পীরগঞ্জে জমি বিরোধে মামলা করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলে দুই ভাই

রংপুরে থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে উল্টো দুই ভাইকে সারারাত থানায় আটকে রেখে প্রতিপক্ষকে থানায় ডেকে এনে লিখিত অভিযোগ নিয়ে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পীরগজ্ঞ থানার পাচগাছি ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামে। আর থানায় আটকে রেখে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখানোর ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই থানার এস আই রামকৃষ্ণের বিরুদ্ধে।

থানায় আটক করে রেখে মামলা নিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো ফারাজুল ইসলাম সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামী সেলিম ও দেবর সাইদুলের সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে আপন ভাই সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বড় ভাই সাইফুলের সঙ্গে ছোট ভাই সেলিম ও সাইদুলের কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া বাধে। এ ঘটনায় বড় ভাই সাইফুল পীরগজ্ঞ থানায় ফোন করে এসআই রামকৃষ্ণকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা দুই পক্ষের বক্তব্য না শুনে ছোট ভাই সেলিমের দেয়া সীমানার বেড়া ভেঙ্গে ফেলার নির্দ্দেশ দেয় এবং তার উপস্থিতিতে ভেঙ্গে দেয়া হয়। এরপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পর আবারও ভাইদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা আবারও ঘটনাস্থলে আসে। সে সেলিমকে গালে থাপ্পর দেয়। এতে তার চোখে দেয়া চশমা ভেঙ্গে যায়। এরপর এস আই রামকৃষ্ণ হ্যান্ড কাপ জোর করিয়ে পড়িয়ে আটক করার চেষ্টা করে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে পরিস্থিত শান্ত করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে এবং লিখিত অভিযোগ করতে দুই ভাই সেলিম ও সহিদুল পীরগজ্ঞ থানায় গেলে পুলিশ তাদের বক্তব্য না শুনে এবং অভিযোগ না নিয়ে তাদের থানায় বসিয়ে রাখে। এরপর এস আই রামকৃষ্ণ সেলিম শহিদুলের বড় ভাই সাইফুল ও তার স্ত্রী রেবেকা বেগমকে থানায় ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে দুই ভাই সেলিম শহিদুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দুই ভাইকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সারারাত থানায় আটকে রেখে গতকাল দুপুরে বড় ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় আদালতে চালান দিয়েছে।

এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামী সেলিম ও দেবর সহিদুল অপরাধ করলে আর যাই হোক থানায় যেত না। তারা অভিযোগ করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলের শিকার হলো। তাদের থানায় আটকে রেখে অভিযোগকারীদের ডেকে এনে মামলা নিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো এবং আদালতে চালান দেয়াটা অবিচার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

সার্বিক বিষয়ে পীরগজ্ঞ থানার ওসি জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপন ভাইদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বড় ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের অভিযোগ তারা থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাদের অভিযোগ না শুনে উল্টো তাদের থানায় আটকে রেখে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখানো এবং আদালতে চালান দেয়া কতটুকু আইন সম্মত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলা হয়েছে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে বলেন। এ ব্যাপারে পীরগজ্ঞ থানার এসআই রামকৃষ্ণের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।

বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ , ০২ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

পীরগঞ্জে জমি বিরোধে মামলা করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলে দুই ভাই

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

রংপুরে থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে উল্টো দুই ভাইকে সারারাত থানায় আটকে রেখে প্রতিপক্ষকে থানায় ডেকে এনে লিখিত অভিযোগ নিয়ে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পীরগজ্ঞ থানার পাচগাছি ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামে। আর থানায় আটকে রেখে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখানোর ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই থানার এস আই রামকৃষ্ণের বিরুদ্ধে।

থানায় আটক করে রেখে মামলা নিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো ফারাজুল ইসলাম সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামী সেলিম ও দেবর সাইদুলের সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে আপন ভাই সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বড় ভাই সাইফুলের সঙ্গে ছোট ভাই সেলিম ও সাইদুলের কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া বাধে। এ ঘটনায় বড় ভাই সাইফুল পীরগজ্ঞ থানায় ফোন করে এসআই রামকৃষ্ণকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা দুই পক্ষের বক্তব্য না শুনে ছোট ভাই সেলিমের দেয়া সীমানার বেড়া ভেঙ্গে ফেলার নির্দ্দেশ দেয় এবং তার উপস্থিতিতে ভেঙ্গে দেয়া হয়। এরপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা চলে যাওয়ার পর আবারও ভাইদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা আবারও ঘটনাস্থলে আসে। সে সেলিমকে গালে থাপ্পর দেয়। এতে তার চোখে দেয়া চশমা ভেঙ্গে যায়। এরপর এস আই রামকৃষ্ণ হ্যান্ড কাপ জোর করিয়ে পড়িয়ে আটক করার চেষ্টা করে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে পরিস্থিত শান্ত করে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে এবং লিখিত অভিযোগ করতে দুই ভাই সেলিম ও সহিদুল পীরগজ্ঞ থানায় গেলে পুলিশ তাদের বক্তব্য না শুনে এবং অভিযোগ না নিয়ে তাদের থানায় বসিয়ে রাখে। এরপর এস আই রামকৃষ্ণ সেলিম শহিদুলের বড় ভাই সাইফুল ও তার স্ত্রী রেবেকা বেগমকে থানায় ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে দুই ভাই সেলিম শহিদুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দুই ভাইকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সারারাত থানায় আটকে রেখে গতকাল দুপুরে বড় ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় আদালতে চালান দিয়েছে।

এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামী সেলিম ও দেবর সহিদুল অপরাধ করলে আর যাই হোক থানায় যেত না। তারা অভিযোগ করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলের শিকার হলো। তাদের থানায় আটকে রেখে অভিযোগকারীদের ডেকে এনে মামলা নিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো এবং আদালতে চালান দেয়াটা অবিচার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

সার্বিক বিষয়ে পীরগজ্ঞ থানার ওসি জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপন ভাইদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বড় ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের অভিযোগ তারা থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাদের অভিযোগ না শুনে উল্টো তাদের থানায় আটকে রেখে মামলা রেকর্ড করে গ্রেপ্তার দেখানো এবং আদালতে চালান দেয়া কতটুকু আইন সম্মত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলা হয়েছে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে বলেন। এ ব্যাপারে পীরগজ্ঞ থানার এসআই রামকৃষ্ণের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।