পানির অভাবে ফসলের খেত শুকিয়ে চৌচির, দিশেহারা কৃষক

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় পানির অভাবে তরমুজ ক্ষেতসহ নানান ফসলের ক্ষেত শুকিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হারিষখানপাড়া, কদলপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইসলামিয়া নতুন পাড়া এলাকায় প্রায় সব কৃষকই পাহাড়ি ছড়ার পানির ওপর নির্ভরশীল। চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির ফলে এসব পাহাড়ি ছড়া একেবারেই শুকিয়ে গেছে। একমাত্র পানির উৎসের এমন দশায় ওই এলাকার কৃষকদের চাষকৃত প্রায় সকল ফসলি জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। এতে করে অধিকাংশ ফসল মারা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কদলপুরের কৃষক আবদুস সাত্তারের ২ একর এলাকাজুড়ে চাষকৃত তরমুজ খেতের সিংহভাগ গাছ একেবারেই মারা গেছে। যে কয়টা গাছ বেঁচে আছে তাতে আসা ফলও বড় হচ্ছেনা। ফেটে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে বেশিরভাগ যা বিক্রির অনুপযোগী। কৃষক আবদুস সাত্তার জানান, গত ৩ মাস যবাত ৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেছে। ৭৫০ তলা গাছ রয়েছে তার এই খেতে যাতে তিনি বিনিয়োগ করছেন প্রায় ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার মতো। ব্যক্তিগত ঋণসহ এসব টাকা তিনি নিয়েছেন বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে। ফসলের এমন দশায় এখন ঋণের টাকা পরিশোধ কিভাবে করবেন তা নিয়ে দিশেহারা তিনি। এছাড়াও ১৩ একর জমি জুড়ে মৌসুমের আগাম সবজির চাষাবাদও করেন সাত্তার তাতেও একই দশা। এসব ক্ষেতে বেগুন, মূলা, ফুলকপি, কাঁচা মরিচ, টমেটো, বরবটি, শিম, ঢেরস, শসা, করলা, খিরা, ঝিঙ্গা, ধুন্দুলের চাষ করেন তিনি। যেখান থেকে ৫টন বরবটি, ৮টন মুলা ও বেগুন বিক্রি করেছিলেন ৪টন। ১৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পেয়েছিলেন মাত্র ৬ লাখ টাকার ফসল। পানির অভাবে এতেও গুনতে হয় লোকসান। বর্তমানে তার জমিতে বেগুন, বরবটি, মিষ্টি লাউ, পাট শাক, টমেটো, লাল শাক, গম, শসা, সরিষা গাছ রয়েছে যার একেবারে বেহাল দশা। ফসল উৎপাদনে ব্যাহতের কারণে স্থানীয় ব্যাংক ও এনজিওগুলো তাকে ঋণ দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন বলে জানান কৃষক আবদুস সাত্তার। তিনি কদলপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সিকদার পাড়া আকবর সিকদারের বাড়ি মো.শফিউল আলমের ছেলে। করোনার সময় তার দোকানের ব্যবসায় ধস নামায় তিনি কৃষি কাজে ঝুঁকে পড়েন। এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে পানির এমন সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কৃষক আবদুুস সাত্তারের চাষকৃত জমির এলাকায় যতদ্রুত সম্ভব একটি এলএলসি নলকূপ বসানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।

image

রাউজান (চট্টগ্রাম) : পানির অভাবে শুকিয়ে যাওয়া তরমুজ খেত -সংবাদ

আরও খবর
ময়মনসিংহ থেকে চুরি করে আশুলিয়ায় বিক্রি গ্রেপ্তার ৪, স্বীকারোক্তি
মাদারীপুরে প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিতে সেমিনার
কড়াইতলা মসজিদের স্থান পরিদর্শনে প্রতিমন্ত্রী
কেশবপুরে ক্লিনিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৪ জনের নামে মামলা
ভালুকায় বাপার মানববন্ধন
অবৈধভাবে জাটকা ধরায় আটক ২৬
চা বাগানে শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পীরগঞ্জে জমি বিরোধে মামলা করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলে দুই ভাই
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত হেলালিয়া হাট স্টেশনটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
রূপগঞ্জে হত্যা মামলার ২ আসামি গ্রেপ্তার
নিখোঁজ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ , ০২ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

পানির অভাবে ফসলের খেত শুকিয়ে চৌচির, দিশেহারা কৃষক

প্রতিনিধি, রাউজান (চট্টগ্রাম)

image

রাউজান (চট্টগ্রাম) : পানির অভাবে শুকিয়ে যাওয়া তরমুজ খেত -সংবাদ

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় পানির অভাবে তরমুজ ক্ষেতসহ নানান ফসলের ক্ষেত শুকিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হারিষখানপাড়া, কদলপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইসলামিয়া নতুন পাড়া এলাকায় প্রায় সব কৃষকই পাহাড়ি ছড়ার পানির ওপর নির্ভরশীল। চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির ফলে এসব পাহাড়ি ছড়া একেবারেই শুকিয়ে গেছে। একমাত্র পানির উৎসের এমন দশায় ওই এলাকার কৃষকদের চাষকৃত প্রায় সকল ফসলি জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। এতে করে অধিকাংশ ফসল মারা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কদলপুরের কৃষক আবদুস সাত্তারের ২ একর এলাকাজুড়ে চাষকৃত তরমুজ খেতের সিংহভাগ গাছ একেবারেই মারা গেছে। যে কয়টা গাছ বেঁচে আছে তাতে আসা ফলও বড় হচ্ছেনা। ফেটে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে বেশিরভাগ যা বিক্রির অনুপযোগী। কৃষক আবদুস সাত্তার জানান, গত ৩ মাস যবাত ৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেছে। ৭৫০ তলা গাছ রয়েছে তার এই খেতে যাতে তিনি বিনিয়োগ করছেন প্রায় ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার মতো। ব্যক্তিগত ঋণসহ এসব টাকা তিনি নিয়েছেন বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে। ফসলের এমন দশায় এখন ঋণের টাকা পরিশোধ কিভাবে করবেন তা নিয়ে দিশেহারা তিনি। এছাড়াও ১৩ একর জমি জুড়ে মৌসুমের আগাম সবজির চাষাবাদও করেন সাত্তার তাতেও একই দশা। এসব ক্ষেতে বেগুন, মূলা, ফুলকপি, কাঁচা মরিচ, টমেটো, বরবটি, শিম, ঢেরস, শসা, করলা, খিরা, ঝিঙ্গা, ধুন্দুলের চাষ করেন তিনি। যেখান থেকে ৫টন বরবটি, ৮টন মুলা ও বেগুন বিক্রি করেছিলেন ৪টন। ১৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পেয়েছিলেন মাত্র ৬ লাখ টাকার ফসল। পানির অভাবে এতেও গুনতে হয় লোকসান। বর্তমানে তার জমিতে বেগুন, বরবটি, মিষ্টি লাউ, পাট শাক, টমেটো, লাল শাক, গম, শসা, সরিষা গাছ রয়েছে যার একেবারে বেহাল দশা। ফসল উৎপাদনে ব্যাহতের কারণে স্থানীয় ব্যাংক ও এনজিওগুলো তাকে ঋণ দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন বলে জানান কৃষক আবদুস সাত্তার। তিনি কদলপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সিকদার পাড়া আকবর সিকদারের বাড়ি মো.শফিউল আলমের ছেলে। করোনার সময় তার দোকানের ব্যবসায় ধস নামায় তিনি কৃষি কাজে ঝুঁকে পড়েন। এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে পানির এমন সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কৃষক আবদুুস সাত্তারের চাষকৃত জমির এলাকায় যতদ্রুত সম্ভব একটি এলএলসি নলকূপ বসানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।