এলডিসি গ্রাজুয়েশনে সব ধরনের সহায়তা করবে এডিবি

টেকসই ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে আরও বড় আকারে সহায়তা করতে প্রস্তুত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি গড়তে ঋণ দেবে সংস্থাটি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্যও এডিবি প্রস্তুত বলে জানান এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। গতকাল রাজধানীর হোটেল কন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ ও এডিবির ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন’ অনুষ্ঠানে এডিবির প্রধান এ কথা বলেন।

মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ‘এডিবি বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রসারিত করবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারের জন্য আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এডিবির প্রধান বলেন, ‘গত দেড় দশক ধরে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে স্থির ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যেভাবে রূপান্তরিত হয়েছে, তা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। এডিবি আরও সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই উন্নয়ন চায়।’

আসাকাওয়া বাংলাদেশে তার পাঁচদিনের সফরের অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি। বিশেষ করে গত দেড় দশকের অগ্রগতিতে খুশি তিনি।

২০১৩-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১৯ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর ঠিক আগে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছে প্রবৃদ্ধি। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেয়েছে। মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় এক হাজার ২১০ ডলারে পৌঁছে।। এটি ২০২২ সালের মধ্যে দুই হাজার ৭৯৩ ডলার হয়। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে গ্রাজুয়েশন হওয়ার পথে রয়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্পের অধীনে একটি রেলস্টেশন ও এডিবি জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আশ্রয়প্রাপ্ত লোকদের জন্য কক্সবাজার ক্যাম্পে একটি পানি সরবরাহ সুবিধাসহ এডিবির অর্থে বাস্তবায়িত নানা প্রকল্প পরিদর্শন করবেন।

এছাড়া তিনি একটি পোশাক কারখানা ও স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন যা নারীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অবদান রাখে।

বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে এডিবিতে যোগ দেয়। ১৯৮১ সালে একটি মাঠ অফিস হোস্ট করার জন্য প্রথম এডিবি সদস্য হয়। সংস্থাটি প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ, অনুদান ও সহ-অর্থায়নসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা সংগ্রহ করেছে। এডিবি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৬৬ সালে এডিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশ ৬৮টি।

বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ , ৩০ ফাল্গুন ১৪২৯, ২২ শবান ১৪৪৪

বাংলাদেশ ও এডিবির ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন

এলডিসি গ্রাজুয়েশনে সব ধরনের সহায়তা করবে এডিবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

টেকসই ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে আরও বড় আকারে সহায়তা করতে প্রস্তুত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি গড়তে ঋণ দেবে সংস্থাটি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্যও এডিবি প্রস্তুত বলে জানান এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। গতকাল রাজধানীর হোটেল কন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ ও এডিবির ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন’ অনুষ্ঠানে এডিবির প্রধান এ কথা বলেন।

মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ‘এডিবি বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রসারিত করবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারের জন্য আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এডিবির প্রধান বলেন, ‘গত দেড় দশক ধরে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে স্থির ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যেভাবে রূপান্তরিত হয়েছে, তা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। এডিবি আরও সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই উন্নয়ন চায়।’

আসাকাওয়া বাংলাদেশে তার পাঁচদিনের সফরের অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি। বিশেষ করে গত দেড় দশকের অগ্রগতিতে খুশি তিনি।

২০১৩-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১৯ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর ঠিক আগে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছে প্রবৃদ্ধি। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেয়েছে। মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় এক হাজার ২১০ ডলারে পৌঁছে।। এটি ২০২২ সালের মধ্যে দুই হাজার ৭৯৩ ডলার হয়। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে গ্রাজুয়েশন হওয়ার পথে রয়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্পের অধীনে একটি রেলস্টেশন ও এডিবি জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আশ্রয়প্রাপ্ত লোকদের জন্য কক্সবাজার ক্যাম্পে একটি পানি সরবরাহ সুবিধাসহ এডিবির অর্থে বাস্তবায়িত নানা প্রকল্প পরিদর্শন করবেন।

এছাড়া তিনি একটি পোশাক কারখানা ও স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন যা নারীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অবদান রাখে।

বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে এডিবিতে যোগ দেয়। ১৯৮১ সালে একটি মাঠ অফিস হোস্ট করার জন্য প্রথম এডিবি সদস্য হয়। সংস্থাটি প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ, অনুদান ও সহ-অর্থায়নসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা সংগ্রহ করেছে। এডিবি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৬৬ সালে এডিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশ ৬৮টি।