১০ দিনে ৬৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স

চলতি বছরের তৃতীয় মাস মার্চে প্রতিদিন ছয় কোটি ৮২ লাখ ডলার বা ৭৩০ কোটি টাকার (ডলারপ্রতি ১০৭ টাকা হারে) রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) দেশে আসছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেকর্ড ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রবাসী আয় আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৮ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে যা সাত হাজার ৩০০ কোটি। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে আট কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ৯৫৪ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ১৪৮ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা ছয় হাজার ১৭৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ডলার। তবে এ সময়ের মধ্যে আট ব্যাংকের মাধ্যমে কোন রেমিট্যান্স দেশে আসেনি।

এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

প্রবাসী আয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হুন্ডি বা অন্য কোন অবৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে। এটা এখন কাজে আসছে। রেমিট্যান্সে চলতি মাসের শুরুতেই ভালো অবস্থান দেখা যাচ্ছে। আগামীতে দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারণে রেমিট্যান্স আরও বেশি পরিমাণ আসবে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এরপর সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারি মাসে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

অন্যদিকে দেশের মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র ডলার সংকট এখনও দূর হয়নি। জরুরি পণ্য আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৯৬৭ কোটি ডলার। এর আগে এত কম সময়ে কখনও এত ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। আর এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে।

image
আরও খবর
যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্যাংক বন্ধ করে দেয়ার পর্যায়ে আসেনি বাংলাদেশ : মশিউর রহমান
অন্য দেশের ব্যবসায়ীরা রজমানে ছাড় দেয়, বাংলাদেশে তার উল্টো : বাণিজ্যমন্ত্রী
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন
‘গ্রাহকদের টাকা সরিয়ে নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না’
ঢাকা মোটর শোতে অংশগ্রহণ করছে পদ্মা ব্যাংক
সোনালী ব্যাংকে ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার সেবা চালু
অগ্রণী ব্যাংকে ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভা-২০২৩
ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালে পুরস্কার
এবি ব্যাংকের তাজমহল রোড উপশাখা উদ্বোধন
বেসিক ব্যাংকে ‘ম্যাগপাই’ অ্যাপ উদ্বোধন
এক্সিম ব্যাংকের নেতৃত্বে ফেনীতে স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের উপশাখা উদ্বোধন

বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ , ০২ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

১০ দিনে ৬৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

চলতি বছরের তৃতীয় মাস মার্চে প্রতিদিন ছয় কোটি ৮২ লাখ ডলার বা ৭৩০ কোটি টাকার (ডলারপ্রতি ১০৭ টাকা হারে) রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) দেশে আসছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেকর্ড ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রবাসী আয় আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৮ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে যা সাত হাজার ৩০০ কোটি। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে আট কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ৯৫৪ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ১৪৮ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা ছয় হাজার ১৭৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ডলার। তবে এ সময়ের মধ্যে আট ব্যাংকের মাধ্যমে কোন রেমিট্যান্স দেশে আসেনি।

এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

প্রবাসী আয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হুন্ডি বা অন্য কোন অবৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে। এটা এখন কাজে আসছে। রেমিট্যান্সে চলতি মাসের শুরুতেই ভালো অবস্থান দেখা যাচ্ছে। আগামীতে দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারণে রেমিট্যান্স আরও বেশি পরিমাণ আসবে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এরপর সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারি মাসে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

অন্যদিকে দেশের মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র ডলার সংকট এখনও দূর হয়নি। জরুরি পণ্য আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৯৬৭ কোটি ডলার। এর আগে এত কম সময়ে কখনও এত ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। আর এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে।