খুলনায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, দুর্ভোগে পথচারী

খুলনা নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত যেন হকারদের স্থায়ী দখলে চলে গেছে। ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট। পাশপাশি সড়কজুড়ে সারাক্ষণই থাকছে অবৈধ পার্কিং। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। নগরবাসীর অভিযোগ, দখলকারীদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখছেন না তারা। এতে পথচারীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, একইসঙ্গে লেগে থাকছে যানজট।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর খুলনা মহানগর সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, খুলনায় সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। নগরের বিভিন্ন সড়কের অর্ধেক হকাররা দখল করে নিয়েছে। মাঝে-মধ্যে অভিযান হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না।

বিপ্লব বলেন, নগরের বহুতল অধিকাংশ ভবন, হাসপাতাল-ক্লিনিকের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। এ কারণে যানবাহনগুলো সড়কের ওপরেই রাখা হয়। এর ফলে যানজট, দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। যাদের দেখার দায়িত্ব তাদের উদাসীনতার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা নেই।

দেখা যায়, নগরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড় থেকে বড়বাজার মোড় পর্যন্ত ফুটপাত পুরোটাই হকারদের দখলে চলে গেছে। খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতেও একই অবস্থা। একইভাবে পাওয়ার হাউস মোড় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই হকারদের দখলে। কোথাও কোথাও হকাররা ফুটপাত ছেড়ে সড়কের ওপর চলে এসেছে। নগর ভবনের বিপরীতের ফুটপাতও একই অবস্থা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দেয়ালসংলগ্ন ফুটপাত ও জেলা আইনজীবী সমিতির সামনের ফুটপাত খাবার ও কাপড় ব্যবসায়ীদের দখলে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব ফুটপাত দখল করে হকারা ব্যবসা করছেন বছরের পর বছর।

ইউনুছ আলী নামে ওই এলাকার একজন হকার জানান, নগরে ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে কয়েকটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীব্যক্তি ও পুলিশকে টাকা দিয়ে থাকেন। টাকা না দিলে ‘সিস্টেমে সরিয়ে’ দেওয়া হয় তাদের। অনেক বড়ব্যবসায়ীও আবার টাকা নিয়ে হকারদের বসতে দেন।

ফারাজীপাড়া মোড় এলাকায় ফুটপাথ দখল করে রেখেছে মাংস বিক্রেতারা।

রয়েলের মোড় থেকে ডাকবাংলো ফেরিঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে আছে স্যানিটারিসামগ্রীর দোকান। দৌলতপুর বেবিট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে মুহসিন স্কুল পর্যন্ত পুরোটাই হকারদের দখলে। ময়লাপোতা মোড় থেকে গল্লামারী পর্যন্ত ফুটপাত খাবার, লেপতোশক ও ভাঙারির দোকানের দখলে। তাছাড়া ময়লাপোতায় সিটি করপোরেশনের সান্ধ্যবাজারের বাইরেরঅংশে অস্থায়ী দোকান বসায় সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে কলেজিয়েট গার্লস স্কুল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই দখল করে রেখেছেন কাঠের আসবাবের দোকানিরা। কলেজিয়েট স্কুলের পর থেকে টুটপাড়া কবরখানা মোড় পর্যন্ত ফুটপাতজুড়ে রয়েছে গাড়ি মেরামতের দোকান। সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে বয়রা বাজার পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণসামগ্রীর দখলে। সেখানে এখন ইট, খোয়া, পাথর, বালু ও রডের সমাহার।

অপরদিকে নগরের কেডিএ এভিনিউয়ে বেসরকারি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রতিদিনই সড়কে পার্কিং করা হয় অসংখ্য মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্স ও ইজিবাইক। পাশে ময়লাপোতা মোড়ে অসংখ্য ইজিবাইকে যাত্রী ওঠানামা করে। ফলে ময়লাপোতা মোড় থেকে সিটি মেডিকেল হয়ে ডালমিল এলাকায় ঢোকার মোড় পর্যন্ত সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। ময়লাপোতা মোড় থেকে সাতরাস্তা মোড় পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে সারি সারি রাখা থাকে রেন্ট-এ-কারের অসংখ্য গাড়ি।

শান্তিধাম মোড়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও সোনাডাঙ্গা এলাকায় মজিদ স্মরণিতে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে একইভাবে অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন দাঁড়ানো থাকে। নগরবাসীর অভিযোগ, নগরের এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে সড়ক হয়ে পড়ে সংকুচিত। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অঘোষিতভাবে গড়ে উঠেছে রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি ও মাহেন্দ্র স্ট্যান্ড। এর ফলে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

নগরের ক্লে রোড, কে ডি ঘোষ রোড ও স্টেশন রোড এমনিতেই অপ্রশস্ত। তার ওপর অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটে চলাই দায়। সদর থানার মোড় থেকে কালীবাড়ি ঘাট পর্যন্ত সড়কে দিনে-রাত সবসময় ট্রাকে পণ্য লোড-আনলোড করার কারণে সড়ক সংকুচিত হয়ে যায়।

রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে অসংখ্য মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক ও প্রাইভেটকার রাখা হয় ।

পিটিআই মোড়, মৌলভীপাড়া টিবি বাউন্ডারি রোডের মোড়, শান্তিধাম মোড় যেন পরিণত হয়েছে রিকশা, সিএনজি, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইক স্ট্যান্ডে। অর্ধেক সড়কজুড়ে দাড়িয়ে থাকা এসব যানবাহনে যাত্রী ওঠানামা করে। সাতরাস্তা মোড়ের শামীম হোটেলের সামনে ও বিপরীতে এবং গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের সামনের চিত্রও একই রকম।

সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, গল্লামারী মোড়, নিরালা মোড়, বয়রা বাজার মোড় ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া নগরজুড়ে সড়ক উন্নয়ন কাজে খোঁড়াখুঁড়ি ড্রেন প্রশস্তকরণ কাজ চলায় পুরো নগরজুড়ে অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছে। এসব পয়েন্টের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে।

এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, নগরে যানজট সৃষ্টিতে যেসব কারণ রয়েছে এরমধ্যে হাকারদের ফুটপাত দখল একটি। এছাড়া নগরের বিভিন্ন রাস্তায় অনেকে গাড়ি পাকিং। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নগরীতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। জনসংখ্যা বাড়ছে, গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে।

তিনি বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে। যেসব সড়ক ও মোড়গুলোতে পার্কিং ও অঘোষিত স্ট্যান্ডের কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটে সেগুলোর ব্যাপারে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বহুতল ভবন মালিকদের নিয়ে সম্প্রতি ২ দফা বৈঠক করা হয়েছে। তাদেরকে গাড়ি পার্কিংয়ের নিজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, হকার উচ্ছেদে অভিযান চলমান রয়েছে। নগরজুড়ে সড়ক উন্নয়ন কাজে খোঁড়াখুঁড়ি এবং ড্রেন প্রশস্তকরণের কাজ চলায় যানজট ঘটছে। এসব কাজ শেষ হলে যানজট কমবে।

রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩ , ১২ চৈত্র ১৪২৯, ০৩ রমজান ১৪৪৪

খুলনায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, দুর্ভোগে পথচারী

জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা

image

খুলনা : ফুটপাত দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর ফলে পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে। সেই সাথে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের -সংবাদ

খুলনা নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত যেন হকারদের স্থায়ী দখলে চলে গেছে। ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট। পাশপাশি সড়কজুড়ে সারাক্ষণই থাকছে অবৈধ পার্কিং। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। নগরবাসীর অভিযোগ, দখলকারীদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখছেন না তারা। এতে পথচারীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, একইসঙ্গে লেগে থাকছে যানজট।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর খুলনা মহানগর সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, খুলনায় সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। নগরের বিভিন্ন সড়কের অর্ধেক হকাররা দখল করে নিয়েছে। মাঝে-মধ্যে অভিযান হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না।

বিপ্লব বলেন, নগরের বহুতল অধিকাংশ ভবন, হাসপাতাল-ক্লিনিকের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। এ কারণে যানবাহনগুলো সড়কের ওপরেই রাখা হয়। এর ফলে যানজট, দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। যাদের দেখার দায়িত্ব তাদের উদাসীনতার কারণে সড়কে শৃঙ্খলা নেই।

দেখা যায়, নগরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড় থেকে বড়বাজার মোড় পর্যন্ত ফুটপাত পুরোটাই হকারদের দখলে চলে গেছে। খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতেও একই অবস্থা। একইভাবে পাওয়ার হাউস মোড় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই হকারদের দখলে। কোথাও কোথাও হকাররা ফুটপাত ছেড়ে সড়কের ওপর চলে এসেছে। নগর ভবনের বিপরীতের ফুটপাতও একই অবস্থা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দেয়ালসংলগ্ন ফুটপাত ও জেলা আইনজীবী সমিতির সামনের ফুটপাত খাবার ও কাপড় ব্যবসায়ীদের দখলে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব ফুটপাত দখল করে হকারা ব্যবসা করছেন বছরের পর বছর।

ইউনুছ আলী নামে ওই এলাকার একজন হকার জানান, নগরে ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে কয়েকটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীব্যক্তি ও পুলিশকে টাকা দিয়ে থাকেন। টাকা না দিলে ‘সিস্টেমে সরিয়ে’ দেওয়া হয় তাদের। অনেক বড়ব্যবসায়ীও আবার টাকা নিয়ে হকারদের বসতে দেন।

ফারাজীপাড়া মোড় এলাকায় ফুটপাথ দখল করে রেখেছে মাংস বিক্রেতারা।

রয়েলের মোড় থেকে ডাকবাংলো ফেরিঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে আছে স্যানিটারিসামগ্রীর দোকান। দৌলতপুর বেবিট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে মুহসিন স্কুল পর্যন্ত পুরোটাই হকারদের দখলে। ময়লাপোতা মোড় থেকে গল্লামারী পর্যন্ত ফুটপাত খাবার, লেপতোশক ও ভাঙারির দোকানের দখলে। তাছাড়া ময়লাপোতায় সিটি করপোরেশনের সান্ধ্যবাজারের বাইরেরঅংশে অস্থায়ী দোকান বসায় সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে কলেজিয়েট গার্লস স্কুল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই দখল করে রেখেছেন কাঠের আসবাবের দোকানিরা। কলেজিয়েট স্কুলের পর থেকে টুটপাড়া কবরখানা মোড় পর্যন্ত ফুটপাতজুড়ে রয়েছে গাড়ি মেরামতের দোকান। সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে বয়রা বাজার পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণসামগ্রীর দখলে। সেখানে এখন ইট, খোয়া, পাথর, বালু ও রডের সমাহার।

অপরদিকে নগরের কেডিএ এভিনিউয়ে বেসরকারি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রতিদিনই সড়কে পার্কিং করা হয় অসংখ্য মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্স ও ইজিবাইক। পাশে ময়লাপোতা মোড়ে অসংখ্য ইজিবাইকে যাত্রী ওঠানামা করে। ফলে ময়লাপোতা মোড় থেকে সিটি মেডিকেল হয়ে ডালমিল এলাকায় ঢোকার মোড় পর্যন্ত সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। ময়লাপোতা মোড় থেকে সাতরাস্তা মোড় পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে সারি সারি রাখা থাকে রেন্ট-এ-কারের অসংখ্য গাড়ি।

শান্তিধাম মোড়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও সোনাডাঙ্গা এলাকায় মজিদ স্মরণিতে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে একইভাবে অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন দাঁড়ানো থাকে। নগরবাসীর অভিযোগ, নগরের এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে সড়ক হয়ে পড়ে সংকুচিত। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অঘোষিতভাবে গড়ে উঠেছে রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি ও মাহেন্দ্র স্ট্যান্ড। এর ফলে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

নগরের ক্লে রোড, কে ডি ঘোষ রোড ও স্টেশন রোড এমনিতেই অপ্রশস্ত। তার ওপর অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটে চলাই দায়। সদর থানার মোড় থেকে কালীবাড়ি ঘাট পর্যন্ত সড়কে দিনে-রাত সবসময় ট্রাকে পণ্য লোড-আনলোড করার কারণে সড়ক সংকুচিত হয়ে যায়।

রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে অসংখ্য মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক ও প্রাইভেটকার রাখা হয় ।

পিটিআই মোড়, মৌলভীপাড়া টিবি বাউন্ডারি রোডের মোড়, শান্তিধাম মোড় যেন পরিণত হয়েছে রিকশা, সিএনজি, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইক স্ট্যান্ডে। অর্ধেক সড়কজুড়ে দাড়িয়ে থাকা এসব যানবাহনে যাত্রী ওঠানামা করে। সাতরাস্তা মোড়ের শামীম হোটেলের সামনে ও বিপরীতে এবং গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের সামনের চিত্রও একই রকম।

সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, গল্লামারী মোড়, নিরালা মোড়, বয়রা বাজার মোড় ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া নগরজুড়ে সড়ক উন্নয়ন কাজে খোঁড়াখুঁড়ি ড্রেন প্রশস্তকরণ কাজ চলায় পুরো নগরজুড়ে অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছে। এসব পয়েন্টের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে।

এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, নগরে যানজট সৃষ্টিতে যেসব কারণ রয়েছে এরমধ্যে হাকারদের ফুটপাত দখল একটি। এছাড়া নগরের বিভিন্ন রাস্তায় অনেকে গাড়ি পাকিং। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নগরীতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। জনসংখ্যা বাড়ছে, গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে।

তিনি বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে। যেসব সড়ক ও মোড়গুলোতে পার্কিং ও অঘোষিত স্ট্যান্ডের কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটে সেগুলোর ব্যাপারে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বহুতল ভবন মালিকদের নিয়ে সম্প্রতি ২ দফা বৈঠক করা হয়েছে। তাদেরকে গাড়ি পার্কিংয়ের নিজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, হকার উচ্ছেদে অভিযান চলমান রয়েছে। নগরজুড়ে সড়ক উন্নয়ন কাজে খোঁড়াখুঁড়ি এবং ড্রেন প্রশস্তকরণের কাজ চলায় যানজট ঘটছে। এসব কাজ শেষ হলে যানজট কমবে।