ঢাকার রেস্তোরাঁ ব্র্যান্ড সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেয়ার অভিযোগের প্রমাণ পায়নি সরকারি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এই শুনানিতে সুলতান’স ডাইনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও অভিযোগকারী ব্যক্তিকে খুঁজে পায়নি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে।
রেস্তোরাঁটি সরেজমিন তদন্ত এবং অভিযুক্তের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে মহাপরিচালক বলেন, “সুলতান’স ডাইন ‘মা বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার’ নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির গোস্ত সংগ্রহ করে থাকে। কাপ্তান বাজারে খাসি জবাই করার সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাঝে মধ্যে উপস্থিত থাকেন। ভেন্ডর নিজ দায়িত্বে মাংস অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে মাংস পৌঁছায়।”
রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সরকারি পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসি বাদে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে।’
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘রেস্টুরেন্টের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভোক্তা আইনের কোন ব্যত্যয় আমরা পাইনি। এছাড়া সেদিন অভিযানে মাংস সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের মাংস সংগ্রহ করেছে এবং তারা সেটি পরীক্ষা করছে।’ সুলতান’স ডাইনের মতো ঢাকায় আরও যত বড় প্রতিষ্ঠান আছে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলেও জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘মাংসের ক্ষেত্রে সেটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে সেটির রেকর্ড রাখতে হবে। হালাল প্রক্রিয়ায় মাংস সংগ্রহ করতে হবে।
গত সপ্তাহে রাজধানীর সুলতান’স ডাইন নামের একটি রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেয়ার অভিযোগ ওঠে। মূলত বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত বৃহস্পতিবার রেস্তোরাঁটির গুলশান-২ শাখায় অভিযান চালায়।
সুলতান’স ডাইনে সেই অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল। এ সময় সংস্থাটির আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সত্যতা ও তাদের বক্তব্য জানতে চান।
গতকাল অধিদপ্তরের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে সুলতান’স ডাইনের পক্ষে মহাব্যবস্থাপক, সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও গুলশান-২ শাখার ব্যবস্থাপক মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য দেন। এসব তথ্য উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সুলতান’স ডাইনকে কাপ্তানবাজারের মা-বাবার দোয়া গোশত বিতান নামের একটি প্রতিষ্ঠান খাসির মাংস সরবরাহ করে থাকে। কাপ্তানবাজারে খাসি জবাইয়ের সময় সুলতান’স ডাইনের প্রতিনিধিরাও মাঝেমধ্যে উপস্থিত থাকেন।’
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শুনানিতে সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে সুলতান’স ডাইনের প্রতিনিধিরা জানান, ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের খাসির মাংস তারা কাচ্চি বিরিয়ানিতে ব্যবহার করেন। আকারে ছোট হওয়ার কারণে এই খাসির হাড় চিকন হয়। অন্যদিকে যে মুঠোফোন নম্বর থেকে রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল, সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আবদুল জব্বার মন্ডল গতকাল বলেন, ‘সুলতান’স ডাইনে সরেজমিন তদন্ত ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে অধিদপ্তর তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
ঢাকার রেস্তোরাঁ ব্র্যান্ড সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেয়ার অভিযোগের প্রমাণ পায়নি সরকারি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এই শুনানিতে সুলতান’স ডাইনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও অভিযোগকারী ব্যক্তিকে খুঁজে পায়নি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, সুলতান’স ডাইনে খাসির বদলে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে।
রেস্তোরাঁটি সরেজমিন তদন্ত এবং অভিযুক্তের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে মহাপরিচালক বলেন, “সুলতান’স ডাইন ‘মা বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার’ নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির গোস্ত সংগ্রহ করে থাকে। কাপ্তান বাজারে খাসি জবাই করার সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাঝে মধ্যে উপস্থিত থাকেন। ভেন্ডর নিজ দায়িত্বে মাংস অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে মাংস পৌঁছায়।”
রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সরকারি পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসি বাদে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে।’
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘রেস্টুরেন্টের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভোক্তা আইনের কোন ব্যত্যয় আমরা পাইনি। এছাড়া সেদিন অভিযানে মাংস সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের মাংস সংগ্রহ করেছে এবং তারা সেটি পরীক্ষা করছে।’ সুলতান’স ডাইনের মতো ঢাকায় আরও যত বড় প্রতিষ্ঠান আছে তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলেও জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘মাংসের ক্ষেত্রে সেটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে সেটির রেকর্ড রাখতে হবে। হালাল প্রক্রিয়ায় মাংস সংগ্রহ করতে হবে।
গত সপ্তাহে রাজধানীর সুলতান’স ডাইন নামের একটি রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেয়ার অভিযোগ ওঠে। মূলত বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত বৃহস্পতিবার রেস্তোরাঁটির গুলশান-২ শাখায় অভিযান চালায়।
সুলতান’স ডাইনে সেই অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল। এ সময় সংস্থাটির আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সত্যতা ও তাদের বক্তব্য জানতে চান।
গতকাল অধিদপ্তরের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে সুলতান’স ডাইনের পক্ষে মহাব্যবস্থাপক, সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও গুলশান-২ শাখার ব্যবস্থাপক মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য দেন। এসব তথ্য উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সুলতান’স ডাইনকে কাপ্তানবাজারের মা-বাবার দোয়া গোশত বিতান নামের একটি প্রতিষ্ঠান খাসির মাংস সরবরাহ করে থাকে। কাপ্তানবাজারে খাসি জবাইয়ের সময় সুলতান’স ডাইনের প্রতিনিধিরাও মাঝেমধ্যে উপস্থিত থাকেন।’
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শুনানিতে সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে সুলতান’স ডাইনের প্রতিনিধিরা জানান, ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের খাসির মাংস তারা কাচ্চি বিরিয়ানিতে ব্যবহার করেন। আকারে ছোট হওয়ার কারণে এই খাসির হাড় চিকন হয়। অন্যদিকে যে মুঠোফোন নম্বর থেকে রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল, সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আবদুল জব্বার মন্ডল গতকাল বলেন, ‘সুলতান’স ডাইনে সরেজমিন তদন্ত ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে অধিদপ্তর তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’