গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আজ থেকে আন্দোলনে নামেছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। নতুন মজুরি বোর্ড গঠনসহ কয়েকটি দাবিতে আগামী এক মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করা হবে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডের মজুরি বোর্ডের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার জানান, দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও বর্তমান বাজারের মূল্যস্ফীতি-মুদ্রাস্ফীতির চাপ শ্রমিকের জীবনে এনেছে বিরাট দুর্ভোগ। দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়ে জনজীবনে এ সংকট তৈরি করেছে। বাস ভাড়া, যাতায়াত, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিনোদন বাদে শুধু খাবার খরচই বলে দেয় শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা। পোশাক শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের এই সংকটকালে মজুরি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যার জন্য গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে মজুরি বোর্ড গঠন করে ২০১৯ এর জানুয়ারি থেকে নতুন মজুরি কার্যকর করে। এ সময় শ্রমিকরা ১৬ হাজার টাকা দাবি করলেও তা দেয়া হয়নি। এটা শ্রমিক মালিকের সম্পর্কের স্বার্থরক্ষার প্রহসন, চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নতুন মজুরি বোর্ড কার্যকর হওয়ার পর থেকে করোনা, বন্যা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলাতে শ্রমিকরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যে শ্রমিকরা টিকে থাকে। এখন মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনের সময় এসেছে।’
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন যে আটটি দাবিতে এ আন্দোলন বলে জানান, সেগুলো হলো- ৩০ দিনের মধ্যে মজুরি বোর্ড গঠন করে শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করা, নতুন মজুরি ঘোষণার আগে ৬০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চালু, সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ, বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা ও মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেয়া, অবিলম্বে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে, শ্রমিক ও শ্রমিক শিল্প স্বার্থে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে, শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ভট্টাচার্য প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ , ০২ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আজ থেকে আন্দোলনে নামেছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। নতুন মজুরি বোর্ড গঠনসহ কয়েকটি দাবিতে আগামী এক মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করা হবে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডের মজুরি বোর্ডের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার জানান, দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও বর্তমান বাজারের মূল্যস্ফীতি-মুদ্রাস্ফীতির চাপ শ্রমিকের জীবনে এনেছে বিরাট দুর্ভোগ। দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়ে জনজীবনে এ সংকট তৈরি করেছে। বাস ভাড়া, যাতায়াত, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিনোদন বাদে শুধু খাবার খরচই বলে দেয় শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা। পোশাক শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের এই সংকটকালে মজুরি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যার জন্য গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে মজুরি বোর্ড গঠন করে ২০১৯ এর জানুয়ারি থেকে নতুন মজুরি কার্যকর করে। এ সময় শ্রমিকরা ১৬ হাজার টাকা দাবি করলেও তা দেয়া হয়নি। এটা শ্রমিক মালিকের সম্পর্কের স্বার্থরক্ষার প্রহসন, চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নতুন মজুরি বোর্ড কার্যকর হওয়ার পর থেকে করোনা, বন্যা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা সামলাতে শ্রমিকরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যে শ্রমিকরা টিকে থাকে। এখন মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনের সময় এসেছে।’
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন যে আটটি দাবিতে এ আন্দোলন বলে জানান, সেগুলো হলো- ৩০ দিনের মধ্যে মজুরি বোর্ড গঠন করে শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করা, নতুন মজুরি ঘোষণার আগে ৬০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চালু, সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ, বাধ্যতামূলক অংশীদারিত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা ও মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেয়া, অবিলম্বে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে, শ্রমিক ও শ্রমিক শিল্প স্বার্থে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে, শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ভট্টাচার্য প্রমুখ।