সালিশি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে আইসিসি বাংলাদেশ কমিশন অন আরবিট্রেশন। গতকাল এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন আইসিসি বাংলাদেশ কমিশন অন আরবিট্রেশন এবং এডিআর চেয়ারম্যান নিহাদ কবির। দেশ ও বিদেশের শতাধিক ব্যক্তি ওয়েবিনারে অংশ নেন। ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
ওয়েবিনারে নিহাদ কবির বলেন, ‘ফরেন অ্যান্ড লোকাল আরবিট্রাল অ্যাওয়ার্ড এনফোর্সমেন্টের জন্য সালিশি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছি। আশা করি, দ্রুত তা সংশোধন হয়ে যাবে।’
আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) প্যারিসে সদর দপ্তরের সঙ্গে সালিশি আদালত তার শতবর্ষ উদ্যাপন করছে। ১০০ বছর আগে ১৯ জানুয়রি ১৯২৩ তারিখে আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ফরাসি বাণিজ্যমন্ত্রী এতিয়েন ক্লেমেন্টেলের নেতৃত্বে এবং ‘শান্তির বণিক বা মার্চেন্ড অব পিস’ নামে পরিচিত আইসিসির প্রতিষ্ঠাতাদের নেতৃত্বে আইসিসি কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে এই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নিত হতে যাচ্ছে। বিদেশি সালিসী পুরস্কার কার্যকর করার করলে বিদেশি এবং স্থানীয় উভয় বিনিয়োগের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। সালিসি রায় কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনী কাঠামো এবং সাধারণভাবে সালিশে উন্নতির জন্য উল্লেখযোগ্য জায়গা রয়েছে।
ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন আইসিসি কোর্টের মহাসচিব আলেকজান্ডার ফেসাস।
আইসিসি কোর্টের প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া স্যালোমন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশিকে পছন্দের পদ্ধতিতে পরিণত করতে আইসিসি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রকৃতপক্ষে আইসিসি ১৯৫৮ ইয়র্ক কনভেনশন গ্রহণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল।’
মিসেস ক্লডিয়া উল্লেখ করেছেন, যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আইসিসি সালিসের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। আমরাই একমাত্র সালিসি প্রতিষ্ঠান যা সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক কোন ভূগোলের সঙ্গে যুক্ত নয় বা রাজনৈতিক পক্ষপাত করি না।’
আইসিসিবির নির্বাহী বোর্ডের সদস্য মীর নাসির হোসেন তার ভাষণে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সালিশে দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষ বিচারক ও আইনজীবীদের সীমিত প্রাপ্যতা বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।’
আইসিসিবি নির্বাহী বোর্ডের সদস্য কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বিদেশি সালিসী পুরস্কার কার্যকর করার প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হল একটি ব্যাপক আইনি কাঠামোর অভাব। সালিসি সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন পুরানো এবং বিদেশি সালিসী পুরস্কারের স্বীকৃতি এবং প্রয়োগের বিষয়ে পর্যাপ্ত নির্দেশনা প্রদান করে না। আইনটি ২১ বছর আগে ২০০১ সালে কার্যকর হয়েছিল।’
ওয়েবিনারের অন্য প্যানেলিস্টরা হলেন ডিসিসিআই সভাপতি মো. সমীর সাত্তার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মারগুব কবির, এসএএসইসি ঢাকা সিলেট করিডোর সড়ক বিনিয়োগ প্রকল্প এবং পিপিপি সেলের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এবিএম সার্তাজুর রহমান এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফররুখ রহমান। ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান।
বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩ , ০৮ চৈত্র ১৪২৯, ২৯ শবান ১৪৪৪
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
সালিশি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে আইসিসি বাংলাদেশ কমিশন অন আরবিট্রেশন। গতকাল এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন আইসিসি বাংলাদেশ কমিশন অন আরবিট্রেশন এবং এডিআর চেয়ারম্যান নিহাদ কবির। দেশ ও বিদেশের শতাধিক ব্যক্তি ওয়েবিনারে অংশ নেন। ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
ওয়েবিনারে নিহাদ কবির বলেন, ‘ফরেন অ্যান্ড লোকাল আরবিট্রাল অ্যাওয়ার্ড এনফোর্সমেন্টের জন্য সালিশি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছি। আশা করি, দ্রুত তা সংশোধন হয়ে যাবে।’
আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) প্যারিসে সদর দপ্তরের সঙ্গে সালিশি আদালত তার শতবর্ষ উদ্যাপন করছে। ১০০ বছর আগে ১৯ জানুয়রি ১৯২৩ তারিখে আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ফরাসি বাণিজ্যমন্ত্রী এতিয়েন ক্লেমেন্টেলের নেতৃত্বে এবং ‘শান্তির বণিক বা মার্চেন্ড অব পিস’ নামে পরিচিত আইসিসির প্রতিষ্ঠাতাদের নেতৃত্বে আইসিসি কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে এই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নিত হতে যাচ্ছে। বিদেশি সালিসী পুরস্কার কার্যকর করার করলে বিদেশি এবং স্থানীয় উভয় বিনিয়োগের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। সালিসি রায় কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনী কাঠামো এবং সাধারণভাবে সালিশে উন্নতির জন্য উল্লেখযোগ্য জায়গা রয়েছে।
ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন আইসিসি কোর্টের মহাসচিব আলেকজান্ডার ফেসাস।
আইসিসি কোর্টের প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া স্যালোমন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশিকে পছন্দের পদ্ধতিতে পরিণত করতে আইসিসি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রকৃতপক্ষে আইসিসি ১৯৫৮ ইয়র্ক কনভেনশন গ্রহণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল।’
মিসেস ক্লডিয়া উল্লেখ করেছেন, যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আইসিসি সালিসের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। আমরাই একমাত্র সালিসি প্রতিষ্ঠান যা সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক কোন ভূগোলের সঙ্গে যুক্ত নয় বা রাজনৈতিক পক্ষপাত করি না।’
আইসিসিবির নির্বাহী বোর্ডের সদস্য মীর নাসির হোসেন তার ভাষণে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সালিশে দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষ বিচারক ও আইনজীবীদের সীমিত প্রাপ্যতা বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।’
আইসিসিবি নির্বাহী বোর্ডের সদস্য কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বিদেশি সালিসী পুরস্কার কার্যকর করার প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হল একটি ব্যাপক আইনি কাঠামোর অভাব। সালিসি সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন পুরানো এবং বিদেশি সালিসী পুরস্কারের স্বীকৃতি এবং প্রয়োগের বিষয়ে পর্যাপ্ত নির্দেশনা প্রদান করে না। আইনটি ২১ বছর আগে ২০০১ সালে কার্যকর হয়েছিল।’
ওয়েবিনারের অন্য প্যানেলিস্টরা হলেন ডিসিসিআই সভাপতি মো. সমীর সাত্তার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মারগুব কবির, এসএএসইসি ঢাকা সিলেট করিডোর সড়ক বিনিয়োগ প্রকল্প এবং পিপিপি সেলের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এবিএম সার্তাজুর রহমান এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফররুখ রহমান। ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান।