জামালপুর সদর উপজেলার অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদি আরব সকারের দুম্বার মাংস জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাগাভাগি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দুম্বার মাংস নিয়েছেন যারাÑ রহিমা মোজাফফর এতিমখানার পক্ষে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন ২ কার্টন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ২ কার্টন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ১ কার্টন ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ-১ কার্টন, দুম্বার মাংস পরিবহনের শ্রমিক ২ কার্টন ও ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ১ কার্টন করে নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মচারী ও কয়েকটি এতিমখানা ও মাদরাসাতেও বিতরণের কথা বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি কার্টনে প্রায় ২৫ কেজি করে মাংস ছিল। সরাসরি দুস্থদের মধ্যে বিতরণ না করে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়। দুস্থদের মাংস ওইসব ব্যক্তিরা নেয়ায় জামালপুরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
উপজেলা পরিষদের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশে কোরবানির দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। গত ১২ মার্চ রাতে জামালপুর সদর উপজেলায় ৩৭ কার্টন মাংস আসে। ওই গভীর রাতেই দুম্বার মাংসের কার্টনগুলোর বিতরণ করা হয়।
তালিকায় থাকা রহিমা মোজাফফর নামের কোন এতিমখানা খুঁজে যাওয়া যায়নি। তবে সদর উপজেলার খুপিবাড়ী এলাকায় ছইম উদ্দিন হাফেজিয়া ও ইসলামী কিন্ডার গার্টেন মাদ্রাসা রয়েছে। ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে প্রধান ফটকে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের নাম রয়েছে। সেখানকার এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ১০ টুপলা মাংস পেয়েছেন। সেখানে প্রায় ২০ কেজির মতো মাংস ছিল। বাকি মাংসের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এদিকে রহিমা মোজাফফর নামের এতিমখানার পক্ষে উপজেলা পরিষদ থেকে মাংস গ্রহণ করে ওই সংসদ সদস্যের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন। হারুন মুঠোফোনে বলেন, ‘মাংসগুলো ওই মাদ্রাসায় দিয়েছি। তবে ২০ কেজি মাংস মাদ্রাসা পেয়েছেন-এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অথচ বরাদ্দকৃত ২ কার্টনের মধ্যে প্রায় ৫০ কেজি মাংস ছিল। বাকি ৩০ কেজি মাংস কার বাড়িতে গেল। এর কোন সদুত্তর নেই কারো কাছে। একইভাবে তালিকায় থাকা একটি মাদ্রাসার হুজুরের সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, এক কার্টন মাংস পায়নি। দুটি টুপলায় প্রায় ৫ কেজি মাংস মাদ্রাসায় দেয়া হয়েছে। এভাবে মাংসগুলো বিত্তশালীরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যাদের নামে মাংস বরাদ্দ হয়েছিল। তারাও সঠিকভাবে মাংস পায়নি।
জামালপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘মাংসগুলো দরিদ্র মানুষ, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশনা ছিল। সেই অনুযায়ী আমরা প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের একটি করে কার্টন দিয়েছি। তাদের নির্দেশনা দিয়েছি, মাদ্রাসা বা দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে মাস্টার রুল চাওয়া হবে।’ জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মীদের মধ্যে বিতরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা তাদের এলাকার মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দেয়ার জন্যে নিয়েছেন। বিতরণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে, খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩ , ১১ চৈত্র ১৪২৯, ০২ রমজান ১৪৪৪
প্রতিনিধি, জামালপুর
জামালপুর সদর উপজেলার অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য সৌদি আরব সকারের দুম্বার মাংস জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাগাভাগি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দুম্বার মাংস নিয়েছেন যারাÑ রহিমা মোজাফফর এতিমখানার পক্ষে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন ২ কার্টন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ২ কার্টন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ১ কার্টন ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ-১ কার্টন, দুম্বার মাংস পরিবহনের শ্রমিক ২ কার্টন ও ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ১ কার্টন করে নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মচারী ও কয়েকটি এতিমখানা ও মাদরাসাতেও বিতরণের কথা বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি কার্টনে প্রায় ২৫ কেজি করে মাংস ছিল। সরাসরি দুস্থদের মধ্যে বিতরণ না করে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়। দুস্থদের মাংস ওইসব ব্যক্তিরা নেয়ায় জামালপুরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
উপজেলা পরিষদের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশে কোরবানির দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। গত ১২ মার্চ রাতে জামালপুর সদর উপজেলায় ৩৭ কার্টন মাংস আসে। ওই গভীর রাতেই দুম্বার মাংসের কার্টনগুলোর বিতরণ করা হয়।
তালিকায় থাকা রহিমা মোজাফফর নামের কোন এতিমখানা খুঁজে যাওয়া যায়নি। তবে সদর উপজেলার খুপিবাড়ী এলাকায় ছইম উদ্দিন হাফেজিয়া ও ইসলামী কিন্ডার গার্টেন মাদ্রাসা রয়েছে। ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে প্রধান ফটকে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের নাম রয়েছে। সেখানকার এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ১০ টুপলা মাংস পেয়েছেন। সেখানে প্রায় ২০ কেজির মতো মাংস ছিল। বাকি মাংসের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এদিকে রহিমা মোজাফফর নামের এতিমখানার পক্ষে উপজেলা পরিষদ থেকে মাংস গ্রহণ করে ওই সংসদ সদস্যের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন। হারুন মুঠোফোনে বলেন, ‘মাংসগুলো ওই মাদ্রাসায় দিয়েছি। তবে ২০ কেজি মাংস মাদ্রাসা পেয়েছেন-এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অথচ বরাদ্দকৃত ২ কার্টনের মধ্যে প্রায় ৫০ কেজি মাংস ছিল। বাকি ৩০ কেজি মাংস কার বাড়িতে গেল। এর কোন সদুত্তর নেই কারো কাছে। একইভাবে তালিকায় থাকা একটি মাদ্রাসার হুজুরের সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, এক কার্টন মাংস পায়নি। দুটি টুপলায় প্রায় ৫ কেজি মাংস মাদ্রাসায় দেয়া হয়েছে। এভাবে মাংসগুলো বিত্তশালীরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যাদের নামে মাংস বরাদ্দ হয়েছিল। তারাও সঠিকভাবে মাংস পায়নি।
জামালপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘মাংসগুলো দরিদ্র মানুষ, এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশনা ছিল। সেই অনুযায়ী আমরা প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের একটি করে কার্টন দিয়েছি। তাদের নির্দেশনা দিয়েছি, মাদ্রাসা বা দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে মাস্টার রুল চাওয়া হবে।’ জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মীদের মধ্যে বিতরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা তাদের এলাকার মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দেয়ার জন্যে নিয়েছেন। বিতরণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে, খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’