মেহেরপুরে কালভার্ট ভেঙে যে কোন সময় ঘটবে প্রাণহানি

কালভার্টটি যেকোন সময় ভেঙে পড়ে মানুষ না মরলে কর্তৃপক্ষের টনক হয়তো নড়বে না। তিন বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ কালভার্টটির উপর দিয়ে চলাচল করছে। কয়েক দফা এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে উপজেলা কার্যালয়ে লিখিত আকারে দিয়েছেন। এরপরও কাজ হচ্ছে না। কথাগুলো বলছিলেন তেরাইল গ্রামের বাসিন্দা আরজ আলী ও মাহতাব খাঁ।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর সংযোগ সেতুটির মাঝখানে বসে গেছে। সেতুটি উপজেলার তেরাইল গ্রামে মাথাভাঙ্গা ও কাজলার সংযোগ খালের উপরে নির্মিত। ১৫-২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ওই সেতু দিয়ে চলাচল করে। ১৯৮২ সালের দিকে নির্মিত সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, সেতুটির নিচে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন এলাকাবাসী। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করছে কালভার্টের উপর দিয়ে। প্রায় তিন বছর আগে ছোট একটি ট্রাক যেতে গিয়ে সেতুটি মাঝখানে বসে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায় বিকল্প সড়ক না থাকায় ওই ভাঙা সেতুটির উপর দিয়েই পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এই সেতুটির উপর দিয়ে চলাচলকারী বয়স্ক বাসিন্দা মুদি দোকানি রাফিজুল ইসলাম, কৃষক রমজান আলীসহ কয়েকজন জানান গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে কাজিপুর, করমদি, ভরাট, তেরাইল ও পাশর্^বর্তী উপজেলা মীরপুরের প্রাগপুর গ্রামের অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন প্রতিদিন সহজেই উপজেলা শহরে আসা-যাওয়া করে। সড়কের এ সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা ও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন কয়েকটি এলাকার হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এর উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হন। চলে ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহনও। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাওয়া-আসা করে কয়েকশ শিক্ষার্থী।

উপজেলা শহরের জনৈক মাইক্রো চালক সবুজ মিয়া বলেন, কালভার্টের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল কালভার্টটি দুলছে। এর আগে কখনো এই সড়ক দিয়ে যাওয়া আসা করা হয়নি। এ কারণে কালভার্টটি যে ভাঙা তা বুঝতে পারিনি। কোনরকম সংকেতও দেয়া নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা আজমল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর নিচে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে রেখে কোনরকম চলাচল করা হচ্ছে। এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। গত বছরে সেতুটি পার হতে গিয়ে তেরাইল গ্রামের বাসিন্দা রহিদুল মিয়া ধানের বিচালিসহ খালে পড়ে মারাত্মক আহত হয়। মাঠের ফসল ঘরে তুলতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় কৃষকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের গ্রামের বাড়ি এই তেরাইল গ্রামে। অথচ একটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট নির্মাণে এত বিলম্ব। ঢোকার মুখে কোন রকম সংকেতও দেয়া হয়নি। না বুঝে কোন ভারী মালবোঝাই ট্রাক উঠলেই একেবারে ভেঙে খাদে পড়বে কালভার্টটি। কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে উদাসীন।

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান বলেন, সেতুটি নির্মাণে খুব দ্রুত টেন্ডার কল করা হবে।

গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, সেতুটি ভেঙে নতুন করতে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব দ্রুত টেন্ডার নোটিশ দেয়া হবে।

image

মেহেরপুর : এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে কালভার্ড দিয়ে পার হচ্ছে গাড়ি ও মানুষ -সংবাদ

আরও খবর
নিজের উৎপাদিত পাট বীজ বিতরণ প্রতিবন্ধী আক্কাসের
প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
রাজশাহীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ কলকাতার অধ্যাপক ও সাংবাদিকরা
মানিকগঞ্জে কমল হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
পবায় রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির দায়ে জেল-জরিমানা
চাঁদপুরে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য
বাঁশ ও বেত ঐতিহ্য হারাচ্ছে মানিকগঞ্জ মানবেতর জীবনে তিন হাজার পরিবার
পোরশায় গরম পানি ঢেলে নারী হত্যার অভিযোগে বৃদ্ধ আটক
সখীপুরে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক
ডুমুরিয়ার গার্ডার ব্রিজ ও টিপনা সিংগা সড়ক নির্মাণকাজে ধীরগতি
নড়াইলে আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার জমি কেনায় সহযোগিতার আশ্বাস মাশরাফির

বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩ , ০৯ চৈত্র ১৪২৯, ৩০ শবান ১৪৪৪

মেহেরপুরে কালভার্ট ভেঙে যে কোন সময় ঘটবে প্রাণহানি

প্রতিনিধি, মেহেরপুর

image

মেহেরপুর : এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে কালভার্ড দিয়ে পার হচ্ছে গাড়ি ও মানুষ -সংবাদ

কালভার্টটি যেকোন সময় ভেঙে পড়ে মানুষ না মরলে কর্তৃপক্ষের টনক হয়তো নড়বে না। তিন বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ কালভার্টটির উপর দিয়ে চলাচল করছে। কয়েক দফা এলাকার মানুষ জড়ো হয়ে উপজেলা কার্যালয়ে লিখিত আকারে দিয়েছেন। এরপরও কাজ হচ্ছে না। কথাগুলো বলছিলেন তেরাইল গ্রামের বাসিন্দা আরজ আলী ও মাহতাব খাঁ।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর সংযোগ সেতুটির মাঝখানে বসে গেছে। সেতুটি উপজেলার তেরাইল গ্রামে মাথাভাঙ্গা ও কাজলার সংযোগ খালের উপরে নির্মিত। ১৫-২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ওই সেতু দিয়ে চলাচল করে। ১৯৮২ সালের দিকে নির্মিত সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, সেতুটির নিচে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন এলাকাবাসী। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করছে কালভার্টের উপর দিয়ে। প্রায় তিন বছর আগে ছোট একটি ট্রাক যেতে গিয়ে সেতুটি মাঝখানে বসে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায় বিকল্প সড়ক না থাকায় ওই ভাঙা সেতুটির উপর দিয়েই পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এই সেতুটির উপর দিয়ে চলাচলকারী বয়স্ক বাসিন্দা মুদি দোকানি রাফিজুল ইসলাম, কৃষক রমজান আলীসহ কয়েকজন জানান গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে কাজিপুর, করমদি, ভরাট, তেরাইল ও পাশর্^বর্তী উপজেলা মীরপুরের প্রাগপুর গ্রামের অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন প্রতিদিন সহজেই উপজেলা শহরে আসা-যাওয়া করে। সড়কের এ সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা ও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন কয়েকটি এলাকার হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এর উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হন। চলে ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহনও। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাওয়া-আসা করে কয়েকশ শিক্ষার্থী।

উপজেলা শহরের জনৈক মাইক্রো চালক সবুজ মিয়া বলেন, কালভার্টের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল কালভার্টটি দুলছে। এর আগে কখনো এই সড়ক দিয়ে যাওয়া আসা করা হয়নি। এ কারণে কালভার্টটি যে ভাঙা তা বুঝতে পারিনি। কোনরকম সংকেতও দেয়া নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা আজমল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর নিচে বাঁশের ঠেকনা দিয়ে রেখে কোনরকম চলাচল করা হচ্ছে। এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। গত বছরে সেতুটি পার হতে গিয়ে তেরাইল গ্রামের বাসিন্দা রহিদুল মিয়া ধানের বিচালিসহ খালে পড়ে মারাত্মক আহত হয়। মাঠের ফসল ঘরে তুলতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় কৃষকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের গ্রামের বাড়ি এই তেরাইল গ্রামে। অথচ একটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট নির্মাণে এত বিলম্ব। ঢোকার মুখে কোন রকম সংকেতও দেয়া হয়নি। না বুঝে কোন ভারী মালবোঝাই ট্রাক উঠলেই একেবারে ভেঙে খাদে পড়বে কালভার্টটি। কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে উদাসীন।

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান বলেন, সেতুটি নির্মাণে খুব দ্রুত টেন্ডার কল করা হবে।

গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, সেতুটি ভেঙে নতুন করতে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব দ্রুত টেন্ডার নোটিশ দেয়া হবে।