কক্সবাজারে অভিযুক্তকে না পেয়ে দুই শিশুসহ স্ত্রী হাজতে

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার জের ধরে প্রতিপক্ষকে নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করেন শাহজাহান। প্রতিপক্ষের মামলার পর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। আসামিকে না পেয়ে আসামির স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ধরে নিয়ে আদালতে চালান করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার ওসির বিরুদ্ধে।

কক্সবাজার কোর্ট হাজতের ভেতর এক নারী, সঙ্গে তার কোলে এক শিশু ও সামনে দাঁড়ানো দুই বছরের অন্য শিশু সন্তানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে জানা যায় ঈদগাঁও থানা পুলিশের এ কান্ড। কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদের চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ ফেইসবুকে ছবিটি পোস্ট করে অভিযোগ করেন, গত সোমবার কথা কাটাকাটির জের ধরে নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে শাহজাহানের আঘাতে হারুন আহত হন।

এ সময় কোন অভিযোগ ছাড়াই ঈদগাঁও থানার পুলিশ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। শাহজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন, দুগ্ধপোষ্য কোলের শিশু ও দুই বছরের আরেক শিশুকে থানায় নিয়ে গিয়ে সারারাত আটকে রাখে। পরদিন ভুক্তভোগী হারুন অভিযুক্ত শাহজাহান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এজাহার জমা দিলে ১২টার পর মামলা নথিভুক্ত হয়। ওসি ও এসআইকে তদন্ত করে মামলা নথিভুক্ত করতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু, তারা ঘটনার তদন্ত না করেই মামলা নথিভুক্ত করে শাহজাহানের স্ত্রী ও শিশুদের হাজতে রেখে কোর্টে চালান করে দেন।

জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান বলেন, এ ঘটনাটি মীমাংসাযোগ্য। কিন্তু পুলিশ কোন অভিযোগ ছাড়াই ঘটনা অতিরঞ্জিত করে শাহজাহানের নিরীহ স্ত্রী ও দুই শিশুকে বেআইনিভাবে থানায় নিয়ে যায়। এটি অমানবিক নিষ্ঠুরতা। স্বামীর দোষে নিরীহ স্ত্রী ও বাচ্চাদের ধরে এনে মামলা দায়ের করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এলাকাবাসী জানায়, গেল সোমবার পূর্ব ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ফরাজীপাড়া এলাকায় প্রতিবেশী মৃত নজির আহমেদের ছেলে শাহজাহান ও মৃত আবু শামার ছেলে হারুন অর রশীদের মধ্যে নলকূপের পানি চলাচলের ড্রেন নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় শাহজাহান নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে হারুনকে আঘাত করলে হারুন আহত হন। তাদের দাবি, ঘটনার পরপরই ঈদগাঁও থানার এসআই গিয়াসউদ্দিন ফোর্স নিয়ে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় শাহজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ও দুই শিশুকে থানায় নিয়ে গিয়ে হাজতখানায় আটকে রাখেন।

ঈদগাঁও থানার ওসি হারুন অর রশীদের স্বজনদের থানায় ডেকে নিয়ে নাটকীয় কায়দায় মামলা রেকর্ড করে আটককৃত শাহজাহানের স্ত্রী ও সন্তানদের আদালতে প্রেরণ করে বলেও জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে ঈদগাঁও থানার ওসি গোলাম কবির জানান, ওই ঘটনায় বাদী মামলা দায়ের করেছেন। তাই মামলার আসামিদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩ , ০৯ চৈত্র ১৪২৯, ৩০ শবান ১৪৪৪

কক্সবাজারে অভিযুক্তকে না পেয়ে দুই শিশুসহ স্ত্রী হাজতে

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার জের ধরে প্রতিপক্ষকে নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করেন শাহজাহান। প্রতিপক্ষের মামলার পর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। আসামিকে না পেয়ে আসামির স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ধরে নিয়ে আদালতে চালান করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার ওসির বিরুদ্ধে।

কক্সবাজার কোর্ট হাজতের ভেতর এক নারী, সঙ্গে তার কোলে এক শিশু ও সামনে দাঁড়ানো দুই বছরের অন্য শিশু সন্তানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে জানা যায় ঈদগাঁও থানা পুলিশের এ কান্ড। কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদের চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ ফেইসবুকে ছবিটি পোস্ট করে অভিযোগ করেন, গত সোমবার কথা কাটাকাটির জের ধরে নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে শাহজাহানের আঘাতে হারুন আহত হন।

এ সময় কোন অভিযোগ ছাড়াই ঈদগাঁও থানার পুলিশ শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। শাহজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন, দুগ্ধপোষ্য কোলের শিশু ও দুই বছরের আরেক শিশুকে থানায় নিয়ে গিয়ে সারারাত আটকে রাখে। পরদিন ভুক্তভোগী হারুন অভিযুক্ত শাহজাহান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এজাহার জমা দিলে ১২টার পর মামলা নথিভুক্ত হয়। ওসি ও এসআইকে তদন্ত করে মামলা নথিভুক্ত করতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু, তারা ঘটনার তদন্ত না করেই মামলা নথিভুক্ত করে শাহজাহানের স্ত্রী ও শিশুদের হাজতে রেখে কোর্টে চালান করে দেন।

জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান বলেন, এ ঘটনাটি মীমাংসাযোগ্য। কিন্তু পুলিশ কোন অভিযোগ ছাড়াই ঘটনা অতিরঞ্জিত করে শাহজাহানের নিরীহ স্ত্রী ও দুই শিশুকে বেআইনিভাবে থানায় নিয়ে যায়। এটি অমানবিক নিষ্ঠুরতা। স্বামীর দোষে নিরীহ স্ত্রী ও বাচ্চাদের ধরে এনে মামলা দায়ের করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এলাকাবাসী জানায়, গেল সোমবার পূর্ব ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ফরাজীপাড়া এলাকায় প্রতিবেশী মৃত নজির আহমেদের ছেলে শাহজাহান ও মৃত আবু শামার ছেলে হারুন অর রশীদের মধ্যে নলকূপের পানি চলাচলের ড্রেন নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় শাহজাহান নখ কাটার যন্ত্র দিয়ে হারুনকে আঘাত করলে হারুন আহত হন। তাদের দাবি, ঘটনার পরপরই ঈদগাঁও থানার এসআই গিয়াসউদ্দিন ফোর্স নিয়ে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় শাহজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ও দুই শিশুকে থানায় নিয়ে গিয়ে হাজতখানায় আটকে রাখেন।

ঈদগাঁও থানার ওসি হারুন অর রশীদের স্বজনদের থানায় ডেকে নিয়ে নাটকীয় কায়দায় মামলা রেকর্ড করে আটককৃত শাহজাহানের স্ত্রী ও সন্তানদের আদালতে প্রেরণ করে বলেও জানান স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে ঈদগাঁও থানার ওসি গোলাম কবির জানান, ওই ঘটনায় বাদী মামলা দায়ের করেছেন। তাই মামলার আসামিদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।