‘আরাভ জুয়েলারি’ নামে দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনকে ঘিরে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আরাভ খানকে নিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আলোচনার ঝড় বইছে। বিশ^সেরা অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন তারকা উদ্বোধন করতে গেলে আলোচনায় আসেন এই আরাভ খান, যিনি একটি হত্যা মামলার আসামি বলে জানা যায়। যার বাড়ি কোটালীপাড়ায়।
গতকাল কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামে গেলেই মুখে মুখে শোনা যায় ‘আরাভ খানের’ কথা। তার প্রকৃত নাম সোহাগ মোল্লা এবং আশুতিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে বলে স্থানীয়রাও জানিয়েছেন। অনেকেরই প্রশ্ন সে কিভাবে রাতারাতি এত টাকার মালিক বনে গেলেন। কথা হলে নিকটাত্মীয়রাও এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তবে কথা বলার জন্য তার মা-বাবা বা ভাই-বোন কাউকে পাওয়া যায়নি।
সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে সোহাগ মোল্লা তার দুই বোন ও মা-বাবাকে দুবাই নিয়ে গেছে।’ ‘সে অল্প দিনে এত টাকার মালিক কিভাবে হলো অবাক বিষয়’ বলেও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
সোহাগ মোল্লা আর আরাভ খান একই ব্যক্তি বলে নিশ্চিত করেন হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না। বিপুল অর্থের মালিক হওয়া নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গত পাঁচ সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কিভাবে এত টাকার মালিক হলো এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
আরাভ খানের বিরুদ্ধে ৯টি ওয়ারেন্ট থানায় এসেছে বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমার থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার জন্য চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু তার কোন হদিস আমরা পাইনি।’
স্থানীয় ও আত্মীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আরাভ খান তথা সোহাগ মোল্লার বাবা দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লা এক সময় বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়িপাতিল বিক্রি করতেন। এখানেই ১৯৮৮ সালে সোহাগ মোল্লার জন্ম হয়। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে সোহাগ মোল্লা এসএসসি পাস করে। দরিদ্রতার কারণে এরপর আর তার লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারী থেকে ২০০৮ সালে ভাগ্যের অন্বেষণে সে ঢাকা চলে যায়।
জানা গেছে, ঢাকা গিয়ে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় মোল্লা আপন। জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতে। ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের কারণে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজন খানেক মামলা হয়। এরপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খান ভারতে কলকাতায় পালিয়ে যায়। সেখান থেকে আরাভ খান চলে যায় দুবাইয়ে।
শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ , ০৪ চৈত্র ১৪২৯, ২৫ শবান ১৪৪৪
প্রতিনিধি, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)
‘আরাভ জুয়েলারি’ নামে দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনকে ঘিরে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আরাভ খানকে নিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় আলোচনার ঝড় বইছে। বিশ^সেরা অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন তারকা উদ্বোধন করতে গেলে আলোচনায় আসেন এই আরাভ খান, যিনি একটি হত্যা মামলার আসামি বলে জানা যায়। যার বাড়ি কোটালীপাড়ায়।
গতকাল কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামে গেলেই মুখে মুখে শোনা যায় ‘আরাভ খানের’ কথা। তার প্রকৃত নাম সোহাগ মোল্লা এবং আশুতিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে বলে স্থানীয়রাও জানিয়েছেন। অনেকেরই প্রশ্ন সে কিভাবে রাতারাতি এত টাকার মালিক বনে গেলেন। কথা হলে নিকটাত্মীয়রাও এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তবে কথা বলার জন্য তার মা-বাবা বা ভাই-বোন কাউকে পাওয়া যায়নি।
সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে সোহাগ মোল্লা তার দুই বোন ও মা-বাবাকে দুবাই নিয়ে গেছে।’ ‘সে অল্প দিনে এত টাকার মালিক কিভাবে হলো অবাক বিষয়’ বলেও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
সোহাগ মোল্লা আর আরাভ খান একই ব্যক্তি বলে নিশ্চিত করেন হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না। বিপুল অর্থের মালিক হওয়া নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গত পাঁচ সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কিভাবে এত টাকার মালিক হলো এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
আরাভ খানের বিরুদ্ধে ৯টি ওয়ারেন্ট থানায় এসেছে বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমার থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার জন্য চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু তার কোন হদিস আমরা পাইনি।’
স্থানীয় ও আত্মীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আরাভ খান তথা সোহাগ মোল্লার বাবা দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লা এক সময় বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়িপাতিল বিক্রি করতেন। এখানেই ১৯৮৮ সালে সোহাগ মোল্লার জন্ম হয়। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে সোহাগ মোল্লা এসএসসি পাস করে। দরিদ্রতার কারণে এরপর আর তার লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারী থেকে ২০০৮ সালে ভাগ্যের অন্বেষণে সে ঢাকা চলে যায়।
জানা গেছে, ঢাকা গিয়ে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় মোল্লা আপন। জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতে। ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের কারণে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজন খানেক মামলা হয়। এরপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খান ভারতে কলকাতায় পালিয়ে যায়। সেখান থেকে আরাভ খান চলে যায় দুবাইয়ে।