ক্রমশ জটিল হচ্ছে শাকিব খান-রহমত উল্লাহ ইস্যু

সাত বছর আগে শুটিং হওয়া ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবি ঘিরে ঢালিউডে এখন বেশ আলোচনা। এই ছবির নায়ক শাকিব খানকে ঘিরে এ আলোচনা। হঠাৎ গত সপ্তাহে ছবির নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল নিয়ে গড়িমসি, ছবির শুটিং না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি এবং সহপ্রযোজক এক নারীকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ এনে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন রহমত উল্লাহ। ১৫ মার্চ এই অভিযোগ করে পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচনার ঝড় তুলে ১৭ মার্চ অনেকটা নীরবেই দেশ ছাড়লেন প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। তবে তিনি জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই আইনিভাবে লড়তে বাংলাদেশে আসবেন। অস্ট্রেলিয়া কাজ ছিল বলেই দ্রুত চলে গেছেন।

এদিকে জানা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় পুলিশের নথিতে বর্বর ধর্ষণকারী হিসেবে উঠে এসেছে শাকিব খানের নাম। সে দেশের পুলিশের একটি রিপোর্টের কপি ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমের কাছে এসেছে। রিপোর্টে দেখা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শাকিব খান ওরফে রানা। ক্যারিয়ারের প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া গিয়েই এমন ধর্ষণকা- ঘটিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের সেন্ট জর্জ পুলিশ স্টেশনে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী নিজেই। মামলার স্বাক্ষী হয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম ম্যাথিউ জন ক্রুকসন। পুলিশ রিপোর্টে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে নভোটেল দ্য গ্র্যান্ড প্যারেড অ্যাপার্টমেন্ট ৭২১ ব্রাইটন লা স্যান্ডস হোটেল কক্ষে রাত ২টা থেকে ৪ পর্যন্ত ওই নারী প্রযোজককে ধর্ষণ করেন শাকিব খান। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করে মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের প্রতিবেদনে শাকিবকে ধর্ষক উল্লেখ করে বলেছেÑ তিনি মধ্যপ অবস্থায় সহ-প্রযোজকের ওপর নির্মমভাবে যৌনচার চালিয়েছেন।

এদিকে শাকিব খানের বিরুদ্ধে রহমত উল্লাহর অভিযোগের কয়েক দিনের মাথায় অস্ট্রেলিয়া ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন এই তারকার আইনজীবী উপল আমিন। ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, রহমত উল্লাহ যে অভিযোগ করেছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রহমত উল্লাহর উচিত, এই অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা। উপল আমিন জানিয়েছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সেন্ট জর্জ গোয়েন্দা কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা মাইকেল বাগ তাকে শাকিব খানের ব্যাপারে চারটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে আছেÑ ১. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো মামলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়। ২. শাকিব খানকে কখনো কোনো ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়াতে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ৩. যেহেতু তিনি গ্রেপ্তার হননি, সেহেতু উনার পালানোর কথা আসেই না। এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত শেষ এবং এ বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে। ৪. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না।

অপরদিকে অভিযোগের পর বিষয়টি মীমাংসার জন্য গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় প্রযোজকের সঙ্গে বৈঠক করেন শাকিব। একঘণ্টা চলা এ বৈঠকে কোনো সমাঝোতা করতে না পেরে অবশেষে মুখ খোলেন শাকিব খান। যেখানে শাকিব সব অভিযোগ অস্বীকার করে রহমত উল্লাহকে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক নয় বলে দাবি করেন গণমাধ্যমে। এ ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করতে যান তিনি। পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। অপরদিকে একই অভিযোগে রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে যান শাকিব। সেখানে ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে জানা যায়।

প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেয়নি ডিএমপির গুলশান থানা পুলিশ। থানায় মামলা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শাকিব খান। উল্টো দেশ থেকে পালিয়ে যেতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা সহযোগিতা করছেন বলে মনে করছেন তিনি।

বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩ , ০৮ চৈত্র ১৪২৯, ২৯ শবান ১৪৪৪

ক্রমশ জটিল হচ্ছে শাকিব খান-রহমত উল্লাহ ইস্যু

বিনোদন প্রতিবেদক

image

সাত বছর আগে শুটিং হওয়া ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবি ঘিরে ঢালিউডে এখন বেশ আলোচনা। এই ছবির নায়ক শাকিব খানকে ঘিরে এ আলোচনা। হঠাৎ গত সপ্তাহে ছবির নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল নিয়ে গড়িমসি, ছবির শুটিং না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি এবং সহপ্রযোজক এক নারীকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ এনে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন রহমত উল্লাহ। ১৫ মার্চ এই অভিযোগ করে পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচনার ঝড় তুলে ১৭ মার্চ অনেকটা নীরবেই দেশ ছাড়লেন প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। তবে তিনি জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই আইনিভাবে লড়তে বাংলাদেশে আসবেন। অস্ট্রেলিয়া কাজ ছিল বলেই দ্রুত চলে গেছেন।

এদিকে জানা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় পুলিশের নথিতে বর্বর ধর্ষণকারী হিসেবে উঠে এসেছে শাকিব খানের নাম। সে দেশের পুলিশের একটি রিপোর্টের কপি ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমের কাছে এসেছে। রিপোর্টে দেখা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শাকিব খান ওরফে রানা। ক্যারিয়ারের প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া গিয়েই এমন ধর্ষণকা- ঘটিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের সেন্ট জর্জ পুলিশ স্টেশনে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী নিজেই। মামলার স্বাক্ষী হয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম ম্যাথিউ জন ক্রুকসন। পুলিশ রিপোর্টে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে নভোটেল দ্য গ্র্যান্ড প্যারেড অ্যাপার্টমেন্ট ৭২১ ব্রাইটন লা স্যান্ডস হোটেল কক্ষে রাত ২টা থেকে ৪ পর্যন্ত ওই নারী প্রযোজককে ধর্ষণ করেন শাকিব খান। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করে মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের প্রতিবেদনে শাকিবকে ধর্ষক উল্লেখ করে বলেছেÑ তিনি মধ্যপ অবস্থায় সহ-প্রযোজকের ওপর নির্মমভাবে যৌনচার চালিয়েছেন।

এদিকে শাকিব খানের বিরুদ্ধে রহমত উল্লাহর অভিযোগের কয়েক দিনের মাথায় অস্ট্রেলিয়া ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন এই তারকার আইনজীবী উপল আমিন। ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, রহমত উল্লাহ যে অভিযোগ করেছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রহমত উল্লাহর উচিত, এই অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা। উপল আমিন জানিয়েছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সেন্ট জর্জ গোয়েন্দা কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা মাইকেল বাগ তাকে শাকিব খানের ব্যাপারে চারটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে আছেÑ ১. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো মামলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়। ২. শাকিব খানকে কখনো কোনো ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়াতে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ৩. যেহেতু তিনি গ্রেপ্তার হননি, সেহেতু উনার পালানোর কথা আসেই না। এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত শেষ এবং এ বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে। ৪. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না।

অপরদিকে অভিযোগের পর বিষয়টি মীমাংসার জন্য গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় প্রযোজকের সঙ্গে বৈঠক করেন শাকিব। একঘণ্টা চলা এ বৈঠকে কোনো সমাঝোতা করতে না পেরে অবশেষে মুখ খোলেন শাকিব খান। যেখানে শাকিব সব অভিযোগ অস্বীকার করে রহমত উল্লাহকে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক নয় বলে দাবি করেন গণমাধ্যমে। এ ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করতে যান তিনি। পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। অপরদিকে একই অভিযোগে রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে যান শাকিব। সেখানে ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে জানা যায়।

প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেয়নি ডিএমপির গুলশান থানা পুলিশ। থানায় মামলা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শাকিব খান। উল্টো দেশ থেকে পালিয়ে যেতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা সহযোগিতা করছেন বলে মনে করছেন তিনি।