প্রতিবাদে মিছিল, বিক্ষোভ, সমাবেশ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা ও নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখমের প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

বিকেল পাঁচটার দিকে বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে হোগলা সেতু এলাকা ঘুরে বগা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তালুকদার মো. জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিথী রানী, আমিনুল ইসলাম, মো. শাহাবুদ্দিন প্রমুথ। বক্তারা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজকে দায়ী করেন। তারা এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ওই সমাবেশ এ সময় দুই সহাস্রাধিক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলার বগা বন্দরের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল মোতালেবের ছেলে বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহমুদ হাসান অভিযোগ করেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে তার বাবা আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাজারো নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় ‘জনতা ভবন’ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার উদ্দেশ্যে আনন্দ র‌্যালি বের করেন। র‌্যালিটি সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে পৌঁছালে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের উপস্থিত নেতৃত্বে ও হুকুমে তার সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাবার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তার বাবার ডান পা ভেঙে যায়, কোপের আঘাতে তার ফুসফুস ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ও ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকে। তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

মাহামুদ এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এর মুঠোফেনে জানান, ঘটনার সময় আমি উপজেলা পরিষদের গেট থেকে ৩০০-৪০০শ গজ দূরে জনতা ভবনের সামনে ছিলাম। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান। উল্লেখ্য গত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আ স ম ফিরোজ সমর্থিত নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর, শেখ হাসিন ও স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজ ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি মিছিল উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে দিয়ে জনতা ভবনে যাওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রশাসন মিছিলে বাধা দেয়। এক পুলিশ লাঠিচার্য শুরু করলে মোতালেব হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার ও ৬ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর চার পাঁচজন নেতাকর্মী নিয়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদার আওয়ামী লীগ জনতা ভবনের দিকে যেতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মোতালেব হাওলাদার আহত হয়। পড়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইছিউতে আছেন। রাতে, অস্ত্রোপচারের কথা রয়েছে বলে তার মেয়ে মোসা. রেসমা জানিয়েছেন। এদিকে পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশ আহত হওয়ার অভিযোগে নাম উল্লেখ না করে ২৫০-৩০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসআই মো. মনির হোসেন বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন।

রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩ , ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ২৬ শবান ১৪৪৪

বাউফলে উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর হামলা

প্রতিবাদে মিছিল, বিক্ষোভ, সমাবেশ

প্রতিনিধি, বাউফল (পটুয়াখালী)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা ও নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখমের প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

বিকেল পাঁচটার দিকে বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে হোগলা সেতু এলাকা ঘুরে বগা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তালুকদার মো. জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিথী রানী, আমিনুল ইসলাম, মো. শাহাবুদ্দিন প্রমুথ। বক্তারা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজকে দায়ী করেন। তারা এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ওই সমাবেশ এ সময় দুই সহাস্রাধিক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলার বগা বন্দরের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল মোতালেবের ছেলে বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহমুদ হাসান অভিযোগ করেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে তার বাবা আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাজারো নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় ‘জনতা ভবন’ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার উদ্দেশ্যে আনন্দ র‌্যালি বের করেন। র‌্যালিটি সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে পৌঁছালে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের উপস্থিত নেতৃত্বে ও হুকুমে তার সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাবার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তার বাবার ডান পা ভেঙে যায়, কোপের আঘাতে তার ফুসফুস ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ও ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকে। তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

মাহামুদ এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এর মুঠোফেনে জানান, ঘটনার সময় আমি উপজেলা পরিষদের গেট থেকে ৩০০-৪০০শ গজ দূরে জনতা ভবনের সামনে ছিলাম। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান। উল্লেখ্য গত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আ স ম ফিরোজ সমর্থিত নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর, শেখ হাসিন ও স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজ ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় জনতা ভবনে জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি মিছিল উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে দিয়ে জনতা ভবনে যাওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রশাসন মিছিলে বাধা দেয়। এক পুলিশ লাঠিচার্য শুরু করলে মোতালেব হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার ও ৬ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর চার পাঁচজন নেতাকর্মী নিয়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদার আওয়ামী লীগ জনতা ভবনের দিকে যেতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মোতালেব হাওলাদার আহত হয়। পড়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইছিউতে আছেন। রাতে, অস্ত্রোপচারের কথা রয়েছে বলে তার মেয়ে মোসা. রেসমা জানিয়েছেন। এদিকে পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশ আহত হওয়ার অভিযোগে নাম উল্লেখ না করে ২৫০-৩০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসআই মো. মনির হোসেন বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন।