ইংলিশদের চোখ রাঙাচ্ছে ‘বাংলাওয়াশ’

ইংল্যান্ডের সঙ্গে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ দল যখন টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল, তখন এলিট ফরম্যাটে টাইগারদের কেবল যাত্রা শুরু হয়েছে। এরপর ২০১০ সালে মিরপুরেও ইংল্যান্ডের কাছে নাকাল হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ঠিক শুরুর সময় থেকে হিসাব করলে সব ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। সফরকারী ইংলিশদের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-২০ সিরিজ জয়টাকে ‘অঘটন’ বলা যাবে না কোনমতেই। কেননা গত ২০ বছর ধরেই ইংলিশদের সঙ্গে শক্তির ব্যবধান ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে সচেষ্ট ছিল টাইগাররা। গত পাঁচটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের অন্তত একটা করে পাওয়া জয়, আর ২০১৫ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে এডিলেডে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করাটা সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে। আজ মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার সময়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করার পাওয়া সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইবে না টাইগাররা। তেমনটা করা গেলে আরও একটা ‘বাংলাওয়াশ’-এর সাক্ষী হবে মিরপুর। দুপুর ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

তবে অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাস ডেকে আনতে পারে পরাজয়। কেননা প্রথম ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে জয়ের স্বাদ নিলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই করে জিততে হয়েছে বাংলাদেশকে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ^কাপের জন্য শক্তিশালী দল গঠনে বাংলাদেশ যে সঠিক পথে আছে সেটি বেশ ভালোভাবে ফুটে উঠেছে।

দ্বিতীয় ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৫০ রানের দারুণ সূচনার পরও মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২০ ওভারে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে যা সর্বনিম্ন স্কোর ইংলিশদের।

প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসা অপরাজিত ইনিংসটায় ভর করে সাত বল বাকি রেখেই ১১৮ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ফেলে বাংলাদেশ। অনবদ্য ৪৬ রান করেন শান্ত।

দলের প্রয়োজনে জ্বলে ওঠার গুরুত্ব তুলে ধরে সাকিব বলেন, তারা (ইংল্যান্ড) খুব ভালো শুরু করেছিল, কিন্তু আমরা আমাদের মনোবল ধরে রেখেছিলাম। দলগত প্রচেষ্টা খুবই ভালো ছিল। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মনোবল ধরে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলেও টি-২০তে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি ইংল্যান্ড। উইকেট সর্ম্পকে ভালো ধারণা থাকার পরও টি-২০ সিরিজে ওয়ানডে সিরিজের মতো জ্বলে উঠতে পারেনি ইংলিশরা। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা বেশিরভাগ সময়ই বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে।

এদিকে সিরিজ চলাকালে ইনজুরিতে পড়া উইল জ্যাকসের বদলি হিসেবেও কাউকে দলে নেয়নি ইংল্যান্ড। এছাড়া স্কোয়াডে কোন খেলোয়াড়ও যুক্ত করেননি তারা। এখন তাদের স্কোয়াডে আছে মাত্র ১৩ জন খেলোয়াড়।

ঘরের মাঠে বাংলাদেশের শক্তির গভীরতা জানা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নিয়েছে কি-না থ্রি লায়ন্সরা- সরাসরি এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে বৃটিশ গণমাধ্যম। যদিও এমন প্রশ্নকে উড়িয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বলেছেন, মাঠের লড়াইয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বাটলার জানেন, হতাশাকে পেছনে ফেলে দল আত্মবিশ^াসী হয়ে উঠতে না পারলে এই ফরম্যাটের বিশ^ চ্যাম্পিয়নদের লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেতে হবে।

এখন পর্যন্ত এই সফরে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি রিস টপলি। সফরের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ হতে পারে তার। আবার সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪

ইংলিশদের চোখ রাঙাচ্ছে ‘বাংলাওয়াশ’

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

ইংল্যান্ডের সঙ্গে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ দল যখন টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল, তখন এলিট ফরম্যাটে টাইগারদের কেবল যাত্রা শুরু হয়েছে। এরপর ২০১০ সালে মিরপুরেও ইংল্যান্ডের কাছে নাকাল হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ঠিক শুরুর সময় থেকে হিসাব করলে সব ফরম্যাট মিলিয়ে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। সফরকারী ইংলিশদের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-২০ সিরিজ জয়টাকে ‘অঘটন’ বলা যাবে না কোনমতেই। কেননা গত ২০ বছর ধরেই ইংলিশদের সঙ্গে শক্তির ব্যবধান ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে সচেষ্ট ছিল টাইগাররা। গত পাঁচটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের অন্তত একটা করে পাওয়া জয়, আর ২০১৫ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে এডিলেডে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করাটা সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে। আজ মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার সময়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করার পাওয়া সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইবে না টাইগাররা। তেমনটা করা গেলে আরও একটা ‘বাংলাওয়াশ’-এর সাক্ষী হবে মিরপুর। দুপুর ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

তবে অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাস ডেকে আনতে পারে পরাজয়। কেননা প্রথম ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে জয়ের স্বাদ নিলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই করে জিততে হয়েছে বাংলাদেশকে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ^কাপের জন্য শক্তিশালী দল গঠনে বাংলাদেশ যে সঠিক পথে আছে সেটি বেশ ভালোভাবে ফুটে উঠেছে।

দ্বিতীয় ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৫০ রানের দারুণ সূচনার পরও মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২০ ওভারে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে যা সর্বনিম্ন স্কোর ইংলিশদের।

প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসা অপরাজিত ইনিংসটায় ভর করে সাত বল বাকি রেখেই ১১৮ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ফেলে বাংলাদেশ। অনবদ্য ৪৬ রান করেন শান্ত।

দলের প্রয়োজনে জ্বলে ওঠার গুরুত্ব তুলে ধরে সাকিব বলেন, তারা (ইংল্যান্ড) খুব ভালো শুরু করেছিল, কিন্তু আমরা আমাদের মনোবল ধরে রেখেছিলাম। দলগত প্রচেষ্টা খুবই ভালো ছিল। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মনোবল ধরে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলেও টি-২০তে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি ইংল্যান্ড। উইকেট সর্ম্পকে ভালো ধারণা থাকার পরও টি-২০ সিরিজে ওয়ানডে সিরিজের মতো জ্বলে উঠতে পারেনি ইংলিশরা। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা বেশিরভাগ সময়ই বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে।

এদিকে সিরিজ চলাকালে ইনজুরিতে পড়া উইল জ্যাকসের বদলি হিসেবেও কাউকে দলে নেয়নি ইংল্যান্ড। এছাড়া স্কোয়াডে কোন খেলোয়াড়ও যুক্ত করেননি তারা। এখন তাদের স্কোয়াডে আছে মাত্র ১৩ জন খেলোয়াড়।

ঘরের মাঠে বাংলাদেশের শক্তির গভীরতা জানা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নিয়েছে কি-না থ্রি লায়ন্সরা- সরাসরি এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে বৃটিশ গণমাধ্যম। যদিও এমন প্রশ্নকে উড়িয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বলেছেন, মাঠের লড়াইয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বাটলার জানেন, হতাশাকে পেছনে ফেলে দল আত্মবিশ^াসী হয়ে উঠতে না পারলে এই ফরম্যাটের বিশ^ চ্যাম্পিয়নদের লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেতে হবে।

এখন পর্যন্ত এই সফরে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি রিস টপলি। সফরের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ হতে পারে তার। আবার সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ।