আওয়ামী লীগ অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাও ভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশ সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতিমধ্যে বিএনপির ১৮১ জন নেতাকর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনায় জড়িত মূল হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই হোতারা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের দেখতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তের আগেই বলে দিলেন, বিএনপি জড়িত। দোষ অন্যের ওপর চাপানো আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল। গণতন্ত্রহীনতা, জবাবদিহি না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। যেকোন ঘটনায় উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। চলমান রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত ৩ মার্চ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, হামলা, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এ ছাড়া পুলিশ-সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বিএনপি একটি কমিটি করে। কমিটির সদস্যরা ৮ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। লুটতরাজ, হত্যাকারীদের লজ্জাবোধ নেই। তারা মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ভুক্তভোগীদের সামনে হাজির হয়। যখন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রয়োজন ছিল, তখন প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তচিৎকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বোধোদয় হয়নি।
দেশে এখন ‘মাস্তানতন্ত্র’ চলছে বলে দাবি করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, জবাবদিহি নেই। যারা অপরাধ করেছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ঘটনার সঙ্গে বিএনপি জড়িত। এটি তামাশা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি অবহেলার প্রমাণ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে কূল পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, এত মামলা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দৌড়ের ওপরে। তারা কেন এ ঘটনায় যুক্ত হবেন! বিএনপির নেতাকর্মীরা আদালতে হাজিরা দিতে দিতে হয়রান। অথচ প্রধানমন্ত্রী একের পর এক নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করে যাচ্ছেন।
বর্তমান সরকারকে ‘দুষ্টের পালনকারী’ হিসেবে অভিহিত করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, মাদক কারবারি, ক্যাসিনো-কান্ডের হোতাদের কোন শাস্তি হয়নি; বরং তাদের মুক্ত করা হয়েছে, যেন বিএনপির ওপর হামলা চালাতে পারে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ভুক্তভোগীরা হামলাকারীদের নাম বলেছেন। কিন্তু মামলায় তাদের নাম নেই।
বিএনপির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও পঞ্চগড় বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩ , ২৮ ফাল্গুন ১৪২৯, ২০ শবান ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
আওয়ামী লীগ অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে ঢালাও ভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশ সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতিমধ্যে বিএনপির ১৮১ জন নেতাকর্মী-সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনায় জড়িত মূল হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই হোতারা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের দেখতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তের আগেই বলে দিলেন, বিএনপি জড়িত। দোষ অন্যের ওপর চাপানো আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে তার দায়ও বিএনপির ওপর চাপিয়েছিল। গণতন্ত্রহীনতা, জবাবদিহি না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। যেকোন ঘটনায় উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া আওয়ামী লীগের পুরোনো অভ্যাস। চলমান রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত ৩ মার্চ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, হামলা, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এ ছাড়া পুলিশ-সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বিএনপি একটি কমিটি করে। কমিটির সদস্যরা ৮ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। লুটতরাজ, হত্যাকারীদের লজ্জাবোধ নেই। তারা মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে ভুক্তভোগীদের সামনে হাজির হয়। যখন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সুরক্ষার প্রয়োজন ছিল, তখন প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তচিৎকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বোধোদয় হয়নি।
দেশে এখন ‘মাস্তানতন্ত্র’ চলছে বলে দাবি করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, জবাবদিহি নেই। যারা অপরাধ করেছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ঘটনার সঙ্গে বিএনপি জড়িত। এটি তামাশা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি অবহেলার প্রমাণ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে কূল পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, এত মামলা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দৌড়ের ওপরে। তারা কেন এ ঘটনায় যুক্ত হবেন! বিএনপির নেতাকর্মীরা আদালতে হাজিরা দিতে দিতে হয়রান। অথচ প্রধানমন্ত্রী একের পর এক নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করে যাচ্ছেন।
বর্তমান সরকারকে ‘দুষ্টের পালনকারী’ হিসেবে অভিহিত করেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, মাদক কারবারি, ক্যাসিনো-কান্ডের হোতাদের কোন শাস্তি হয়নি; বরং তাদের মুক্ত করা হয়েছে, যেন বিএনপির ওপর হামলা চালাতে পারে। পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ভুক্তভোগীরা হামলাকারীদের নাম বলেছেন। কিন্তু মামলায় তাদের নাম নেই।
বিএনপির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও পঞ্চগড় বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা উপস্থিত ছিলেন।