আড়াইশ’ গ্রাম পর্যন্ত গরুর মাংস কিনতে পারবে ভোক্তারা, নির্দেশ অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিল

রমজানে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী রংপুর নগরীতে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। গতকাল মাংস ব্যবসায়ী ও নগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এ নতুন নিয়মের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং সিটি মেয়র। সভা সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী বিশেষ করে গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বলেছেন, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ায় মাংস বিক্রি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে গেছে।

মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবার গুলো দাম বৃদ্ধির কারণে গরুর মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। আগে প্রতি সপ্তাহে এক কেজি করে কিনলেও এখন অনেকে কিনছেন না আবার অনেকেই আধা কেজি মাংস কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষ আধা কেজিও মাংস কিনতে পারছেন না আর্থিক দুরাবস্থার কারণে। এ সময় অনেকেই অভিযোগ করেন মাংস ব্যবসায়ীরা আধাকেজির নিচে মাংস বিক্রি করতে চান না বিক্রিও করেন না। সে কারণে রমজান মাসে মাংস ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এক পোয়া বা আড়াইশ গ্রাম মাংস বিক্রি করেন সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

মেয়র মোস্তফা সভায় বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেলেও মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় করতে না পারায় মাংস কিনতে পারছেন না অনেকে। সে কারণে ক্রেতারা যাতে আড়াইশ গ্রাম পর্যন্ত গরুর মাংস কিনতে পারেন সে ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের নির্দ্দেশ দেন তিনি। সেইসঙ্গে রমজান মাসে মাংসের দাম যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির নেতাদের সজাক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান মেয়র।

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি বাজার মাংস বিক্রেতা আফছার আলী জানান, রংপুর নগরীতে ছোট বড় ২২টি বাজার ছাড়াও পাড়া-মহল্লার মোড়ে রয়েছে গরুর মাংস বিক্রির দোকান। প্রতিদিন কমপক্ষে ১৭৫-২০০ গরু জবাই করা হয়। বর্তমানে গরুর মাংসের প্রতি কেজি ৭০০ টাকা। মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের গরুর মাংস বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আফজাল হোসেন, ভ্যানচালক সাহাবুল হোসেন জানান, আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ পরিবারের এক বেলার জন্য দেড় থেকে দু’শ গ্রাম মাংস যথেষ্ট। রংপুরে এই পরিমাণ মাংস কেনাবেচার প্রচলন নেই। সর্বনিম্ন আধা কেজি মাংস কিনতে হয়, যার দাম ৩৫০ টাকা। এই পরিমাণ মাংস কিনলে একদিনের রোজগারের প্রায় পুরোটাই চলে যায়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষ, বিশেষত দরিদ্র মানুষ তাদের শিশুদের মুখে এক মাসে একবার মাংস তুলে দিতে পারছেন না। রোজার মাস শুরু হওয়ার আগে মহানগরীর সব মাংস ব্যবসায়ীকে ডেকে মানুষের সাধ্য অনুযায়ী মাংস কেনাবেচার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩ , ০৩ চৈত্র ১৪২৯, ২৪ শবান ১৪৪৪

রংপুরে রমজানে নতুন নিয়ম চালু

আড়াইশ’ গ্রাম পর্যন্ত গরুর মাংস কিনতে পারবে ভোক্তারা, নির্দেশ অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিল

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

রমজানে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী রংপুর নগরীতে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। গতকাল মাংস ব্যবসায়ী ও নগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এ নতুন নিয়মের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং সিটি মেয়র। সভা সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী বিশেষ করে গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বলেছেন, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ায় মাংস বিক্রি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে গেছে।

মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবার গুলো দাম বৃদ্ধির কারণে গরুর মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। আগে প্রতি সপ্তাহে এক কেজি করে কিনলেও এখন অনেকে কিনছেন না আবার অনেকেই আধা কেজি মাংস কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষ আধা কেজিও মাংস কিনতে পারছেন না আর্থিক দুরাবস্থার কারণে। এ সময় অনেকেই অভিযোগ করেন মাংস ব্যবসায়ীরা আধাকেজির নিচে মাংস বিক্রি করতে চান না বিক্রিও করেন না। সে কারণে রমজান মাসে মাংস ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এক পোয়া বা আড়াইশ গ্রাম মাংস বিক্রি করেন সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।

মেয়র মোস্তফা সভায় বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেলেও মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় করতে না পারায় মাংস কিনতে পারছেন না অনেকে। সে কারণে ক্রেতারা যাতে আড়াইশ গ্রাম পর্যন্ত গরুর মাংস কিনতে পারেন সে ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের নির্দ্দেশ দেন তিনি। সেইসঙ্গে রমজান মাসে মাংসের দাম যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির নেতাদের সজাক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান মেয়র।

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি বাজার মাংস বিক্রেতা আফছার আলী জানান, রংপুর নগরীতে ছোট বড় ২২টি বাজার ছাড়াও পাড়া-মহল্লার মোড়ে রয়েছে গরুর মাংস বিক্রির দোকান। প্রতিদিন কমপক্ষে ১৭৫-২০০ গরু জবাই করা হয়। বর্তমানে গরুর মাংসের প্রতি কেজি ৭০০ টাকা। মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের গরুর মাংস বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আফজাল হোসেন, ভ্যানচালক সাহাবুল হোসেন জানান, আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ পরিবারের এক বেলার জন্য দেড় থেকে দু’শ গ্রাম মাংস যথেষ্ট। রংপুরে এই পরিমাণ মাংস কেনাবেচার প্রচলন নেই। সর্বনিম্ন আধা কেজি মাংস কিনতে হয়, যার দাম ৩৫০ টাকা। এই পরিমাণ মাংস কিনলে একদিনের রোজগারের প্রায় পুরোটাই চলে যায়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষ, বিশেষত দরিদ্র মানুষ তাদের শিশুদের মুখে এক মাসে একবার মাংস তুলে দিতে পারছেন না। রোজার মাস শুরু হওয়ার আগে মহানগরীর সব মাংস ব্যবসায়ীকে ডেকে মানুষের সাধ্য অনুযায়ী মাংস কেনাবেচার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।