আইনজীবীদের নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনেও ধাক্কাধাক্কি

হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি ও উত্তেজনা এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ‘সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল বিকেল ৫টায় দুই দিনব্যাপী এই ভোটগ্রহণ শেষ হয়।

নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, এবার নির্বাচনে ভোট পড়েছে অর্ধেকের কম। নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে ৮ হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে দুই দিন ৪ হাজার ১৩৭ ভোট পড়েছে।’

নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটি নিয়ে ভোটগ্রহণের দ্বিতীয় দিনও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। এদিন দুই দলের আইনজীবীদের মিছিল, সেøাগান আর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যদিয়ে সকাল ১০টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। সকাল থেকেই ধীরে ধীরে ভোটকেন্দ্রের সামনে দুই দলের আইনজীবীরা জড়ো হতে থাকেন। এতে ক্রমেই বাড়তে থাকে উত্তাপ।

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জোরে জোরে স্লোগান দিতে থাকেন। একদল ‘ভোট চোর, ভোট চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। অন্যপক্ষ আবার এর উত্তর দিতে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় তুমুল উত্তেজনা শুরু হয়।

দুপুরের পর আবারও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এবারও দুই পক্ষই একে অন্যের উদ্দেশ্যে নানা ধরনের স্লোগান দেয়। দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ। সেখানে মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ। ছিল এপিবিএনের সদস্যরাও। দিনভরই ছিল দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচনে ‘সক্রিয় অংশগ্রহণ’ থেকে বিরত থাকেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবি করেন।

নির্বাচনের প্রথম দিন গত বুধবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি হয়। ওই সময় পুলিশ গিয়ে আইনজীবী, সাংবাদিকদের পিটিয়ে মিলনায়তন থেকে বের করে দেয়। পুলিশের হামলায় সেদিন আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ভোটগ্রহণ শুরু হতে বিলম্ব হয়েছিল সেদিন।

নির্বাচনের ব্যালট পেপার চুরি ও ছিঁড়ে ফেলা এবং নির্বাচনসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেয়ার অভিযোগে ওইদিন সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান। মামলায় বিএনপিপন্থি আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুসসহ ১২ জন আইনজীবীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ দিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে প্রথমদিনের পুলিশি হামলার বিষয়ে নালিশ দিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এজলাসে আপিল বিভাগের আট বিচারপতি আসন গ্রহণ করলে ওই ঘটনায় বিচার দাবি করে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ঘটনার বর্ণনায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল (বুধবার) ঘটেছে, যা চলমান। আজও (বৃহস্পতিবার) রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কি না তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি, ভুক্তভোগীরা বলবেন।’

প্রধান বিচারপতিকে সম্বোধন করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আপনি আমাদের অভিভাবক। আমরা কী এমন অপরাধ করেছি? গতকাল পুলিশ আইনজীবীদের নির্যাতন করল। এ থেকে নারী আইনজীবীরাও রেহাই পাননি। আমি পুলিশকে বলেছি, আমি সম্পাদক প্রার্থী। তারপরও আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। বার ভবনে আমাদের কক্ষগুলো লক করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি।’

এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা কোর্ট অফিসার। আমরা আপনাদের সম্মান করি। এখন আদালতে মামলা শুনব। আপনারা দুজন (ব্যারিস্টার খোকন ও কাজল) বেলা ১১টার সময় খাস কামরায় আসুন। আপনাদের কথা শোনা হবে। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে আনব।’

প্রধান বিচারপতির কিছুই করার নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর গতকাল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছুই নেই। তবে তিনি সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের বিষয়টির সমাধান করতে বলেছেন।’ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন এটা আমাদের বিষয় না। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।’

পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কি না জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে অন্য পক্ষ বাধা দেবে তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন।’

নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট

আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। এই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ। এই আইনজীবী সব বিষয়েই রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে অনুষ্ঠিত ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নিষেধাজ্ঞাদেশ চাওয়া হয়েছে। রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক এবং চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়ক (গত ১৩ মার্চ পদত্যাগ করেন) সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।

শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩ , ০৩ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

আইনজীবীদের নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনেও ধাক্কাধাক্কি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি ও উত্তেজনা এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ‘সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল বিকেল ৫টায় দুই দিনব্যাপী এই ভোটগ্রহণ শেষ হয়।

নির্বাচন পরিচালনায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, এবার নির্বাচনে ভোট পড়েছে অর্ধেকের কম। নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে ৮ হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে দুই দিন ৪ হাজার ১৩৭ ভোট পড়েছে।’

নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপকমিটি নিয়ে ভোটগ্রহণের দ্বিতীয় দিনও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। এদিন দুই দলের আইনজীবীদের মিছিল, সেøাগান আর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যদিয়ে সকাল ১০টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। সকাল থেকেই ধীরে ধীরে ভোটকেন্দ্রের সামনে দুই দলের আইনজীবীরা জড়ো হতে থাকেন। এতে ক্রমেই বাড়তে থাকে উত্তাপ।

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জোরে জোরে স্লোগান দিতে থাকেন। একদল ‘ভোট চোর, ভোট চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। অন্যপক্ষ আবার এর উত্তর দিতে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় তুমুল উত্তেজনা শুরু হয়।

দুপুরের পর আবারও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এবারও দুই পক্ষই একে অন্যের উদ্দেশ্যে নানা ধরনের স্লোগান দেয়। দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ। সেখানে মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ। ছিল এপিবিএনের সদস্যরাও। দিনভরই ছিল দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচনে ‘সক্রিয় অংশগ্রহণ’ থেকে বিরত থাকেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবি করেন।

নির্বাচনের প্রথম দিন গত বুধবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি হয়। ওই সময় পুলিশ গিয়ে আইনজীবী, সাংবাদিকদের পিটিয়ে মিলনায়তন থেকে বের করে দেয়। পুলিশের হামলায় সেদিন আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ভোটগ্রহণ শুরু হতে বিলম্ব হয়েছিল সেদিন।

নির্বাচনের ব্যালট পেপার চুরি ও ছিঁড়ে ফেলা এবং নির্বাচনসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেয়ার অভিযোগে ওইদিন সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান। মামলায় বিএনপিপন্থি আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুসসহ ১২ জন আইনজীবীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ দিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে প্রথমদিনের পুলিশি হামলার বিষয়ে নালিশ দিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এজলাসে আপিল বিভাগের আট বিচারপতি আসন গ্রহণ করলে ওই ঘটনায় বিচার দাবি করে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ঘটনার বর্ণনায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল (বুধবার) ঘটেছে, যা চলমান। আজও (বৃহস্পতিবার) রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কি না তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি, ভুক্তভোগীরা বলবেন।’

প্রধান বিচারপতিকে সম্বোধন করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আপনি আমাদের অভিভাবক। আমরা কী এমন অপরাধ করেছি? গতকাল পুলিশ আইনজীবীদের নির্যাতন করল। এ থেকে নারী আইনজীবীরাও রেহাই পাননি। আমি পুলিশকে বলেছি, আমি সম্পাদক প্রার্থী। তারপরও আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। বার ভবনে আমাদের কক্ষগুলো লক করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি।’

এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা কোর্ট অফিসার। আমরা আপনাদের সম্মান করি। এখন আদালতে মামলা শুনব। আপনারা দুজন (ব্যারিস্টার খোকন ও কাজল) বেলা ১১টার সময় খাস কামরায় আসুন। আপনাদের কথা শোনা হবে। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে আনব।’

প্রধান বিচারপতির কিছুই করার নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর গতকাল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছুই নেই। তবে তিনি সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের বিষয়টির সমাধান করতে বলেছেন।’ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন এটা আমাদের বিষয় না। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।’

পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কি না জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে অন্য পক্ষ বাধা দেবে তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন।’

নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট

আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। এই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ। এই আইনজীবী সব বিষয়েই রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে অনুষ্ঠিত ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নিষেধাজ্ঞাদেশ চাওয়া হয়েছে। রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক এবং চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়ক (গত ১৩ মার্চ পদত্যাগ করেন) সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।