এমন কোন চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে

সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে কোন বিদেশি চাপেই সরকার টলবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এমন কোন চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ। কে চাপ দিল না দিল এতে আমার কিছু আসে যায় না।’

জনগণের স্বার্থে কাজ করেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যা বলবে তাই করব। বিদেশি চাপ আমাকে কিছুই করতে পারবে না। আর ওপর আল্লাহ আছে এবং আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে।’ তিনি আগামী নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোন ধরনের সংলাপে না বসারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। কাতারে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে গত ৪ থেকে ৮ মার্চ এ সফর করেন।

বিদেশি দূতাবাসে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে, এসব বিষয়ে কোন চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছে করুক। বিদেশি দূতাবাসে যাচ্ছে, বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে এনে বৈঠক করছে, বহির্বিশ্বে চিঠি পাঠাচ্ছে।’

এসব অভিযোগে কিছু যায় আসে নাÑ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত ফোন এসেছে, কত হুমকি এসেছে, আমাদের উন্নয়ন থেমে গেছে? আমাদের অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা এসেছে, তাই বলে আমাদের উন্নয়ন কাজ থেমে গেছে?’

ইভিএমে ভোট কি না সিন্ধান্ত ইসির

নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী পরিমাণ কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনই নেবে।

প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন, ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা তুলে ধরেন।

আগামী নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ হওয়া দরকার মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ সরকারই নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন করে দিয়েছে। স্থিতিশীলতার জন্য যেটা দরকার নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু ও অবাধ হয়।

নির্বাচন কমিশন সবসময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু সেখান থেকেও তাদের স্বাধীন করে দিয়েছি, বাজেটে তাদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়, সেখান থেকে তারা খরচ করতে পারবে। তাদের আর্থিক যে স্বাতন্ত্রতা সেটা কিন্তু আমরা দিয়ে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘ইভিএম করতে চেয়েছিলাম, কারণ সবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দেবে, খুব দ্রুত রেজাল্ট পাবে, অনেকেরই আপত্তি, যখন সবাই এত আপত্তি, তখন ঠিক আছে, এটা নির্বাচন কমিশনের ওপরে, যতটুকু তারা পারে করবে।’

ইভিএমে ভোট হলে ভালো হতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অন্তত মানুষ তার ভোটের অধিকারটা প্রয়োগ করতে পারত, একটা আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারত। সেটা নিয়ে যেহেতু এত আলোচনা-সমালোচনা, এটা আমরা আমাদের নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’

অধ্যাপক ইউনূস প্রসঙ্গ

নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে সম্প্রতি ৪০ জন বিশ্বনেতা একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন ব্যক্তি একটি ব্যাংকের এমডি পদ হারিয়েছেন। তার বয়স হয়ে গেছে ৭০। নীতিমালা অনুযায়ী তিনি ওই পদে থাকতে পারেন না। এজন্য কত দেনদরবার, কত জায়গা থেকে ফোন, কতকিছু। আমেরিকা থেকে ফোন।’

৪০ জনের নাম খয়রাত করে বিজ্ঞাপন কেন এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি কিন্তু ঠিক বিবৃতি না। এটি একটি বিজ্ঞাপন। আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে। আমার প্রশ্নটা হলো- নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তির জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়।’

দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেয়- আমাদের দেশে শ্রম আদালত আছে; সেটা দেখে। আইন অনুযায়ী সব চলবে। এই ক্ষেত্রে তো আমার কোন কিছু করার নাই সরকারপ্রধান হিসেবে। কাজেই আমাকেই বা কেন এখানে বলা হলো? এর বাইরে আমি আর কী বলব! পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি। খালি এইটুকু সবাইকে স্মরণ করে দিলাম।’

বিএনপির সঙ্গে কিসের সংলাপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কোন প্রস্তুতি আছে কি না- এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংলাপ কার সঙ্গে করবো। ২০১৮-এর নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, তার রেজাল্টটা কী। নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করে না।’

বিএনপি সংলাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল-এমন ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘৩০০ সিটে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে তারপর নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এদের সঙ্গে কীসের কথা বলবো, কীসের বৈঠক করবো।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা- তাদের সঙ্গে বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। শুধু তাই নয় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম দেখতে বা একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে, আমাকে কীভাবে অপমানটা করলো, আমার গাড়ি ওই বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দিল না, বড় গেট বন্ধ। টেলিফোন নিয়ে সময় নেয়া হয়েছিল, আমি এইসময় আসব, তারা কী করল বড় গেট বন্ধ করে দিল, পরে ছোট গেটে গেলাম, আমার গাড়ি যাওয়ার পর সেটাও বন্ধ করে দিল। এত অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক।’

বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের সঙ্গে কেউ বৈঠক করতে পারবে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার পরিষ্কার কথা, যারা এইটুকু ভদ্রতা জানে না তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে। যেটুকু সহ্য করেছি, দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে, নিজের স্বার্থে না।’

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ভাই এসে, বোন এসে আমার কাছে আকুতি করল। এরপর আমি তার সাজাটা স্থগিত করে তার বাসায় থাকা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট। এত অপমানের পর তারা যে সহানুভূতি পেয়েছে, সেটা শুধু আমার কারণে।’

বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন?’

আগামী নির্বাচনেও জনগণ যেন ‘স্বাধীনভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে’ ভোট দিতে পারে সেই প্রস্তুতি সরকারের আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ।’

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বগুড়ায় খবর নিলাম, সেখানকার মানুষেরও আমাদের সরকারের প্রতি একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার দল করে না, অন্য দল করে, তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি আজ এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষের গ্রামের মানুষের একটাই কথা, এই সরকারেরই থাকা উচিত।’

এটাকে সাধারণ মানুষের ‘আকাক্সক্ষা’-মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর কী হবে দেখা যাক। ইলেকশন এটা জনগণের ইচ্ছা। জনগণ ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। এ নিয়ে আফসোস নেই।’

অন্য এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দশ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লো, এটা আবার রাজনৈতিক হয় কী করে? এই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেই কিন্তু তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাও। তারপরও তারা যদি এটাকে রাজনৈতিক বলে তাহলে আমার মনে হয় জনগণই বিচার করবে। এটা জনগণের সঙ্গে মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু না। অস্ত্র চোরাকারবারি ব্যবসাটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর সেটাকে তারা রাজনীতি হিসেবে দেখাতে চায়।

খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের ‘লুটপাট-দুর্নীতির’ কথা আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পাচার করা ৪০ কোটি টাকা কিন্তু বাংলাদেশ উদ্ধার করে ফেরত এনেছে। এ কথাটা বোধহয় সবার মনে রাখা উচিত। সেটাকেও তারা রাজনৈতিক বলবে?’

দেশকে অস্থিতিশীল করা চেষ্টা

দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেটা মোকাবিলা করবে আমাদের জনগণ। দেশ এগিয়ে যাবে।’

এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এটাকে কিছু করতে পারব না।’

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা

আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন আর পরনির্ভরশীল নই। আমরা নিজেরাই এখন উৎপাদন করছি। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। আশা করি রমজানে কোন অসুবিধা হবে না।

রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে কেউ খাদ্যপণ্য মজুদ করে পচিয়ে ফেললে আমাদের তো কিছু করার থাকবে না। সেদিকে সাংবাদিকদেরও একটু নজর রাখতে হবে।

কোভিড মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্য নিয়ে সমস্যাটা হচ্ছে, দাম বেশি কমালে উৎপাদকদের লোকসান হবে, আবার দাম বেশি বাড়ালে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। এ জায়গায় সবসময় ব্যালেন্স করতে হয়।’

এলডিসি প্রসঙ্গ

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার ব্যাপারে অনেকের কাছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে। অনেক সময় এই সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করে না। যেহেতু করোনা দেখা দিল, তখন একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনেকের ছিল যে এটা এখনই গ্রহণ করা সম্ভব কি না। আমি কিন্তু বলেছি, আমরা পারব। যে কারণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটা অনুমোদিত হয়ে গেছে। কাজেই আমরা সেই সুযোগ নিয়েছি।’

নতুন রাষ্ট্রপতি পোড় খাওয়া মানুষ

নতুন রাষ্ট্রপতি (মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি একজন পোড় খাওয়া মানুষ এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। পঁচাত্তর-পরবর্তী জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেপ্তার করে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী।

নতুন রাষ্ট্রপতি ‘জুডিশিয়াল সার্ভিসেও’ চাকরি করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির আমলে বাধ্য হয়ে চাকরি ছাড়তেও হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার মাঝে ওই দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, দেশপ্রেম ও ব্যক্তিত্ব আছে। তারও সবসময় এই প্রচেষ্টাই থাকবে নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।’

রাদওয়ান মুজিব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

??ঐতিহাসিক ৭ মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ বিষয়টি কোন রাজনৈতিক চমক কি না এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাদওয়ান মুজিব রাজনৈতিক কোন উদ্দেশ্য নিয়ে সেখানে যাননি। আপনারা দেখছেন, আমার পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তারা গোপন অ্যাম্বিশন নিয়ে কাজ করেন না। রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কাজ করে না।’

মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪

এমন কোন চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে কোন বিদেশি চাপেই সরকার টলবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এমন কোন চাপ নেই যা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ। কে চাপ দিল না দিল এতে আমার কিছু আসে যায় না।’

জনগণের স্বার্থে কাজ করেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যা বলবে তাই করব। বিদেশি চাপ আমাকে কিছুই করতে পারবে না। আর ওপর আল্লাহ আছে এবং আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে।’ তিনি আগামী নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোন ধরনের সংলাপে না বসারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। কাতারে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে গত ৪ থেকে ৮ মার্চ এ সফর করেন।

বিদেশি দূতাবাসে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে, এসব বিষয়ে কোন চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছে করুক। বিদেশি দূতাবাসে যাচ্ছে, বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে এনে বৈঠক করছে, বহির্বিশ্বে চিঠি পাঠাচ্ছে।’

এসব অভিযোগে কিছু যায় আসে নাÑ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কত ফোন এসেছে, কত হুমকি এসেছে, আমাদের উন্নয়ন থেমে গেছে? আমাদের অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা এসেছে, তাই বলে আমাদের উন্নয়ন কাজ থেমে গেছে?’

ইভিএমে ভোট কি না সিন্ধান্ত ইসির

নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী পরিমাণ কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনই নেবে।

প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন, ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা তুলে ধরেন।

আগামী নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ হওয়া দরকার মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ সরকারই নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন করে দিয়েছে। স্থিতিশীলতার জন্য যেটা দরকার নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু ও অবাধ হয়।

নির্বাচন কমিশন সবসময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু সেখান থেকেও তাদের স্বাধীন করে দিয়েছি, বাজেটে তাদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়, সেখান থেকে তারা খরচ করতে পারবে। তাদের আর্থিক যে স্বাতন্ত্রতা সেটা কিন্তু আমরা দিয়ে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘ইভিএম করতে চেয়েছিলাম, কারণ সবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দেবে, খুব দ্রুত রেজাল্ট পাবে, অনেকেরই আপত্তি, যখন সবাই এত আপত্তি, তখন ঠিক আছে, এটা নির্বাচন কমিশনের ওপরে, যতটুকু তারা পারে করবে।’

ইভিএমে ভোট হলে ভালো হতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অন্তত মানুষ তার ভোটের অধিকারটা প্রয়োগ করতে পারত, একটা আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারত। সেটা নিয়ে যেহেতু এত আলোচনা-সমালোচনা, এটা আমরা আমাদের নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’

অধ্যাপক ইউনূস প্রসঙ্গ

নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে সম্প্রতি ৪০ জন বিশ্বনেতা একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন ব্যক্তি একটি ব্যাংকের এমডি পদ হারিয়েছেন। তার বয়স হয়ে গেছে ৭০। নীতিমালা অনুযায়ী তিনি ওই পদে থাকতে পারেন না। এজন্য কত দেনদরবার, কত জায়গা থেকে ফোন, কতকিছু। আমেরিকা থেকে ফোন।’

৪০ জনের নাম খয়রাত করে বিজ্ঞাপন কেন এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি কিন্তু ঠিক বিবৃতি না। এটি একটি বিজ্ঞাপন। আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে। আমার প্রশ্নটা হলো- নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তির জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়।’

দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেয়- আমাদের দেশে শ্রম আদালত আছে; সেটা দেখে। আইন অনুযায়ী সব চলবে। এই ক্ষেত্রে তো আমার কোন কিছু করার নাই সরকারপ্রধান হিসেবে। কাজেই আমাকেই বা কেন এখানে বলা হলো? এর বাইরে আমি আর কী বলব! পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি। খালি এইটুকু সবাইকে স্মরণ করে দিলাম।’

বিএনপির সঙ্গে কিসের সংলাপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কোন প্রস্তুতি আছে কি না- এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংলাপ কার সঙ্গে করবো। ২০১৮-এর নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, তার রেজাল্টটা কী। নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করে না।’

বিএনপি সংলাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল-এমন ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘৩০০ সিটে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে তারপর নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এদের সঙ্গে কীসের কথা বলবো, কীসের বৈঠক করবো।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা- তাদের সঙ্গে বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। শুধু তাই নয় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম দেখতে বা একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে, আমাকে কীভাবে অপমানটা করলো, আমার গাড়ি ওই বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দিল না, বড় গেট বন্ধ। টেলিফোন নিয়ে সময় নেয়া হয়েছিল, আমি এইসময় আসব, তারা কী করল বড় গেট বন্ধ করে দিল, পরে ছোট গেটে গেলাম, আমার গাড়ি যাওয়ার পর সেটাও বন্ধ করে দিল। এত অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক।’

বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের সঙ্গে কেউ বৈঠক করতে পারবে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার পরিষ্কার কথা, যারা এইটুকু ভদ্রতা জানে না তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে। যেটুকু সহ্য করেছি, দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে, নিজের স্বার্থে না।’

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ভাই এসে, বোন এসে আমার কাছে আকুতি করল। এরপর আমি তার সাজাটা স্থগিত করে তার বাসায় থাকা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট। এত অপমানের পর তারা যে সহানুভূতি পেয়েছে, সেটা শুধু আমার কারণে।’

বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন?’

আগামী নির্বাচনেও জনগণ যেন ‘স্বাধীনভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে’ ভোট দিতে পারে সেই প্রস্তুতি সরকারের আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ।’

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বগুড়ায় খবর নিলাম, সেখানকার মানুষেরও আমাদের সরকারের প্রতি একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার দল করে না, অন্য দল করে, তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি আজ এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষের গ্রামের মানুষের একটাই কথা, এই সরকারেরই থাকা উচিত।’

এটাকে সাধারণ মানুষের ‘আকাক্সক্ষা’-মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর কী হবে দেখা যাক। ইলেকশন এটা জনগণের ইচ্ছা। জনগণ ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। এ নিয়ে আফসোস নেই।’

অন্য এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দশ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লো, এটা আবার রাজনৈতিক হয় কী করে? এই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেই কিন্তু তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাও। তারপরও তারা যদি এটাকে রাজনৈতিক বলে তাহলে আমার মনে হয় জনগণই বিচার করবে। এটা জনগণের সঙ্গে মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু না। অস্ত্র চোরাকারবারি ব্যবসাটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর সেটাকে তারা রাজনীতি হিসেবে দেখাতে চায়।

খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের ‘লুটপাট-দুর্নীতির’ কথা আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পাচার করা ৪০ কোটি টাকা কিন্তু বাংলাদেশ উদ্ধার করে ফেরত এনেছে। এ কথাটা বোধহয় সবার মনে রাখা উচিত। সেটাকেও তারা রাজনৈতিক বলবে?’

দেশকে অস্থিতিশীল করা চেষ্টা

দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেটা মোকাবিলা করবে আমাদের জনগণ। দেশ এগিয়ে যাবে।’

এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এটাকে কিছু করতে পারব না।’

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা

আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন আর পরনির্ভরশীল নই। আমরা নিজেরাই এখন উৎপাদন করছি। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। আশা করি রমজানে কোন অসুবিধা হবে না।

রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে কেউ খাদ্যপণ্য মজুদ করে পচিয়ে ফেললে আমাদের তো কিছু করার থাকবে না। সেদিকে সাংবাদিকদেরও একটু নজর রাখতে হবে।

কোভিড মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্য নিয়ে সমস্যাটা হচ্ছে, দাম বেশি কমালে উৎপাদকদের লোকসান হবে, আবার দাম বেশি বাড়ালে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। এ জায়গায় সবসময় ব্যালেন্স করতে হয়।’

এলডিসি প্রসঙ্গ

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার ব্যাপারে অনেকের কাছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে। অনেক সময় এই সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করে না। যেহেতু করোনা দেখা দিল, তখন একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনেকের ছিল যে এটা এখনই গ্রহণ করা সম্ভব কি না। আমি কিন্তু বলেছি, আমরা পারব। যে কারণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটা অনুমোদিত হয়ে গেছে। কাজেই আমরা সেই সুযোগ নিয়েছি।’

নতুন রাষ্ট্রপতি পোড় খাওয়া মানুষ

নতুন রাষ্ট্রপতি (মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি একজন পোড় খাওয়া মানুষ এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। পঁচাত্তর-পরবর্তী জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেপ্তার করে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী।

নতুন রাষ্ট্রপতি ‘জুডিশিয়াল সার্ভিসেও’ চাকরি করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির আমলে বাধ্য হয়ে চাকরি ছাড়তেও হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার মাঝে ওই দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, দেশপ্রেম ও ব্যক্তিত্ব আছে। তারও সবসময় এই প্রচেষ্টাই থাকবে নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।’

রাদওয়ান মুজিব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

??ঐতিহাসিক ৭ মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ বিষয়টি কোন রাজনৈতিক চমক কি না এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাদওয়ান মুজিব রাজনৈতিক কোন উদ্দেশ্য নিয়ে সেখানে যাননি। আপনারা দেখছেন, আমার পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তারা গোপন অ্যাম্বিশন নিয়ে কাজ করেন না। রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কাজ করে না।’