চট্টগ্রামে সিটি ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিতে ঘেরাও কর্মসূচি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিতে ১৫ মার্চ সকাল ১১টায় নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। গতকাল বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিষদের মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. নুরুল আবছার, সহ-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, মো. হাসান, আবদুল মালেক, ইসমাইল মনু ও মীর মুহাম্মদ ইসলাম প্রমুখ।

পরিষদের মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পঞ্চবার্ষিক কর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের প্রচলিত নিয়ম আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ বাদ দিয়ে স্থাপনার আয়ের ওপর গৃহকর নির্ধারণ করে। ফলে নগরীর গৃহমালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স রাতারাতি ৩০০ থেকে ১০০০গুণ বৃদ্ধি পায়। স্থাপনার ওপর ভাড়াভিত্তিক গৃহকর নির্ধারণের এই ধারাটি স্বৈরাচার আমলে ঞযব গঁহরপরঢ়ধষ ঈড়ৎঢ়ৎড়ঃরড়হ ঞধীধঃরড়হ জঁষবং-১৯৮৬ এ অসাংবিধানিকভাবে যুক্ত করা হয়। ধারাটি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন সিটি করপোরেশনের কোন নির্বাচিত মেয়র কোন শহরে প্রয়োগ করেছেন, এমন কোন নজির নেই! অথচ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বাংলাদেশে প্রথম এই কালো আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নগরবাসীর পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার এক ঘৃণ্য পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। আকাশ ভেঙে পড়ে চট্টগ্রাম নগরের ২ লাখ ৮ হাজার হোল্ডিং মালিকের মাথার ওপর। করপোরেশনের নোটিশ হাতে পেয়ে নগরে বসবাসরত ৭০% মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত গৃহমালিকগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। তারা প্রতিকারের কোন পথই খুঁজে পাচ্ছিলো না। এমন পরিস্থিতে আমরা সমমনা কিছু সচেতন নাগরিক চট্টগ্রাম নগর ২২ মহল্লার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত হাজী আবুল খায়ের মেম্বারের সুযোগ্য পুত্র চট্টগ্রাম সদরঘাট থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. নুরুল আবছারের নেতৃত্বে এই বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলেনের সূচনা করি। একপর্যায়ে আন্দোলনের তীব্রতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় স্থগিত ঘোষণা করে। নগরবাসী স্বস্তিবোধ করে এবং আমরাও আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াই।

এরই মধ্যে পূর্বতন মেয়র এর মেয়াদকাল শেষ হয়ে যায় এবং নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান মেয়র ক্ষমতা গ্রহণ করেন। বর্তমান মেয়র মহোদয়ের গৃহকর বৃদ্ধি না করার নির্বাচনী অঙ্গীকার, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ভাবমূর্তি এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নগরবাসীকে অনেকটা আশ্বস্ত’ করে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ‘যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবণ’ এই প্রচলিত প্রবাদ বাক্যটিকে সত্য প্রমাণিত করে মেয়র ক্ষমতায় আরোহণ করেই নির্বাচনী অঙ্গীকারটি ভুলে যান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুরোধে পত্র পাঠিয়ে স্থগিতাদেশটি প্রত্যাহার করে অন্যায্য হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নগরবাসী এই আশা ভঙ্গের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে আমাদের কাছে ছুটে আসে। আমরা বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করি।

মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩ , ২৯ ফাল্গুন ১৪২৯, ২১ শবান ১৪৪৪

চট্টগ্রামে সিটি ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিতে ঘেরাও কর্মসূচি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিতে ১৫ মার্চ সকাল ১১টায় নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। গতকাল বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিষদের মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. নুরুল আবছার, সহ-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, মো. হাসান, আবদুল মালেক, ইসমাইল মনু ও মীর মুহাম্মদ ইসলাম প্রমুখ।

পরিষদের মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পঞ্চবার্ষিক কর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের প্রচলিত নিয়ম আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ বাদ দিয়ে স্থাপনার আয়ের ওপর গৃহকর নির্ধারণ করে। ফলে নগরীর গৃহমালিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স রাতারাতি ৩০০ থেকে ১০০০গুণ বৃদ্ধি পায়। স্থাপনার ওপর ভাড়াভিত্তিক গৃহকর নির্ধারণের এই ধারাটি স্বৈরাচার আমলে ঞযব গঁহরপরঢ়ধষ ঈড়ৎঢ়ৎড়ঃরড়হ ঞধীধঃরড়হ জঁষবং-১৯৮৬ এ অসাংবিধানিকভাবে যুক্ত করা হয়। ধারাটি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন সিটি করপোরেশনের কোন নির্বাচিত মেয়র কোন শহরে প্রয়োগ করেছেন, এমন কোন নজির নেই! অথচ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বাংলাদেশে প্রথম এই কালো আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নগরবাসীর পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার এক ঘৃণ্য পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। আকাশ ভেঙে পড়ে চট্টগ্রাম নগরের ২ লাখ ৮ হাজার হোল্ডিং মালিকের মাথার ওপর। করপোরেশনের নোটিশ হাতে পেয়ে নগরে বসবাসরত ৭০% মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত গৃহমালিকগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। তারা প্রতিকারের কোন পথই খুঁজে পাচ্ছিলো না। এমন পরিস্থিতে আমরা সমমনা কিছু সচেতন নাগরিক চট্টগ্রাম নগর ২২ মহল্লার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত হাজী আবুল খায়ের মেম্বারের সুযোগ্য পুত্র চট্টগ্রাম সদরঘাট থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. নুরুল আবছারের নেতৃত্বে এই বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলেনের সূচনা করি। একপর্যায়ে আন্দোলনের তীব্রতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় স্থগিত ঘোষণা করে। নগরবাসী স্বস্তিবোধ করে এবং আমরাও আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াই।

এরই মধ্যে পূর্বতন মেয়র এর মেয়াদকাল শেষ হয়ে যায় এবং নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান মেয়র ক্ষমতা গ্রহণ করেন। বর্তমান মেয়র মহোদয়ের গৃহকর বৃদ্ধি না করার নির্বাচনী অঙ্গীকার, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ভাবমূর্তি এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নগরবাসীকে অনেকটা আশ্বস্ত’ করে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ‘যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবণ’ এই প্রচলিত প্রবাদ বাক্যটিকে সত্য প্রমাণিত করে মেয়র ক্ষমতায় আরোহণ করেই নির্বাচনী অঙ্গীকারটি ভুলে যান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুরোধে পত্র পাঠিয়ে স্থগিতাদেশটি প্রত্যাহার করে অন্যায্য হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নগরবাসী এই আশা ভঙ্গের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে আমাদের কাছে ছুটে আসে। আমরা বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করি।