দেশের অন্য কোথাও বিদ্যুৎ-গ্যাস থাকুক কিংবা না থাকুক, অর্থনৈতিক অঞ্চলে তা সবসময় নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বড় বড় শিল্পকারখানায় বিনিয়োগ আসছে। তবে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও সাপ্লাইনে চেইনে এখন বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। উন্নতি করতে হবে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকের।
গতকাল এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের শেষ দিন ‘ইনভেস্টিং ইন ইকোনমিক জোনস : প্রগ্রেস অ্যান্ড প্রায়োরিটি অপরচুনিটিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন বলেন, ‘দেশের কোথায় কী হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইপিজেএডকে অন্য অঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। ব্যাক ওয়ার্ড লিংকেজ প্রোডাক্টে বিনিয়োগ আনতে হবে।’
ডান অ্যান্ড ব্রাডস্ট্রিট সামের সিইও রাজেশ মিরচান্দানি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। যদিও এই সূচক পরিমাপের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি এনামুল হক বলেন, ‘ফরেন কারেন্সি রেগুলারেটরি অনেক দীর্ঘমেয়াদি। দেশের অধিকাংশ ফাইনান্সিয়াল প্রোগ্রাম সংস্কার করা হয়েছে। ক্যাশলেস সোসাইটি এরমধ্যে অন্যতম একটি যা আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন সোসাইটির সিইও নকিব খান বলেন, ‘১০ লাখ কর্মসংস্থানের তৈরি হবে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলে। আমাদের জন্য সাপ্লাই চেইন এখন বড় চ্যালেঞ্জের। এ খাতে আমাদের অনেক বিনিয়োগ করতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘ইকোনমিক জোন আছে। কিন্তু এর আউটসাইটে ডেভেলপ করতে হবে। বিমানবন্দরের উন্নতি করতে হবে। ওয়ার হাউজের নিয়ম অনেক পুরোনো। কাস্টমস এবং ওয়ারহাউজের আইন অন্যান্য দেশের মতো সংস্কার করে আধুনিক করতে হবে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। রেল বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কার্গো পরিবহনে রেলকে কাজে লাগাতে হবে। লাস্ট ১৫ বছর ধরে এয়ারপোর্টে প্রফেশনাল স্ক্যানার নেই। এটা নিয়ে আমরা বলে আসছি। কিন্তু তারপরও কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। এটা নিয়ে কাজ করা দরকার।’
আরেকটি সেমিনারে সংসদ সদস?্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামী ৫০ বছরে কী করবে, এখনই তা ভাবার সময়। বিদেশি উদ্যোক্তারা এখানকার নীতিমালা দেখতে চায়, কারণ তাদের চয়েজ রয়েছে। তারা অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় যদি এখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি হয়, তাহলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। তা না হলে অন্য দেশে চলে যাবে। আমরা আমাদের উন্নয়নের পর্যালোচনা করতে পারি। নতুন করে আবার কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করবো।’
রিসাইকেলিং অর্থাৎ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে রিসাইকেলিংয়ের অবস্থা কি হবে তা নিয়ে চিন্তা করার এখনই সময়। বাংলাদেশ বিশ্ব কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে চায়। তাই উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখনই সময়, অন্যরা বিনিয়োগের আগে আপনারা চলে আসুন। এখানে বিনিয়োগ করলে উইনিং উইনিং সিচুয়েশনে থাকবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইইউ রাষ্ট্রদূত সট চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘ডাবিং চক্রাকার অর্থনীতিতে জোর দিচ্ছে গোটা বিশ্ব। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, শুধু বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজারই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক বাজার। আলোচনায় ইইউ প্রতিনিধি জানান, কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনাসহ পরিবেশ রক্ষার শর্ত পূরণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
আরেক সেমিনারে দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের রাস্তায় ইলেকট্রনিক কার ও বাইক চলবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘অটোমোবাইল ও হাইটেক শিল্পকে এগিয়ে নিতে পোশাক খাতের মতো সরকারকে পলিসি সুবিধা দিতে হবে। বাজারে ইলেকট্রিক কার ও বাইক চলে এসেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সরকারের নীতিমালা আমরা পেয়ে যাব। তারপর থেকে ঢাকার রাস্তায় ইলেকট্রিক কার ও বাইক চলবে।’
অটোমোবাইল ও হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শিল্পে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে দেশি ও বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে পারবেন। দেশের অটোমোবাইল ও হাইটেক শিল্পকে এগিয়ে নিতে পোশাক খাতের মতো সরকারকে পলিসি সুবিধা দিতে হবে। কারণ সরকারের পলিসি সুবিধা ছাড়া কোন শিল্পেই উন্নতি হতে পারে না।’
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
দেশের অন্য কোথাও বিদ্যুৎ-গ্যাস থাকুক কিংবা না থাকুক, অর্থনৈতিক অঞ্চলে তা সবসময় নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বড় বড় শিল্পকারখানায় বিনিয়োগ আসছে। তবে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও সাপ্লাইনে চেইনে এখন বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। উন্নতি করতে হবে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকের।
গতকাল এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের শেষ দিন ‘ইনভেস্টিং ইন ইকোনমিক জোনস : প্রগ্রেস অ্যান্ড প্রায়োরিটি অপরচুনিটিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন বলেন, ‘দেশের কোথায় কী হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইপিজেএডকে অন্য অঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। ব্যাক ওয়ার্ড লিংকেজ প্রোডাক্টে বিনিয়োগ আনতে হবে।’
ডান অ্যান্ড ব্রাডস্ট্রিট সামের সিইও রাজেশ মিরচান্দানি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। যদিও এই সূচক পরিমাপের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি এনামুল হক বলেন, ‘ফরেন কারেন্সি রেগুলারেটরি অনেক দীর্ঘমেয়াদি। দেশের অধিকাংশ ফাইনান্সিয়াল প্রোগ্রাম সংস্কার করা হয়েছে। ক্যাশলেস সোসাইটি এরমধ্যে অন্যতম একটি যা আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন সোসাইটির সিইও নকিব খান বলেন, ‘১০ লাখ কর্মসংস্থানের তৈরি হবে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলে। আমাদের জন্য সাপ্লাই চেইন এখন বড় চ্যালেঞ্জের। এ খাতে আমাদের অনেক বিনিয়োগ করতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘ইকোনমিক জোন আছে। কিন্তু এর আউটসাইটে ডেভেলপ করতে হবে। বিমানবন্দরের উন্নতি করতে হবে। ওয়ার হাউজের নিয়ম অনেক পুরোনো। কাস্টমস এবং ওয়ারহাউজের আইন অন্যান্য দেশের মতো সংস্কার করে আধুনিক করতে হবে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। রেল বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কার্গো পরিবহনে রেলকে কাজে লাগাতে হবে। লাস্ট ১৫ বছর ধরে এয়ারপোর্টে প্রফেশনাল স্ক্যানার নেই। এটা নিয়ে আমরা বলে আসছি। কিন্তু তারপরও কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। এটা নিয়ে কাজ করা দরকার।’
আরেকটি সেমিনারে সংসদ সদস?্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামী ৫০ বছরে কী করবে, এখনই তা ভাবার সময়। বিদেশি উদ্যোক্তারা এখানকার নীতিমালা দেখতে চায়, কারণ তাদের চয়েজ রয়েছে। তারা অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় যদি এখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি হয়, তাহলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। তা না হলে অন্য দেশে চলে যাবে। আমরা আমাদের উন্নয়নের পর্যালোচনা করতে পারি। নতুন করে আবার কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করবো।’
রিসাইকেলিং অর্থাৎ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে রিসাইকেলিংয়ের অবস্থা কি হবে তা নিয়ে চিন্তা করার এখনই সময়। বাংলাদেশ বিশ্ব কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে চায়। তাই উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখনই সময়, অন্যরা বিনিয়োগের আগে আপনারা চলে আসুন। এখানে বিনিয়োগ করলে উইনিং উইনিং সিচুয়েশনে থাকবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইইউ রাষ্ট্রদূত সট চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘ডাবিং চক্রাকার অর্থনীতিতে জোর দিচ্ছে গোটা বিশ্ব। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, শুধু বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজারই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক বাজার। আলোচনায় ইইউ প্রতিনিধি জানান, কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনাসহ পরিবেশ রক্ষার শর্ত পূরণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
আরেক সেমিনারে দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের রাস্তায় ইলেকট্রনিক কার ও বাইক চলবে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘অটোমোবাইল ও হাইটেক শিল্পকে এগিয়ে নিতে পোশাক খাতের মতো সরকারকে পলিসি সুবিধা দিতে হবে। বাজারে ইলেকট্রিক কার ও বাইক চলে এসেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সরকারের নীতিমালা আমরা পেয়ে যাব। তারপর থেকে ঢাকার রাস্তায় ইলেকট্রিক কার ও বাইক চলবে।’
অটোমোবাইল ও হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শিল্পে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে দেশি ও বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে পারবেন। দেশের অটোমোবাইল ও হাইটেক শিল্পকে এগিয়ে নিতে পোশাক খাতের মতো সরকারকে পলিসি সুবিধা দিতে হবে। কারণ সরকারের পলিসি সুবিধা ছাড়া কোন শিল্পেই উন্নতি হতে পারে না।’