এডিবির আরও সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক-এর (এডিবি) কাছ থেকে আরও সহায়তা চেয়েছেন।

এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়ার নেতৃত্বে ব্যাংকটির সফররত একটি প্রতিনিধি দল গতকাল ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ সহায়তা চান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামোর ওপর জোর দিচ্ছে। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে, প্রধানত, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে আরও সহায়তা কামনা করেন।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি ও মিডডে মিল সম্পর্কিত কর্মসূচির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা এডিবিকে এই ব্যাপারে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে এডিবির একজন সহসভাপতি বাছাই করারও আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় তিনি এই আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংককে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য, বিশেষ করে দুঃসময়ে ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়া বলেন, এডিবি একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।

আসাকাওয়া আরও বলেন, ‘এডিবি বাংলাদেশের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের মধ্যকার এই অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার আকাক্সক্ষক্ষার যাত্রায় এডিবি পাশে দাঁড়াবে।

এডিবি-প্রধান কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য বজায় রেখে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, ইআরডি সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার আলবুলুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ওমানকে জ্বালানি সহযোগিতা জোরদার, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করার আহ্বান জানান।

তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোকে বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ প্রতি বছর ১৫ লাখ টন থেকে উন্নীত করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ওমান মাছ, মাংস, চাল, শাক-সবজি ও পাটজাত পণ্যসহ কৃষিজাত পণ্য আমদানি করতে পারে।

তিনি ওমানকে বাংলাদেশ থেকে আইটি বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও নার্সসহ দক্ষ কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান।

বর্তমানে ওমানে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন।

রাষ্ট্রদূত আবদুুল গাফফার আলবুলুশি সরকার থেকে সরকার ব্যবস্থার অধীনে ওমান থেকে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, ওমানের ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে এ বিষয়ে একটি অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এমবাসেডার এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ , ৩০ ফাল্গুন ১৪২৯, ২২ শবান ১৪৪৪

শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে

এডিবির আরও সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক-এর (এডিবি) কাছ থেকে আরও সহায়তা চেয়েছেন।

এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়ার নেতৃত্বে ব্যাংকটির সফররত একটি প্রতিনিধি দল গতকাল ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ সহায়তা চান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামোর ওপর জোর দিচ্ছে। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে, প্রধানত, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে আরও সহায়তা কামনা করেন।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি ও মিডডে মিল সম্পর্কিত কর্মসূচির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা এডিবিকে এই ব্যাপারে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে এডিবির একজন সহসভাপতি বাছাই করারও আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় তিনি এই আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংককে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য, বিশেষ করে দুঃসময়ে ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়া বলেন, এডিবি একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।

আসাকাওয়া আরও বলেন, ‘এডিবি বাংলাদেশের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের মধ্যকার এই অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার আকাক্সক্ষক্ষার যাত্রায় এডিবি পাশে দাঁড়াবে।

এডিবি-প্রধান কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য বজায় রেখে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, ইআরডি সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার আলবুলুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ওমানকে জ্বালানি সহযোগিতা জোরদার, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করার আহ্বান জানান।

তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোকে বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ প্রতি বছর ১৫ লাখ টন থেকে উন্নীত করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ওমান মাছ, মাংস, চাল, শাক-সবজি ও পাটজাত পণ্যসহ কৃষিজাত পণ্য আমদানি করতে পারে।

তিনি ওমানকে বাংলাদেশ থেকে আইটি বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও নার্সসহ দক্ষ কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান।

বর্তমানে ওমানে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন।

রাষ্ট্রদূত আবদুুল গাফফার আলবুলুশি সরকার থেকে সরকার ব্যবস্থার অধীনে ওমান থেকে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, ওমানের ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে এ বিষয়ে একটি অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এমবাসেডার এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।