সিলেট সিটি থেকে ছবিসহ ব্যানার-পোস্টার বিলবোর্ড সরিয়ে নেয়ার বিজ্ঞপ্তি নগরজুড়ে সমালোচনা

রমজানের পবিত্রতা রক্ষার কথা বলে ব্যক্তির ছবিসহ ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না সরালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে এ বিজ্ঞপ্তিতে। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তি হলেও মেয়রের অনুমতি ছাড়া তা দেয়া হয়নি বলে গুঞ্জন চলছে। আর এ ধরনের বিজ্ঞপ্তির ফলে নগরীজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। গত সোমবার সিলেটের কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সব নাগরিক ও বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যতা রক্ষায় সিলেট সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যেকোন বিজ্ঞাপন প্রচারে কোন ব্যক্তির ছবি ও কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, কিংবা অন্যকোনভাবে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় তাহলে তা অনতিবিলম্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট-এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এ রকম বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে না। এটা ঠিক হয়নি।’

আসন্ত সিটি করপোরেশনের নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাদের নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর প্রবণতার মধ্যে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলো।

নগরীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক বিভাজকের মাঝে, রাস্তার পাশে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক বিভিন্ন দলের নেতারা প্রচারের জন্য পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড টানিয়েছেন। কেউ কেউ নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েও প্রচার চালিয়েছেন। মানুষের বাড়ি, বিভিন্ন অফিসের দেয়ালও ছেয়ে গেছে পোস্টারে।

বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে অনেকেই বলছেন এই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র ‘ধর্মকে ব্যবহার করে’ নিজের ‘ভোট ব্যাংক’ নিশ্চিত করতে চাইছেন। কারো মতে, এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি ব্যক্তির স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, প্রতিবছর রমজানের আগে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়; এ বছরও হয়েছে। মূলত রমজান মাসে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবিসহ বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

সামনে ঈদ ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান মেয়র বা আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতারা তোরণ, পোস্টার, বিলবোর্ডের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মতিউর বলেন, আইনগতভাবে কেউ এটা করতে পারবেন না।

সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অসুস্থ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা জানান, তিনি অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩ , ০২ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

সিলেট সিটি থেকে ছবিসহ ব্যানার-পোস্টার বিলবোর্ড সরিয়ে নেয়ার বিজ্ঞপ্তি নগরজুড়ে সমালোচনা

প্রতিনিধি, সিলেট

রমজানের পবিত্রতা রক্ষার কথা বলে ব্যক্তির ছবিসহ ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না সরালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে এ বিজ্ঞপ্তিতে। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তি হলেও মেয়রের অনুমতি ছাড়া তা দেয়া হয়নি বলে গুঞ্জন চলছে। আর এ ধরনের বিজ্ঞপ্তির ফলে নগরীজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। গত সোমবার সিলেটের কয়েকটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সব নাগরিক ও বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যতা রক্ষায় সিলেট সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যেকোন বিজ্ঞাপন প্রচারে কোন ব্যক্তির ছবি ও কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, কিংবা অন্যকোনভাবে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় তাহলে তা অনতিবিলম্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট-এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এ রকম বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে না। এটা ঠিক হয়নি।’

আসন্ত সিটি করপোরেশনের নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাদের নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর প্রবণতার মধ্যে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলো।

নগরীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক বিভাজকের মাঝে, রাস্তার পাশে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক বিভিন্ন দলের নেতারা প্রচারের জন্য পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড টানিয়েছেন। কেউ কেউ নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েও প্রচার চালিয়েছেন। মানুষের বাড়ি, বিভিন্ন অফিসের দেয়ালও ছেয়ে গেছে পোস্টারে।

বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে অনেকেই বলছেন এই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র ‘ধর্মকে ব্যবহার করে’ নিজের ‘ভোট ব্যাংক’ নিশ্চিত করতে চাইছেন। কারো মতে, এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি ব্যক্তির স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, প্রতিবছর রমজানের আগে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়; এ বছরও হয়েছে। মূলত রমজান মাসে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবিসহ বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

সামনে ঈদ ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান মেয়র বা আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতারা তোরণ, পোস্টার, বিলবোর্ডের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মতিউর বলেন, আইনগতভাবে কেউ এটা করতে পারবেন না।

সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অসুস্থ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা জানান, তিনি অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।