ওয়ানডে ইতিহাসে টাইগারদের সর্বোচ্চ রান

নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ।

গতকাল সিলেটে অনুষ্ঠিত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। ৩৭ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। এর আগে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান ছিল ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান। ২০১৯ সালে জুনে ওয়ানডে বিশ^কাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮১ রানের টার্গেটে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান করেছিল বাংলাদেশ।

১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে ওয়ানডেতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ।

চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের জোড়া নব্বই প্লাস ইনিংসে ৩৩৮/৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। দু’জনেই সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও নার্ভাস-নাইন্টিতে আউট হন। মিডিয়াম পেসার হুমের বলে সাকিব ৯৩ কট বিহাইন্ড ও হৃদয় ৯২ রান করে বোল্ড হন।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ৩ রানে সাজঘরে ফিরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে সিøপে পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন তিনি।

দলীয় ১৫ রানে তামিমকে হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও ইনফর্ম নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু প্রথম পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পেসার কার্টিস ক্যাম্পারের বলে শর্ট কভারে পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচে বিদায় নেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলা লিটন।

ভালো শুরু করেও ১৭তম ওভারে স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের বলে বোল্ড হন ৩৪ বলে ২৫ রান করা শান্ত।

৮১ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান সাকিব ও হৃদয়। ২১তম ওভারে ১শ’, ৩০তম ওভারে দলের রান দেড়শ’ নেন তারা। ৬৫ বল খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৩তম ও টানা তিন ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই ওয়ানডেতেও অর্ধশতক করেছিলেন সাকিব।

৫৫ বল খেলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন হৃদয়। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতে অর্ধশতক করলেন হৃদয়। তার আগের ওভারে স্পিনার হ্যারি টেক্টরের বলে ৫টি চারে ২২ রান তুলে ৮৯ রানে পৌঁছেন ২০১৯ সালের জুনের পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছিলেন সাকিব।

কিন্তু ৩৮তম ওভারে পেসার গ্রাহাম হুমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯৩ রানে আউট হন সাকিব। ৮৯ বল খেলে ৯টি চারে এই ইনিংস খেলার পথে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৭ হাজার রান করেন সাকিব। চতুর্থ উইকেটে ১২৫ বলে ১৩৫ রান যোগ করে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন সাকিব-হৃদয়।

দলীয় ২১৬ রানে সাকিবের বিদায়ে উইকেটে এসেই মারমুখী হয়ে উঠেন মুশফিকুর রহিম। একবার জীবন পেয়ে ৩টি করে চার-ছক্কায় হুমের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৬ বলে ৪৪ রান করেন মুশি। পঞ্চম উইকেটে হৃদয়ের সঙ্গে ৪৯ বলে ৮০ রান যোগ করে বাংলাদেশকে ৩শ’ রান করার পথ মসৃণ করেন মুশফিক।

মুশফিক ফেরার ওভারেই নাভার্স-নাইন্টিতে আউট হন হৃদয়। হুমের বলে বোল্ড হবার আগে ৮টি চার ও ২টি ছয়ে ৮৫ বলে ৯২ রান করেন তিনি। অভিষেকে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে আউট হন হৃদয়।

শেষদিকে ইয়াসির আলি ১০ বলে ১৭, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ ৭ বলে ১১ রানে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান। আয়ারল্যান্ডের হুম ৬০ রানে ৪ উইকেট নেন।

রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩ , ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ২৬ শবান ১৪৪৪

ওয়ানডে ইতিহাসে টাইগারদের সর্বোচ্চ রান

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

সর্বোচ্চ উইকেট এবাদতের উদযাপন

নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ।

গতকাল সিলেটে অনুষ্ঠিত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। ৩৭ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। এর আগে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান ছিল ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান। ২০১৯ সালে জুনে ওয়ানডে বিশ^কাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৮১ রানের টার্গেটে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান করেছিল বাংলাদেশ।

১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে ওয়ানডেতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ।

চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের জোড়া নব্বই প্লাস ইনিংসে ৩৩৮/৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। দু’জনেই সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও নার্ভাস-নাইন্টিতে আউট হন। মিডিয়াম পেসার হুমের বলে সাকিব ৯৩ কট বিহাইন্ড ও হৃদয় ৯২ রান করে বোল্ড হন।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ৩ রানে সাজঘরে ফিরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে সিøপে পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন তিনি।

দলীয় ১৫ রানে তামিমকে হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও ইনফর্ম নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু প্রথম পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পেসার কার্টিস ক্যাম্পারের বলে শর্ট কভারে পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচে বিদায় নেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলা লিটন।

ভালো শুরু করেও ১৭তম ওভারে স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের বলে বোল্ড হন ৩৪ বলে ২৫ রান করা শান্ত।

৮১ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান সাকিব ও হৃদয়। ২১তম ওভারে ১শ’, ৩০তম ওভারে দলের রান দেড়শ’ নেন তারা। ৬৫ বল খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৩তম ও টানা তিন ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই ওয়ানডেতেও অর্ধশতক করেছিলেন সাকিব।

৫৫ বল খেলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন হৃদয়। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতে অর্ধশতক করলেন হৃদয়। তার আগের ওভারে স্পিনার হ্যারি টেক্টরের বলে ৫টি চারে ২২ রান তুলে ৮৯ রানে পৌঁছেন ২০১৯ সালের জুনের পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছিলেন সাকিব।

কিন্তু ৩৮তম ওভারে পেসার গ্রাহাম হুমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯৩ রানে আউট হন সাকিব। ৮৯ বল খেলে ৯টি চারে এই ইনিংস খেলার পথে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৭ হাজার রান করেন সাকিব। চতুর্থ উইকেটে ১২৫ বলে ১৩৫ রান যোগ করে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন সাকিব-হৃদয়।

দলীয় ২১৬ রানে সাকিবের বিদায়ে উইকেটে এসেই মারমুখী হয়ে উঠেন মুশফিকুর রহিম। একবার জীবন পেয়ে ৩টি করে চার-ছক্কায় হুমের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৬ বলে ৪৪ রান করেন মুশি। পঞ্চম উইকেটে হৃদয়ের সঙ্গে ৪৯ বলে ৮০ রান যোগ করে বাংলাদেশকে ৩শ’ রান করার পথ মসৃণ করেন মুশফিক।

মুশফিক ফেরার ওভারেই নাভার্স-নাইন্টিতে আউট হন হৃদয়। হুমের বলে বোল্ড হবার আগে ৮টি চার ও ২টি ছয়ে ৮৫ বলে ৯২ রান করেন তিনি। অভিষেকে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে আউট হন হৃদয়।

শেষদিকে ইয়াসির আলি ১০ বলে ১৭, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ ৭ বলে ১১ রানে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রান। আয়ারল্যান্ডের হুম ৬০ রানে ৪ উইকেট নেন।