অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিন

অগ্নি দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক ঘটনা। দেশের অধিকাংশ মানুষ কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসছে। ফলে গ্রামের তুলনায় শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। আর শহরের মানুষ বাসায় রান্নার জন্য গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ভয়াবহ দুর্ঘটনার মধ্যে গ্যাস সংযোগ থেকে অগ্নিকান্ড অন্যতম। অগ্নিকান্ড হলে অনেক মানুষ নিহত ও আহত হয়। কারণ বহুতল ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে বাইরে আসতে পারে না। অনেকে আবার ১০-১২ তলা ভবন থেকে নিচে লাফ দিয়ে আরো ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।

বৈদ্যুতিক, গ্যাস এবং মাটির চুলা ইত্যাদি অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাছাড়া অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যান্য কারণ বিড়ি-সিগারেটের আগুন। আজকাল পাবলিক প্লেসে ধূমপানের পরিমাণ অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ধূমপায়ী যত্রতত্র সিগারেট ফেলে। ফলে অবিশিষ্ট সিগারেট থেকে অগ্নিকান্ডের উৎপত্তি হয়। মোট দুর্ঘটনার ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঘটেছে এই কারণে। মূলত অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে প্রতি বছর অগ্নিদুর্ঘটনায় অগণিত মানুষ ও প্রাণী মারা যাচ্ছে ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। শর্টসার্কিট, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দাহ্য কেমিক্যালের গোডাউনে অগ্নিদুর্ঘটনা, রান্নাঘরের ত্রুটিপূর্ণ চুলা ও বিড়ি-সিগারেটের ফেলে দেয়া জ্বলন্ত অংশ থেকেই ঘটছে ছোট থেকে বড় ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা। আর অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা সবচেয়ে বেশি দরকার।

বিশেষ করে অনেক গুদামে অগ্নিদুর্ঘটনা বেশি ঘটে। তাই জরুরিভিত্তিতে আবাসিক এলাকা থেকে গুদাম বা কারখানা সরিয়ে নেয়া, অনুমোদনহীন কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া, রাসায়নিক দ্রব্যের মজুত, বাজারজাতকরণ এবং বিক্রির জন্য লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া জোরদার করা, ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩’ ও ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করা। আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক দ্রব্য বা বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ মজুতকরণ বা বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ঘরবাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তারের গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে এবং কিছুদিন পর পর সংযোগ চেক করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের অবকাঠামো, জনবল, প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের উন্নয়ন করতে হবে। জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ বিষয়ে জনগণকে জানাতে হবে। তাহলে অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা যদি কখনো ঘটে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।

আবদুল্লাহ আলমামুন

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সোমবার, ১৩ মার্চ ২০২৩ , ২৮ ফাল্গুন ১৪২৯, ২০ শবান ১৪৪৪

অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিন

অগ্নি দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক ঘটনা। দেশের অধিকাংশ মানুষ কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসছে। ফলে গ্রামের তুলনায় শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। আর শহরের মানুষ বাসায় রান্নার জন্য গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে। বাংলাদেশের ভয়াবহ দুর্ঘটনার মধ্যে গ্যাস সংযোগ থেকে অগ্নিকান্ড অন্যতম। অগ্নিকান্ড হলে অনেক মানুষ নিহত ও আহত হয়। কারণ বহুতল ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে বাইরে আসতে পারে না। অনেকে আবার ১০-১২ তলা ভবন থেকে নিচে লাফ দিয়ে আরো ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।

বৈদ্যুতিক, গ্যাস এবং মাটির চুলা ইত্যাদি অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তাছাড়া অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যান্য কারণ বিড়ি-সিগারেটের আগুন। আজকাল পাবলিক প্লেসে ধূমপানের পরিমাণ অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ধূমপায়ী যত্রতত্র সিগারেট ফেলে। ফলে অবিশিষ্ট সিগারেট থেকে অগ্নিকান্ডের উৎপত্তি হয়। মোট দুর্ঘটনার ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঘটেছে এই কারণে। মূলত অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে প্রতি বছর অগ্নিদুর্ঘটনায় অগণিত মানুষ ও প্রাণী মারা যাচ্ছে ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। শর্টসার্কিট, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দাহ্য কেমিক্যালের গোডাউনে অগ্নিদুর্ঘটনা, রান্নাঘরের ত্রুটিপূর্ণ চুলা ও বিড়ি-সিগারেটের ফেলে দেয়া জ্বলন্ত অংশ থেকেই ঘটছে ছোট থেকে বড় ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা। আর অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা সবচেয়ে বেশি দরকার।

বিশেষ করে অনেক গুদামে অগ্নিদুর্ঘটনা বেশি ঘটে। তাই জরুরিভিত্তিতে আবাসিক এলাকা থেকে গুদাম বা কারখানা সরিয়ে নেয়া, অনুমোদনহীন কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া, রাসায়নিক দ্রব্যের মজুত, বাজারজাতকরণ এবং বিক্রির জন্য লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া জোরদার করা, ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩’ ও ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করা। আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক দ্রব্য বা বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ মজুতকরণ বা বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ঘরবাড়িতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তারের গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে এবং কিছুদিন পর পর সংযোগ চেক করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের অবকাঠামো, জনবল, প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের উন্নয়ন করতে হবে। জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ বিষয়ে জনগণকে জানাতে হবে। তাহলে অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা যদি কখনো ঘটে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।

আবদুল্লাহ আলমামুন

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়