ফতুল্লায় বিস্ফোরণে দগ্ধ কুলসুম কাতরাতে কাতরাতে জন্ম দিলেন সন্তান

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি বাসায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ কুলসুম বেগম ও তার ছেলে খালিদ (৩)। বিস্ফোরণে ৩০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় কুলসুমের অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানান চিকিৎসকরা। একদিকে পোড়া খতের যন্ত্রণা, আরেকদিকে প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। এরইমধ্যে সেখানেই জন্ম দিলেন এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান। তবে মায়ের কোলে থাকার সৌভাগ্য হলো না সদ্য ভুমিষ্ট শিশুটির। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কুলসুম (২৫) জন্ম দেন এই সন্তান। মা দগ্ধ হওয়ার পরেও সন্তানের জন্ম হওয়ায় শুকরিয়া আদায় করছেন স্বজনরা।

হাসপাতালে কুলসুমের স্বামী আবদুল্লাহ আল মাসুদ জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়া হয় কুলসুমকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে জানানো হয়, ছেলে সন্তান হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় পুড়ে মৃত্যু হওয়ার হাত থেকে ৩টি প্রাণই বেঁচে গেছে। এতো অনেক অনেক শুকরিয়া। সবাই আমরা স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন। ওরা যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।

বার্ন ইনস্টিটিউটের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সঞ্জয় কুমার দাস জানান, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কলসুম। তার পিঠে ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মায়ের শরীর পুড়ে যাওয়ার কারণেই মূলত এই অস্ত্রোপচারটি করা হলো। সিজারিয়ানের মাধ্যমে বাচ্চাটির ভুমিষ্ট হয়। তবে শিশুটির আনম্যাচিউড হওয়ায় ওজন দেড় কেজি। কিছুটা শ্বাসকষ্ট রয়েছে তার। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নবজাতকদের নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রাখা হয়েছে। এছাড়া সিজারিয়ানের পর কুলসুমেরও অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। যদিও তার পুড়া ক্ষত মারাত্মক।

এরআগে, গত রোববার সন্ধ্যার দিকে ফতুল্লা মাজদাইল এলাকার ১০ তলা একটি বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় বিস্ফোরণ হয়। দগ্ধ হন অন্তঃসত্ত্বা কুলসুম আক্তার ও তার ছেলে খালিদ। কুলসুমের স্বামী মাসুদ ফতুল্লায় ব্যবসা করেন। ঘটনার সময় তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। মাসুদ জানান, সন্ধ্যায় আগুনের খবর শুনে তিনি বাসায় যান। গিয়ে দেখেন ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। বাসার ভিতরে দগ্ধ মা-ছেলেকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪

ফতুল্লায় বিস্ফোরণে দগ্ধ কুলসুম কাতরাতে কাতরাতে জন্ম দিলেন সন্তান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি বাসায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ কুলসুম বেগম ও তার ছেলে খালিদ (৩)। বিস্ফোরণে ৩০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় কুলসুমের অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানান চিকিৎসকরা। একদিকে পোড়া খতের যন্ত্রণা, আরেকদিকে প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। এরইমধ্যে সেখানেই জন্ম দিলেন এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান। তবে মায়ের কোলে থাকার সৌভাগ্য হলো না সদ্য ভুমিষ্ট শিশুটির। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কুলসুম (২৫) জন্ম দেন এই সন্তান। মা দগ্ধ হওয়ার পরেও সন্তানের জন্ম হওয়ায় শুকরিয়া আদায় করছেন স্বজনরা।

হাসপাতালে কুলসুমের স্বামী আবদুল্লাহ আল মাসুদ জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেয়া হয় কুলসুমকে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে জানানো হয়, ছেলে সন্তান হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় পুড়ে মৃত্যু হওয়ার হাত থেকে ৩টি প্রাণই বেঁচে গেছে। এতো অনেক অনেক শুকরিয়া। সবাই আমরা স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন। ওরা যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।

বার্ন ইনস্টিটিউটের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সঞ্জয় কুমার দাস জানান, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কলসুম। তার পিঠে ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মায়ের শরীর পুড়ে যাওয়ার কারণেই মূলত এই অস্ত্রোপচারটি করা হলো। সিজারিয়ানের মাধ্যমে বাচ্চাটির ভুমিষ্ট হয়। তবে শিশুটির আনম্যাচিউড হওয়ায় ওজন দেড় কেজি। কিছুটা শ্বাসকষ্ট রয়েছে তার। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নবজাতকদের নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রাখা হয়েছে। এছাড়া সিজারিয়ানের পর কুলসুমেরও অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। যদিও তার পুড়া ক্ষত মারাত্মক।

এরআগে, গত রোববার সন্ধ্যার দিকে ফতুল্লা মাজদাইল এলাকার ১০ তলা একটি বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় বিস্ফোরণ হয়। দগ্ধ হন অন্তঃসত্ত্বা কুলসুম আক্তার ও তার ছেলে খালিদ। কুলসুমের স্বামী মাসুদ ফতুল্লায় ব্যবসা করেন। ঘটনার সময় তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। মাসুদ জানান, সন্ধ্যায় আগুনের খবর শুনে তিনি বাসায় যান। গিয়ে দেখেন ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। বাসার ভিতরে দগ্ধ মা-ছেলেকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।