রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালে নতুন স্বপ্ন

‘আশ্রয়ণে অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন-মানের পরিবর্তন শুরু হয়েছে।

‘দেশের একটি পরিবারও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে উপজেলায় ১২৭টি পরিবার পেয়েছেন দুই শতাংশ জমি ও একটি সেমিপাকা ঘর। সেই সঙ্গে ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ সবাই ধরনের নাগরিক সুবিধা। এছাড়া আগামী বুধবার আরো ২২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে।

জানা গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় ২২টি সহ এ উপজেলা ১৪৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে। আর সর্বশেষ এই হস্থান্তরের মধ্যে দিয়ে এ উপজেলা মুক্ত হবে ভূমিহীন। কালীগঞ্জ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের পুনসহি মৌজায় ০.১৮ একর জমিতে ০৯টি, তুমুলিয়া ইউনিয়নের সোম মৌজায় ০.১৪ একর জমিতে ০৭টি এবং বক্তারপুর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণগাঁও মৌজায় ০.১৮ একর জমিতে ০৯টি ঘরসহ মোট ২৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদানের মাধ্যমে এ উপজেলায় কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২য় পর্যায়ে বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর মৌজায় ০.৪০ একর জমিতে ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়। প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ে তুমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজনগর মৌজায় ২.০৮ একর জমিতে ১০৪টি ভূমিহীন পরিবারকে একত্রে বসবাসের সুযোগ করে দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া কালীগঞ্জ উপজেলার আশ্রয়ণের বাসিন্দা শান্তি রবি দাস, লিলি বেগম, নয়ন চন্দ্র সূত্রধর, বাতেন, প্রতিবন্ধী সাথী আক্তারসহ আরো অনেকেই জানান, কিছুদিন আগেও তারা ভাবেননি নিজেদের ভালো একটা ঠিকানা হবে। এখন সেটি হয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন। তাদের হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ হয়েছে। বাস্তব হলেও তারা সবাই এটাকে এটা স্বপ্নের মতোই মনে করছেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে শেখের বেটির জন্য সবাই দোয়া করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান জানান, আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি। এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা ইতোমধ্যে গঠন করেছেন বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতি। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি, মৎস্য, ব্লক-বাটিক, সেলাই কাজসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষন নিচ্ছে তারা। অনেকের একাডেমিক শিক্ষা না থাকলেও নানা প্রশিক্ষণে হয়ে উঠছেন স্বশিক্ষিত। জেলা প্রশাসন ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকিতে ক্রমেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের নানা দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা। নতুন করে উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজনগর গ্রামে জমিসহ আরও ২২টি ঘর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আগামী বুধবার (২২ মার্চ) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে। আর এরই মধ্যে দিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলাকে ‘ক শ্রেণী’র আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন বলেও জানান ইউএনও।

রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩ , ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ২৬ শবান ১৪৪৪

রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালে নতুন স্বপ্ন

প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)

image

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঘর পেলেন গৃহহীন পরিবার -সংবাদ

‘আশ্রয়ণে অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন-মানের পরিবর্তন শুরু হয়েছে।

‘দেশের একটি পরিবারও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে উপজেলায় ১২৭টি পরিবার পেয়েছেন দুই শতাংশ জমি ও একটি সেমিপাকা ঘর। সেই সঙ্গে ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ সবাই ধরনের নাগরিক সুবিধা। এছাড়া আগামী বুধবার আরো ২২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে।

জানা গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় ২২টি সহ এ উপজেলা ১৪৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে। আর সর্বশেষ এই হস্থান্তরের মধ্যে দিয়ে এ উপজেলা মুক্ত হবে ভূমিহীন। কালীগঞ্জ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের পুনসহি মৌজায় ০.১৮ একর জমিতে ০৯টি, তুমুলিয়া ইউনিয়নের সোম মৌজায় ০.১৪ একর জমিতে ০৭টি এবং বক্তারপুর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণগাঁও মৌজায় ০.১৮ একর জমিতে ০৯টি ঘরসহ মোট ২৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদানের মাধ্যমে এ উপজেলায় কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২য় পর্যায়ে বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর মৌজায় ০.৪০ একর জমিতে ২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়। প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ে তুমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজনগর মৌজায় ২.০৮ একর জমিতে ১০৪টি ভূমিহীন পরিবারকে একত্রে বসবাসের সুযোগ করে দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া কালীগঞ্জ উপজেলার আশ্রয়ণের বাসিন্দা শান্তি রবি দাস, লিলি বেগম, নয়ন চন্দ্র সূত্রধর, বাতেন, প্রতিবন্ধী সাথী আক্তারসহ আরো অনেকেই জানান, কিছুদিন আগেও তারা ভাবেননি নিজেদের ভালো একটা ঠিকানা হবে। এখন সেটি হয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন। তাদের হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ হয়েছে। বাস্তব হলেও তারা সবাই এটাকে এটা স্বপ্নের মতোই মনে করছেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে শেখের বেটির জন্য সবাই দোয়া করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান জানান, আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি। এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা ইতোমধ্যে গঠন করেছেন বেশ কয়েকটি সমবায় সমিতি। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি, মৎস্য, ব্লক-বাটিক, সেলাই কাজসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষন নিচ্ছে তারা। অনেকের একাডেমিক শিক্ষা না থাকলেও নানা প্রশিক্ষণে হয়ে উঠছেন স্বশিক্ষিত। জেলা প্রশাসন ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকিতে ক্রমেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের নানা দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা। নতুন করে উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজনগর গ্রামে জমিসহ আরও ২২টি ঘর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আগামী বুধবার (২২ মার্চ) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে। আর এরই মধ্যে দিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলাকে ‘ক শ্রেণী’র আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন বলেও জানান ইউএনও।