ইউক্রেনে রাশিয়া ব্যাপক আকারে যুদ্ধাপরাধ করেছে : তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট

ইউক্রেনে ব্যাপক আকারে যুদ্ধাপরাধ করেছে রাশিয়া। এর মধ্যে ইচ্ছাকৃত হত্যা, নির্যাতন এবং শিশুদের নির্বাসনের মতো অপরাধগুলোও রয়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি তদন্তকারী সংস্থা এই তথ্য সামনে এনেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধসংক্রান্ত ওই রিপোর্টটি প্রকাশ করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকয়ারি অন ইউক্রেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিশদ বিবরণ দেয়া হয়েছে এবং কিছু কাজ মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

৫ শতাধিক সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি স্যাটেলাইট চিত্র, বন্দীদের আটক রাখা হয় এমন স্থাপনা পরিদর্শন এবং মরদেহ কবর দেয়া হয়েছে এমন জায়গাগুলো পরিদর্শনের ভিত্তিতে এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

এছাড়া জাতিসংঘসমর্থিত তদন্তকারী সংস্থার এই রিপোর্টটি এমন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে যখন হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইউক্রেন থেকে জোরপূর্বক শিশুদের নির্বাসন এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়ান কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক এই তদন্ত কমিশন বলেছে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ওপর ‘নির্বিচারে’ আক্রমণ চালিয়েছে, নির্যাতন করেছে, বেসামরিক লোকদের হত্যা করেছে এবং হামলা থেকে রক্ষায় ইউক্রেনের জনসংখ্যার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিস্তৃত পরিসরের যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি... রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ অসংখ্যবার আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন করেছে।’

তদন্ত কমিশনের এই রিপোর্টে রাশিয়ান বন্দীশালাগুলোতে ব্যবহৃত নির্যাতনের পদ্ধতির বিশদ বিবরণও দেয়া হয়েছে। এসব বন্দীশালায় ভুক্তভোগীদের সামরিক ফোন দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হতো এবং ‘পাখির মতো’ ছাদের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হতো। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই ইউক্রেনে নৃশংসতা বা বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করে এসেছে। নিজের সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সাংবাদিকদের বলেছেন, মস্কো নিয়মিত এই ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠতা থাকলে ‘আমরা নির্দিষ্ট কেস বিশ্লেষণ করতে, প্রশ্নের উত্তর দিতে, ডেটা, পরিসংখ্যান এবং তথ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত। কিন্তু যদি তারা (প্রতিবেদন প্রকাশকারীরা) পক্ষপাতদুষ্ট হয়, যদি তারা শুধুমাত্র একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে, তাহলে এই ধরনের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কোন লাভ নেই।’ এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এই প্রথম যুদ্ধবিমান পাচ্ছে ইউক্রেন। পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ডুডা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনের হাতে চারটি সাবেক সোভিয়েত আমলে তৈরি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান তুলে দেয়া হবে। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি এফএ-৫০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ এস বিমান ইউক্রেনকে দিয়েছিল পোল্যান্ড। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধবিমান চাইছে। তাই ওই বিমানগুলো বদলে ইউক্রেনকে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই প্রথম ইউক্রেনকে কেউ যুদ্ধবিমান দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই ইউক্রেন পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে যুদ্ধবিমান দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। পোল্যান্ড জানিয়েছে, সব দেশ একসঙ্গে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো উচিত। স্লোভাকিয়াও জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দিতে প্রস্তুত।

ইউক্রেন অবশ্য আরও আধুনিক যুদ্ধবিমান চায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী মিগ-২৯ চালাতে জানে। ফলে বিমান হাতে পেলেই তারা চালাতে পারবে। কিন্তু মার্কিন এফ-১৬ এর মতো বিমান চালাতে গেলে তাদের অন্তত নয় মাসের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আর সেই সময় এখন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হাতে নেই। সে কারণেই মিগ-২৯ তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো যুদ্ধবিমান।

এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়ার তীব্র লড়াই অব্যাহত থাকার মাঝেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবাকে ফোন করেছেন। ফোনালাপে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেইজিং উদ্বিগ্ন বলে জানান তিনি। মস্কোর সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনার আহ্বানও জানিয়েছেন কিন গ্যাং। বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কিন গ্যাং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবাকে টেলিফোনে আরও বলেছেন, চীন শান্তি আলোচনার অগ্রগতি দেখতে চায়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘চীন ইউক্রেন ইস্যুতে একটি উদ্দেশ্যমূলক ও ন্যায্য অবস্থানে থেকে সমর্থন করেছে।’

চীনের এই মন্ত্রী আরও বলেন, চীন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

শান্তি আলোচনার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও আহ্বান জানান তিনি।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলেবাও টুইটারে আলাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক অখ-তার নীতির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।’ বৃহস্পতিবার চীনের এই ফোনকল এলো যখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বেইজিং ১২-দফার প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগে দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে চীন।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে। এখনো যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। এদিকে, যুদ্ধের কারণে থেমে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। দেশে দেশে বেড়েছে জ্বালানিসহ সব পণ্যের দাম।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্ভবত আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে রাশিয়া সফর করবেন। যদিও এখনো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের বৈঠকের দিন নিশ্চিত করেনি কোনো পক্ষই।

image

ইউক্রেনের কিয়েভে গোলাবর্ষণের পরে একটি ক্ষতিগ্রস্ত লজিস্টিক কেন্দ্রে আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, সেখানে একজন ইউক্রেনীয় সেনাকর্মীকে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে -এপি

আরও খবর
যুক্তরাজ্য মন্ত্রীদের সরকারি ফোনে টিকটক নিষিদ্ধ করল
দুবাইতে ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে ভিক্ষা
ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে আদালতে ইমরান খান
৮৫২ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনছে ভারত
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের আর অস্ত্র দেবে না ইরান

শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ , ০৪ চৈত্র ১৪২৯, ২৫ শবান ১৪৪৪

ইউক্রেনে রাশিয়া ব্যাপক আকারে যুদ্ধাপরাধ করেছে : তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট

image

ইউক্রেনের কিয়েভে গোলাবর্ষণের পরে একটি ক্ষতিগ্রস্ত লজিস্টিক কেন্দ্রে আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, সেখানে একজন ইউক্রেনীয় সেনাকর্মীকে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে -এপি

ইউক্রেনে ব্যাপক আকারে যুদ্ধাপরাধ করেছে রাশিয়া। এর মধ্যে ইচ্ছাকৃত হত্যা, নির্যাতন এবং শিশুদের নির্বাসনের মতো অপরাধগুলোও রয়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি তদন্তকারী সংস্থা এই তথ্য সামনে এনেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধসংক্রান্ত ওই রিপোর্টটি প্রকাশ করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব ইনকয়ারি অন ইউক্রেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিশদ বিবরণ দেয়া হয়েছে এবং কিছু কাজ মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

৫ শতাধিক সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি স্যাটেলাইট চিত্র, বন্দীদের আটক রাখা হয় এমন স্থাপনা পরিদর্শন এবং মরদেহ কবর দেয়া হয়েছে এমন জায়গাগুলো পরিদর্শনের ভিত্তিতে এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

এছাড়া জাতিসংঘসমর্থিত তদন্তকারী সংস্থার এই রিপোর্টটি এমন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে যখন হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইউক্রেন থেকে জোরপূর্বক শিশুদের নির্বাসন এবং বেসামরিক অবকাঠামোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়ান কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক এই তদন্ত কমিশন বলেছে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ওপর ‘নির্বিচারে’ আক্রমণ চালিয়েছে, নির্যাতন করেছে, বেসামরিক লোকদের হত্যা করেছে এবং হামলা থেকে রক্ষায় ইউক্রেনের জনসংখ্যার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিস্তৃত পরিসরের যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি... রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ অসংখ্যবার আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন করেছে।’

তদন্ত কমিশনের এই রিপোর্টে রাশিয়ান বন্দীশালাগুলোতে ব্যবহৃত নির্যাতনের পদ্ধতির বিশদ বিবরণও দেয়া হয়েছে। এসব বন্দীশালায় ভুক্তভোগীদের সামরিক ফোন দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হতো এবং ‘পাখির মতো’ ছাদের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হতো। রাশিয়া অবশ্য বরাবরই ইউক্রেনে নৃশংসতা বা বেসামরিক নাগরিকদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করে এসেছে। নিজের সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সাংবাদিকদের বলেছেন, মস্কো নিয়মিত এই ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠতা থাকলে ‘আমরা নির্দিষ্ট কেস বিশ্লেষণ করতে, প্রশ্নের উত্তর দিতে, ডেটা, পরিসংখ্যান এবং তথ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত। কিন্তু যদি তারা (প্রতিবেদন প্রকাশকারীরা) পক্ষপাতদুষ্ট হয়, যদি তারা শুধুমাত্র একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে, তাহলে এই ধরনের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কোন লাভ নেই।’ এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এই প্রথম যুদ্ধবিমান পাচ্ছে ইউক্রেন। পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ডুডা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনের হাতে চারটি সাবেক সোভিয়েত আমলে তৈরি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান তুলে দেয়া হবে। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি এফএ-৫০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ এস বিমান ইউক্রেনকে দিয়েছিল পোল্যান্ড। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধবিমান চাইছে। তাই ওই বিমানগুলো বদলে ইউক্রেনকে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই প্রথম ইউক্রেনকে কেউ যুদ্ধবিমান দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই ইউক্রেন পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে যুদ্ধবিমান দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। পোল্যান্ড জানিয়েছে, সব দেশ একসঙ্গে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো উচিত। স্লোভাকিয়াও জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দিতে প্রস্তুত।

ইউক্রেন অবশ্য আরও আধুনিক যুদ্ধবিমান চায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী মিগ-২৯ চালাতে জানে। ফলে বিমান হাতে পেলেই তারা চালাতে পারবে। কিন্তু মার্কিন এফ-১৬ এর মতো বিমান চালাতে গেলে তাদের অন্তত নয় মাসের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আর সেই সময় এখন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হাতে নেই। সে কারণেই মিগ-২৯ তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো যুদ্ধবিমান।

এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়ার তীব্র লড়াই অব্যাহত থাকার মাঝেই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবাকে ফোন করেছেন। ফোনালাপে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেইজিং উদ্বিগ্ন বলে জানান তিনি। মস্কোর সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনার আহ্বানও জানিয়েছেন কিন গ্যাং। বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কিন গ্যাং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবাকে টেলিফোনে আরও বলেছেন, চীন শান্তি আলোচনার অগ্রগতি দেখতে চায়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘চীন ইউক্রেন ইস্যুতে একটি উদ্দেশ্যমূলক ও ন্যায্য অবস্থানে থেকে সমর্থন করেছে।’

চীনের এই মন্ত্রী আরও বলেন, চীন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

শান্তি আলোচনার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও আহ্বান জানান তিনি।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলেবাও টুইটারে আলাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক অখ-তার নীতির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।’ বৃহস্পতিবার চীনের এই ফোনকল এলো যখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বেইজিং ১২-দফার প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগে দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে চীন।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে। এখনো যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। এদিকে, যুদ্ধের কারণে থেমে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। দেশে দেশে বেড়েছে জ্বালানিসহ সব পণ্যের দাম।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্ভবত আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে রাশিয়া সফর করবেন। যদিও এখনো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের বৈঠকের দিন নিশ্চিত করেনি কোনো পক্ষই।