ভেজাল ওষুধ উৎপাদন-বিপণনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার দাবি

ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল সকাল ১১টায় নগরীর কে সি দে রোডে ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল, মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণন বন্ধের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে উক্ত দাবি জানান তিনি।

এ সময় সুজন বলেন, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মহামারীর মতো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ওষুধ খেয়ে মানুষের বেঁচে থাকার কথা আজ সে ওষুধ খেয়ে দীর্ঘমেয়াদি রোগে শোকে কষ্ট পাচ্ছেন রোগী সাধারণ। কিছু মানুষরূপী অর্থলোভী নরপিশাচ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির ওষুধ ভেজাল করে হুবহু একই রকম মোড়ক লাগিয়ে বাজারে বিপণন করছে। ফলত মানুষের বেঁচে থাকার জায়গাটিকে আজ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে করোনা মহামারী পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় যারা কষ্ট পাচ্ছেন তাদের জীবন আজ বিপন্ন হওয়ার মতো অবস্থা। একদিকে ভেজাল ওষুধ, অন্যদিকে দৈনন্দিন সেবনকৃত প্রেসার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অতি প্রয়োজনীয় ওষুধগুলোর মাত্রাতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে রোগীরা আজ দিশেহারা। এসব ওষুধের দামও নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য ওষুধ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল ওষুধের বিশাল বিশাল গোডাউন রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ভেজাল ওষুধ প্যাকেটজাত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে নতুন করে মোড়ক লাগানো হয়। তাছাড়া এসব গোডাউন থেকে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো নগরী এবং জেলার বিভিন্ন ফার্মেসি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিপণন করা হয়। এছাড়া সরকারি ওষুধের বেচাকেনাসহ সরকার নিষিদ্ধ বিভিন্ন ওষুধের বিপণনও হয় এসব গোডাউন থেকে। আর এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রয় করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছেন কতিপয় নামসর্বস্ব ওষুধ কোম্পানি এবং ফার্মেসি মালিকরা। এখানে আরও উল্লেখ্য যে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করলে ওষুধের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে রোগীর জীবনহানিরও আশঙ্কা রয়ে যায়। তাই জীবন-মরণের অপরিহার্য এ উপাদান নিয়ে ছেলেখেলা করার কোন অধিকার কারো নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণনকারীদের দৌরাত্ম্য কমছে না। যারা ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত কাজ করে তারা সবাই হত্যাকারী। হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তিই হতে হবে মৃত্যুদন্ড। তাই প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে মানুষরূপী এসব অমানুষদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করতে হবে। এটি আজ ভোক্তাদের সময়ের দাবি। সময়ের মধ্যে এই আইন প্রণয়নে স্পিকারকে স্মারকলিপি প্রদানেরও ঘোষণা দেন নাগরিক উদ্যোগ। মানববন্ধনে সর্বস্তরের জনসাধারণ, খুচরা ওষুধ ব্যবসায়ীসহ ছাত্র ও জনতা উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আবদুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মহিউদ্দিন শাহ, নুরুল কবির, মো. আজম খাঁন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল্লাহ আনসারী, জানে আলম, মো. সোলায়মান, মো. শাহজাহান, এহতেশামুল হক রাসেল, শহীদ উল্ল্যাহ লিটন, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, মো. ফারুক, অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মহাজন, মো. শাকিল, শেখ মো. রাশেদ, মনিরুল হক মুন্না, শাহনেওয়াজ আশরাফী প্রমুখ।

বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ , ৩০ ফাল্গুন ১৪২৯, ২২ শবান ১৪৪৪

ভেজাল ওষুধ উৎপাদন-বিপণনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার দাবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল সকাল ১১টায় নগরীর কে সি দে রোডে ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল, মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণন বন্ধের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে উক্ত দাবি জানান তিনি।

এ সময় সুজন বলেন, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মহামারীর মতো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ওষুধ খেয়ে মানুষের বেঁচে থাকার কথা আজ সে ওষুধ খেয়ে দীর্ঘমেয়াদি রোগে শোকে কষ্ট পাচ্ছেন রোগী সাধারণ। কিছু মানুষরূপী অর্থলোভী নরপিশাচ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির ওষুধ ভেজাল করে হুবহু একই রকম মোড়ক লাগিয়ে বাজারে বিপণন করছে। ফলত মানুষের বেঁচে থাকার জায়গাটিকে আজ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে করোনা মহামারী পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় যারা কষ্ট পাচ্ছেন তাদের জীবন আজ বিপন্ন হওয়ার মতো অবস্থা। একদিকে ভেজাল ওষুধ, অন্যদিকে দৈনন্দিন সেবনকৃত প্রেসার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অতি প্রয়োজনীয় ওষুধগুলোর মাত্রাতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে রোগীরা আজ দিশেহারা। এসব ওষুধের দামও নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য ওষুধ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল ওষুধের বিশাল বিশাল গোডাউন রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ভেজাল ওষুধ প্যাকেটজাত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে নতুন করে মোড়ক লাগানো হয়। তাছাড়া এসব গোডাউন থেকে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো নগরী এবং জেলার বিভিন্ন ফার্মেসি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিপণন করা হয়। এছাড়া সরকারি ওষুধের বেচাকেনাসহ সরকার নিষিদ্ধ বিভিন্ন ওষুধের বিপণনও হয় এসব গোডাউন থেকে। আর এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রয় করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছেন কতিপয় নামসর্বস্ব ওষুধ কোম্পানি এবং ফার্মেসি মালিকরা। এখানে আরও উল্লেখ্য যে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করলে ওষুধের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে রোগীর জীবনহানিরও আশঙ্কা রয়ে যায়। তাই জীবন-মরণের অপরিহার্য এ উপাদান নিয়ে ছেলেখেলা করার কোন অধিকার কারো নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিপণনকারীদের দৌরাত্ম্য কমছে না। যারা ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত কাজ করে তারা সবাই হত্যাকারী। হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তিই হতে হবে মৃত্যুদন্ড। তাই প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে মানুষরূপী এসব অমানুষদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করতে হবে। এটি আজ ভোক্তাদের সময়ের দাবি। সময়ের মধ্যে এই আইন প্রণয়নে স্পিকারকে স্মারকলিপি প্রদানেরও ঘোষণা দেন নাগরিক উদ্যোগ। মানববন্ধনে সর্বস্তরের জনসাধারণ, খুচরা ওষুধ ব্যবসায়ীসহ ছাত্র ও জনতা উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আবদুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মহিউদ্দিন শাহ, নুরুল কবির, মো. আজম খাঁন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল্লাহ আনসারী, জানে আলম, মো. সোলায়মান, মো. শাহজাহান, এহতেশামুল হক রাসেল, শহীদ উল্ল্যাহ লিটন, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, মো. ফারুক, অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মহাজন, মো. শাকিল, শেখ মো. রাশেদ, মনিরুল হক মুন্না, শাহনেওয়াজ আশরাফী প্রমুখ।