মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি তাদের ১০টি গাড়িতে করে ৭টি ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা সরবারহ করে। কিন্তু কোন গাড়িতেই তারা নিরাপত্তাকর্মী বা গানম্যান রাখে না। টাকা পরিবহনের সময় অবহিত করা হতো না কোন থানাকেও। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগায় ছিনতাইকারী চক্রটি। দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করা হয় মানি প্লান্টের গাড়ি। এরই ধারাবাহিকতায় ছিনতাইয়ের দিন আগাম তথ্য পেয়ে মানি প্লান্টের গাড়িটি অনুসরণ করা হয়। কোন নম্বরের গাড়িতে উত্তরা এলাকায় টাকা পাঠানো হয়েছে এটি মানি প্লান্টের কেউ ছিনতাইকারীদের জানিয়েছে এবং সামগ্রিক পরিকল্পনার সঙ্গে কোম্পানিটির একাধিক কর্মী জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে গোয়েন্দারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কিন্তু কর্মীদের কারা জড়িত সে বিষয়ে খোলাশা করা হয়নি। তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে আরও নিশ্চিত হওয়ার পর এ বিষয়ে জানানো হবে। এছাড়া মানি প্লান্টের মতো কোম্পানিগুলো নিরাপত্তা জোরদার না করলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও জঙ্গিরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দারা।
এদিকে উত্তরা থেকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে আরও ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর আগে উদ্ধার করা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাতে সব মিলিয়ে মোট ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হলো। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান। গত শনিবার রাতে ঢাকার মিরপুর, বনানী, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো সানোয়ার হাসান, ইমন ওরফে মিলন, আকাশ মাদবর, সাগর মাদবর, বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সনাই মিয়া ও এনামুল হক বাদশা। অভিযান ও টাকা উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে হারুন বলেন, প্রথমে রাজধানীর বনানী থেকে সানোয়ার হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে সানোয়ারে তথ্যানুসারে বনানী থেকে ইমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জোয়ার সাহারার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। পরে ঢাকার উত্তরা থেকে আকাশ ও সাগর নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর ১ কোটি ৭ লাখ টাকাসহ ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। ডিবির অন্য একটি দল সিলেটের সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সনাই ও এনামুল হক বাদশাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত ৮ মার্চ সিলেট যাওয়ার কথা বলে একটি হায়েস মাইক্রোবাস ভাড়া করে ছিনতাইকারীরা। গাড়ির চালক কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসলে পেছনের সিট ঠিক করার কথা বলে পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়, এরপর ওই গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্টের গাড়ি ফলো করতে ওঁৎ পেতে থাকে। ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে মানি প্লান্টের টাকা বহনকারী গাড়ি অনুসরণ করে আসছিল। তারা জানতো টাকা বহন করার ক্ষেত্রে মানি প্লান্টের কোন সিকিউরিটি ও অস্ত্র ছিল না।
মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে ছিনতাইকারী দল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্টের গাড়ি অনুসরণ শুরু করে। এভাবে ছিনতাইকারী দলের ভাড়া করা মাইক্রোবাস তুরাগের নির্জন স্থানে পৌঁছার পর দুই গাড়ির ধাক্কা লাগায়। এ অজুহাতে গাড়ি থেকে ছিনতাইকারীরা নামে ও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তারা মানি প্লান্টের গাড়ি থেকে কয়েকজনকে নামিয়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলে যায়। এরপর গাড়িতে থাকা ম্যানেজারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে টাকার ট্রাংকসহ নিজেদের হায়েস গাড়ি নিয়ে ৩০০ ফিটের নির্জন এলাকার দিকে চলে যায়।
পরে ছিনতাইকারীরা দুটি টাকার ট্রাংক ভেঙে দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি ব্যাগে টাকা ভর্তি করে। বাকি দুই ট্রাংকের টাকা দেখে তারা ভয় পেয়ে যায়। কোন ব্যাগ না থাকায় টাকা ও ট্রাংক ফেলে পালিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের ড্রাইভারের সিটের উপর একটা ব্যাগ ফেলে ও নিজেদের কাপড়চোপড় পরিবর্তন করে ফেলে চলে যায়। অবশিষ্ট ব্যাগটি মাইক্রোবাসের পেছনের সিটে থাকা ড্রাইভার সুস্থ হয়ে নিজ হেফাজতে নেয়। এছাড়া সে ট্রাংক থেকে অবশিষ্ট টাকা ভরে সে তার ভাইয়ের হেফাজতে দেয়। পরবর্তীতে ওই চালকের বাসা থেকে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার দিন মানি প্লান্টের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছিল। প্রয়োজন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ডাকা হবে। আর গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরার তুরাগ থানার দিয়াবাড়ী ১১ নম্বর সড়কে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের গাড়ি থেকে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে ৯ মার্চ রাতে মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে তুরাগ থানায় একটি মামলা করেন।
সম্পাদিত///ইকরাম
ঢাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনায় খুলনা থেকে আটক ৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা
ঢাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা লুটের ঘটনায় খুলনা নগরের সিঅ্যান্ডবি কলোনি থেকে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ঢাকার ডিবি পুলিশের একটি টিম সিঅ্যান্ডবি কলোনির টু আর- ২নং ভবনের চারতলায় মো. জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালায়।
গতকাল ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে জাহাঙ্গীরের ভগ্নিপতি আকাশ এবং অন্য ২ নারীকে আটকের পরপরই তাদেরকে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ওসি বলেন, আমরা তাদের শুধু অভিযানে সহায়তা করেছি। তবে তারা কী উদ্ধার করেছে, এটা আমরা বলতে পারব না। ঢাকা থেকে জানানো হবে।
অভিযানে থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবির এডিসি মো. রাশেদ সাংবাদিকদের জানান, আটক আকাশকে নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ বিযয়ে পরে জানানো হবে।
অভিযানের পর জাহাঙ্গীরের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, দরজা ভেতর থেকে আটকানো। বারবার ডাকাডাকির পরও জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী দরজা খোলেননি। তারা কথা বলতে রাজি হননি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিঅ্যান্ডবি কলোনি মূলত সরকারি কর্মচারীদের আবাসস্থল। জাহাঙ্গীর সরকারি কর্মচারী নন। তিনি অন্য একজনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে জরাজীর্ণ ওই বাসায় থাকেন।
প্রসঙ্গত এর আগে গত রাতে ঢাকা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সাভার ইপিজেড এলাকার এটিএম বুথগুলোতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের প্রায় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনতাই হয়।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা পরিবহনের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা সংস্থা মানিপ্ল্যান্ট লিংক (প্রাইভেট) লিমিটেডের একটি গাড়িতে করে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩ , ২৮ ফাল্গুন ১৪২৯, ২০ শবান ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি তাদের ১০টি গাড়িতে করে ৭টি ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা সরবারহ করে। কিন্তু কোন গাড়িতেই তারা নিরাপত্তাকর্মী বা গানম্যান রাখে না। টাকা পরিবহনের সময় অবহিত করা হতো না কোন থানাকেও। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগায় ছিনতাইকারী চক্রটি। দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করা হয় মানি প্লান্টের গাড়ি। এরই ধারাবাহিকতায় ছিনতাইয়ের দিন আগাম তথ্য পেয়ে মানি প্লান্টের গাড়িটি অনুসরণ করা হয়। কোন নম্বরের গাড়িতে উত্তরা এলাকায় টাকা পাঠানো হয়েছে এটি মানি প্লান্টের কেউ ছিনতাইকারীদের জানিয়েছে এবং সামগ্রিক পরিকল্পনার সঙ্গে কোম্পানিটির একাধিক কর্মী জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে গোয়েন্দারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কিন্তু কর্মীদের কারা জড়িত সে বিষয়ে খোলাশা করা হয়নি। তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে আরও নিশ্চিত হওয়ার পর এ বিষয়ে জানানো হবে। এছাড়া মানি প্লান্টের মতো কোম্পানিগুলো নিরাপত্তা জোরদার না করলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও জঙ্গিরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দারা।
এদিকে উত্তরা থেকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে আরও ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর আগে উদ্ধার করা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাতে সব মিলিয়ে মোট ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হলো। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান। গত শনিবার রাতে ঢাকার মিরপুর, বনানী, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো সানোয়ার হাসান, ইমন ওরফে মিলন, আকাশ মাদবর, সাগর মাদবর, বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সনাই মিয়া ও এনামুল হক বাদশা। অভিযান ও টাকা উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে হারুন বলেন, প্রথমে রাজধানীর বনানী থেকে সানোয়ার হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে সানোয়ারে তথ্যানুসারে বনানী থেকে ইমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জোয়ার সাহারার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। পরে ঢাকার উত্তরা থেকে আকাশ ও সাগর নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর ১ কোটি ৭ লাখ টাকাসহ ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। ডিবির অন্য একটি দল সিলেটের সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সনাই ও এনামুল হক বাদশাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত ৮ মার্চ সিলেট যাওয়ার কথা বলে একটি হায়েস মাইক্রোবাস ভাড়া করে ছিনতাইকারীরা। গাড়ির চালক কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসলে পেছনের সিট ঠিক করার কথা বলে পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়, এরপর ওই গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্টের গাড়ি ফলো করতে ওঁৎ পেতে থাকে। ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে মানি প্লান্টের টাকা বহনকারী গাড়ি অনুসরণ করে আসছিল। তারা জানতো টাকা বহন করার ক্ষেত্রে মানি প্লান্টের কোন সিকিউরিটি ও অস্ত্র ছিল না।
মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে ছিনতাইকারী দল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্টের গাড়ি অনুসরণ শুরু করে। এভাবে ছিনতাইকারী দলের ভাড়া করা মাইক্রোবাস তুরাগের নির্জন স্থানে পৌঁছার পর দুই গাড়ির ধাক্কা লাগায়। এ অজুহাতে গাড়ি থেকে ছিনতাইকারীরা নামে ও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তারা মানি প্লান্টের গাড়ি থেকে কয়েকজনকে নামিয়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলে যায়। এরপর গাড়িতে থাকা ম্যানেজারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে টাকার ট্রাংকসহ নিজেদের হায়েস গাড়ি নিয়ে ৩০০ ফিটের নির্জন এলাকার দিকে চলে যায়।
পরে ছিনতাইকারীরা দুটি টাকার ট্রাংক ভেঙে দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি ব্যাগে টাকা ভর্তি করে। বাকি দুই ট্রাংকের টাকা দেখে তারা ভয় পেয়ে যায়। কোন ব্যাগ না থাকায় টাকা ও ট্রাংক ফেলে পালিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের ড্রাইভারের সিটের উপর একটা ব্যাগ ফেলে ও নিজেদের কাপড়চোপড় পরিবর্তন করে ফেলে চলে যায়। অবশিষ্ট ব্যাগটি মাইক্রোবাসের পেছনের সিটে থাকা ড্রাইভার সুস্থ হয়ে নিজ হেফাজতে নেয়। এছাড়া সে ট্রাংক থেকে অবশিষ্ট টাকা ভরে সে তার ভাইয়ের হেফাজতে দেয়। পরবর্তীতে ওই চালকের বাসা থেকে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার দিন মানি প্লান্টের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছিল। প্রয়োজন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ডাকা হবে। আর গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরার তুরাগ থানার দিয়াবাড়ী ১১ নম্বর সড়কে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের গাড়ি থেকে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে ৯ মার্চ রাতে মানি প্লান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে তুরাগ থানায় একটি মামলা করেন।
সম্পাদিত///ইকরাম
ঢাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনায় খুলনা থেকে আটক ৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা
ঢাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা লুটের ঘটনায় খুলনা নগরের সিঅ্যান্ডবি কলোনি থেকে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ঢাকার ডিবি পুলিশের একটি টিম সিঅ্যান্ডবি কলোনির টু আর- ২নং ভবনের চারতলায় মো. জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালায়।
গতকাল ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে জাহাঙ্গীরের ভগ্নিপতি আকাশ এবং অন্য ২ নারীকে আটকের পরপরই তাদেরকে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ওসি বলেন, আমরা তাদের শুধু অভিযানে সহায়তা করেছি। তবে তারা কী উদ্ধার করেছে, এটা আমরা বলতে পারব না। ঢাকা থেকে জানানো হবে।
অভিযানে থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবির এডিসি মো. রাশেদ সাংবাদিকদের জানান, আটক আকাশকে নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ বিযয়ে পরে জানানো হবে।
অভিযানের পর জাহাঙ্গীরের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, দরজা ভেতর থেকে আটকানো। বারবার ডাকাডাকির পরও জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী দরজা খোলেননি। তারা কথা বলতে রাজি হননি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিঅ্যান্ডবি কলোনি মূলত সরকারি কর্মচারীদের আবাসস্থল। জাহাঙ্গীর সরকারি কর্মচারী নন। তিনি অন্য একজনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে জরাজীর্ণ ওই বাসায় থাকেন।
প্রসঙ্গত এর আগে গত রাতে ঢাকা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সাভার ইপিজেড এলাকার এটিএম বুথগুলোতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের প্রায় ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনতাই হয়।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা পরিবহনের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা সংস্থা মানিপ্ল্যান্ট লিংক (প্রাইভেট) লিমিটেডের একটি গাড়িতে করে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।