লবণাক্ততায় পুড়ছে শত বিঘা বোরো ফসল, হতাশায় কৃষক

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনতার প্রভাবে জিউধরা ইউনিয়নে অতিরিক্ত লবণাক্ততায় চলতি বোরো মৌসুমে একশ’ বিঘা বোরো ফসলি মাঠের ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে। শত শত কৃষক ফসল বিপর্যয়ের আশংকায় রয়েছে। পটাশ ও জীবসাম সার ব্যবহার করলে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত কিছুটা লাঘব হবে বলে কৃষি দপ্তর জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নে ৮৮০ হেক্টর জমিতে এ বছরে বোরো ধানের আবাদ করেছে কৃষক। এর মধ্যে সোমাদ্দারখালী, ডেউয়াতলা, আড়ংঘাটা, সোনাতলা, একরামখালী, বরইতলা, বটতলা, ভাইজোড়া, ডুমুরিয়া ও কাঁলাচান্দের ধাইড় এলাকায় প্রায় একশ’ বিঘা বোরো ধান ক্ষেত পুড়ে গিয়ে ফসলের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বীজতলা রোপনের ২ মাসের মাথায় ফসলি মাঠে ধানের ৫০ ভাগ কাইচথোড় বেড়িয়ে গেছে, কুশি এসেছে ১০ ভাগ ও প্রতিটি ধানের শীষে ৩০ ভাগ ফুল বেড়িয়ে আশার পথে। সে মুহূর্তে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে মাঠের পর মাঠ ফসল পুড়ে গেছে।

১০ গ্রামের ৩ হাজার কৃষক এখন ক্ষতির আশঙ্কায় দিন পার করছেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন, ধার দেনা করে প্রতিবিঘা জমিতে সার বীজ ওষুধ শ্রমিক মজুরি দিয়ে ২০-২২ হাজার টাকা ব্যায় করে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা। বছরের খোরাক ফসল ঘরে তোলা দূরের কথা কিভাবে দেনা পরিশোধ হবে এসব কৃষকের।

সোমাদ্দারখালী গ্রামের কৃষক কামরুল হাওলাদার, রুস্তুম মুন্সী, ভাইজোড়া গ্রামের আনোয়ার মাঝি, আলমঙ্গীর মাঝি, হায়দার মাঝি সহ একাধিকরা বলেন, তারা প্রতিটি কৃষক পরিবার ২ থেকে ৭ বিঘা জমি নগদ টাকায় রেখে এ উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আবাদ করেছে।

গত বছর বিঘা প্রতি ৪৫ মন ধান ভাল ফলন হওয়ায়। এ বছরে অনেক কৃষক বোরো আবাদ করেছেন। তবে, লবণে ফসল পুড়ে যাওয়ায় খরচও উঠেবেনা। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছেন না। পরামর্শও পাচ্ছি না। প্রকৃত কৃষক কৃষি উপকর সঠিকভাবে না পাওয়ায় চরম ক্ষোভ রয়েছে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, এ বছরে উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় ৯ হাজার ১৮৫ হেক্টর বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে জিউধরায় ৮শ’ ৮০ হেক্টর জমির বোরো আবাদের লবণ পানি দিয়ে সেচ দেওয়ার করেনে অধিকাংশ মাঠের ফসল পুড়ে গেছে।

বিষয়টি শুনে তাৎক্ষনিক উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্পূন্ন পুড়ে ধান ফসল কোন কাজে আসবে না। তবে, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে প্রতি বিঘায় ৮ কেজি পটাশ সার ও ৫ কেজি জীবসাম সার ব্যবহার করলে কিছুটা ফসল রক্ষা করা যেতে পারে।

বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ , ৩০ ফাল্গুন ১৪২৯, ২২ শবান ১৪৪৪

লবণাক্ততায় পুড়ছে শত বিঘা বোরো ফসল, হতাশায় কৃষক

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

image

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : লবণাক্ত পানিতে পুড়ে যাওয়া ফসলি খেত -সংবাদ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনতার প্রভাবে জিউধরা ইউনিয়নে অতিরিক্ত লবণাক্ততায় চলতি বোরো মৌসুমে একশ’ বিঘা বোরো ফসলি মাঠের ধান ক্ষেত পুড়ে গেছে। শত শত কৃষক ফসল বিপর্যয়ের আশংকায় রয়েছে। পটাশ ও জীবসাম সার ব্যবহার করলে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত কিছুটা লাঘব হবে বলে কৃষি দপ্তর জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নে ৮৮০ হেক্টর জমিতে এ বছরে বোরো ধানের আবাদ করেছে কৃষক। এর মধ্যে সোমাদ্দারখালী, ডেউয়াতলা, আড়ংঘাটা, সোনাতলা, একরামখালী, বরইতলা, বটতলা, ভাইজোড়া, ডুমুরিয়া ও কাঁলাচান্দের ধাইড় এলাকায় প্রায় একশ’ বিঘা বোরো ধান ক্ষেত পুড়ে গিয়ে ফসলের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

বীজতলা রোপনের ২ মাসের মাথায় ফসলি মাঠে ধানের ৫০ ভাগ কাইচথোড় বেড়িয়ে গেছে, কুশি এসেছে ১০ ভাগ ও প্রতিটি ধানের শীষে ৩০ ভাগ ফুল বেড়িয়ে আশার পথে। সে মুহূর্তে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে মাঠের পর মাঠ ফসল পুড়ে গেছে।

১০ গ্রামের ৩ হাজার কৃষক এখন ক্ষতির আশঙ্কায় দিন পার করছেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন, ধার দেনা করে প্রতিবিঘা জমিতে সার বীজ ওষুধ শ্রমিক মজুরি দিয়ে ২০-২২ হাজার টাকা ব্যায় করে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা। বছরের খোরাক ফসল ঘরে তোলা দূরের কথা কিভাবে দেনা পরিশোধ হবে এসব কৃষকের।

সোমাদ্দারখালী গ্রামের কৃষক কামরুল হাওলাদার, রুস্তুম মুন্সী, ভাইজোড়া গ্রামের আনোয়ার মাঝি, আলমঙ্গীর মাঝি, হায়দার মাঝি সহ একাধিকরা বলেন, তারা প্রতিটি কৃষক পরিবার ২ থেকে ৭ বিঘা জমি নগদ টাকায় রেখে এ উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আবাদ করেছে।

গত বছর বিঘা প্রতি ৪৫ মন ধান ভাল ফলন হওয়ায়। এ বছরে অনেক কৃষক বোরো আবাদ করেছেন। তবে, লবণে ফসল পুড়ে যাওয়ায় খরচও উঠেবেনা। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছেন না। পরামর্শও পাচ্ছি না। প্রকৃত কৃষক কৃষি উপকর সঠিকভাবে না পাওয়ায় চরম ক্ষোভ রয়েছে কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, এ বছরে উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় ৯ হাজার ১৮৫ হেক্টর বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে জিউধরায় ৮শ’ ৮০ হেক্টর জমির বোরো আবাদের লবণ পানি দিয়ে সেচ দেওয়ার করেনে অধিকাংশ মাঠের ফসল পুড়ে গেছে।

বিষয়টি শুনে তাৎক্ষনিক উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্পূন্ন পুড়ে ধান ফসল কোন কাজে আসবে না। তবে, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে প্রতি বিঘায় ৮ কেজি পটাশ সার ও ৫ কেজি জীবসাম সার ব্যবহার করলে কিছুটা ফসল রক্ষা করা যেতে পারে।