতে দাপুটে জয়ের পর বিশ্চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে টানা দুটো টি-২০ জয় নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেটে নবীনদের উঠে আসার জোরালো বার্তাই ঘোষণা করেছে।

গতকালকের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া ইংল্যান্ড দলকে মাত্র ১১৭ রানে আটকে দিয়ে বোলাররা নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকমতই সেরে রেখেছিলেন। বিশেষ করে অনেকদিন ধরেই যেকোন ফরম্যাটে আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (১৩ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট) করার পাশাপাশি রান তাড়া করতে নামা বাংলাদেশ দলের উইকেট হারাতে থাকার সময়ে ১৬ বলে দুই ছক্কায় ২০ রানের ইনিংস খেলে শান্ত-তাসকিনের জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছেন।

ইতিহাস গড়া জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। এমন সমীকরণের সামনে ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন ক্রিস জর্ডান। এই পেসারের প্রথম বলটাই সীমানার দড়ি পার করে সমীকরণ সহজ করেন শান্ত। একই ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বল দুটোকে সীমানা পার করে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন তাসকিন। সব ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

অথচ জয়ের জন্য সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জুড়ে ব্যর্থ লিটন গতকালও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-২০ সিরিজেও ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনি। কিছুতেই যেন খোলস ছেড়ে বের হতে পারছেন না এই ওপেনার।

লিটনের বিদায়ের পর টেকেনি আট বছর পর চলতি সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা রনি তালুকদার (৯)। উইকেটে থিতু হয়েও জোফরা আর্চারের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।

মাত্র ২৭ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার ফেরার পর ঈষান কোনে জমা হওয়া কালো মেঘ কাটানোর কাজটা করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দুই তরুণের সাবলীল ব্যাটিংয়ে দশম ওভারে ৫০ রানের কোটা স্পর্শ করে বাংলাদেশ। এরপরই থেমে গেছেন হৃদয় (১৭), শিকার হয়েছেন ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত স্পিনার রেহান আহমেদের।

এরপর মিরাজ-শান্তর ৪১ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। মিরাজ (২০) সাজঘরে ফেরার পর সাকিব (০) ও আফিফ (২) ক্রিজে আসা যাওয়া করলে আবারও ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। তবে শান্ত নিজের নামের মতই একটা প্রান্ত আগলে রেখেছেন ধীর-স্থিরভাবে। এই টপ-অর্ডার ব্যাটারের অপরাজিত ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

এর আগে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা দুই ওপেনার ডেভিড মালান ও ফিল সল্টের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল। তবে তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন আহমেদ। ডেভিড মালানকে (৫) ফিরিয়ে প্রথম আঘাতটা করেন এই পেসার। মালানকে হারালেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন ফিল সল্ট। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন মঈন আলি। বল হাতে নিয়েই টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ফিল সল্টের (২৫) ফিরতি ক্যাচ নিলে পরের দিকের ব্যাটাররা আর নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। বিগ হিট করার ইচ্ছায় পপিং ক্রিজ থেকে অনেকটাই সরে গিয়েছিলেন সল্ট। তাকে সরে যেতে দেখে অফ স্টাম্পের ওপর বল রেখেছিলেন সাকিব। সেই বলে টার্নের সঙ্গে ছিল বাউন্স। সাকিবের গতি ও টার্নের পরীক্ষায় ফেল করেন ইংলিশদের ডান-হাতি এই ওপেনার। ফেরার আগে সল্ট ১৯ বলের ইনিংসে তিন চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছিলেন একটি ছক্কা।

ধারাবাহিকভাবে ওপেনিংয়ে খেলা জস বাটলার (৪) গতকাল ব্যাটিং অর্ডার বদলে চার নম্বরে নেমেও টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাসান মাহমুদের ইয়র্কারে কাটা পড়েছেন। আগের ম্যাচে একই বোলারের বলে দিয়েছিলেন ক্যাচ, এবার হারালেন স্ট্যাম্প। হাসানের স্বপ্নের মতো ডেলিভারির কোন জবাব ছিল না ইংলিশ অধিনায়কের কাছে।

সল্ট,বাটলারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার দায়িত্বটা ছিল মঈন আলির (১৫)। তিনি পাল্টা আক্রমণ করতে গিয়ে দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে মিরাজের বলে সুইপ করে ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন ডিপ-মিডউইকেটে।

৫৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে স্যাম কারান এবং বেন ডাকেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু মিরাজের দ্বিতীয় উইকেট হিসাবে ফিরেছেন স্যাম কারান (১২), একই ওভারে রান আউটের শিকার হয়েছেন ক্রিস ওকস (০)। মিরাজের করা ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে প্রান্ত বদল করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর নিচের সারির ব্যাটাররাও সুবিধা করতে পারেননি। যার ফলে বেশি দূর এগুয়নি তাদের ইনিংস। শেষদিকে অভিষিক্ত রেহান আহমেদের ব্যাট থেকে ১১ রান আসলে ২০ ওভার শেষে ১১৭ রান তুলে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।

আগামী ১৪ মার্চ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।