পদ্মা ব্যাংকে মানুষের আস্থা বাড়ছে এমডি ও সিইও তারেক রিয়াজ খান

২০১২ সালে অনুমোদন দেয়া হয় নতুন প্রজন্মের ফারমার্স ব্যাংককে, যে সিদ্ধান্তকে অনেকেই বলেছিলেন ‘রাজনৈতিক বিবেচনা’। পরে নানা অনিয়মের কারণে ২০১৯ সালে নাম পরির্তন করে ওই বাংকই এখন পদ্মা ব্যাংক।

২০১৯ সাল থেকে নতুন ব্যাবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকটি। বর্তমানে ব্যাংকটির এমডি এবং সিইও তারেক রিয়াজ খান। ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা, আগামীর পদক্ষেপ জানতে সংবাদ-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন তারেক রিয়াজ খান।

ব্যাংকটির বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ ও গ্রাহকের আস্থা। তবে তারেক রিয়াজ বলছেন, পদ্মা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে, মানুষের আস্থাও বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে ১১ হাজার ৬৮৭ জন গ্রাহক বেড়েছে। তাতে ৪৫০ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। পদ্মা ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা না বাড়লে এতো নতুন গ্রাহক কোথা থেকে পেলাম... তার মানে মানুষের আস্থা বাড়ছে ব্যাংকটির প্রতি। বর্তমানে আমানতের পরিমাণ সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ জুন পর্যন্ত খেলাপি ছিল ৬৭ শতাংশ। ছয় মাসে খেলাপির পরিমাণ কমে ২০২২ ডিসেম্বর শেষে খেলাপি পরিমাণ হয়েছে ৬০ শতাংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার টার্গেট রয়েছে।’

তারেক রিয়াজ বলেন, ‘পাঁচটি ইসলামী উইন্ডো চালু করতে যাচ্ছে পদ্মা ব্যাংক। আশা করছি, রমজানের মধ্যে ইসলামী উইন্ডো চালু করতে পারবো। এর মাধ্যমে গ্রাহকের সেবা আরও বাড়ানো যাবে। এই উইন্ডোর মাধ্যমে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন।’

তিনি বলেন, তাদের ডেবিট কার্ড দিয়ে ‘বিনা মাশুলে’ দেশের যেকোন ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকের নিরাপদ ও দ্রুত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে কোর ব্যাংকিং সিস্টেম চালু রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে।

তারেক রিয়াজ বলেন, ‘আমানতের জন্য বিশেষ কিছু স্কিম চালু করেছি। যেখানে প্রতিদিন ব্যাংকে আমানত রেখে প্রতিদিন মুনাফা নেয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আকর্ষণীয় কিছু স্কিম চালু রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন চারটি ব্যাংকিং স্কিম রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। স্কিমগুলো হলোÑ পদ্মা নেক্সটজেন অ্যাকাউন্ট, পদ্মা মাস্টার মাইন্ড অ্যাকাউন্ট, পদ্মা স্পিরিট মান্থলি ডিপোজিট প্ল্যান এবং পদ্মা ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল। এছাড়া রয়েছে মাসিক ইনকাম স্কিম, টার্গেট ডিপোজিট স্কিম এবং পদ্মা অগ্রজ নামে আমানতের স্কিম চালু রয়েছে।

‘গ্রাহকরা যাতে ঘরে বসে সব ধরনের সেবা পেতে পারে সে জন্য রয়েছে একটি অ্যাপ, নাম পদ্মা ওয়ালেট। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ব্যাংকের একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে সব ধরণের লেনদেন করতে পারবে।

এছাড়া অনলাইনেও আমাদের ব্যাংকের সেবা মিলছে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে।’

তারেক রিয়াজ বললেন, আমানত বাড়ানো, ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ের দিকেও জোর দিচ্ছেন তারা।

‘প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি,’ বলেন তিনি।

‘পদ্মা ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব রকমের সাহায্য করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এছাড়া ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছেন। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। তাই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ব্যাংকটি,’ বললেন তিনি। তারেক রিয়াজ বলেন এই বছরটি তাদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জের’ বছর। ‘রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ।

এছাড়া গ্রাহকের চাহিদা মতো আমাদনির এলসি খোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ করোনো ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। ফলে এর বড় প্রভাব পড়েছে ব্যাংকখাতে।’

পদ্মা ব্যাংকের ৬০টি শাখা, ১৭টি এটিএম বুথ ও ৬টি উপশাখা এবং ৭টি এজেন্ট ব্যাংক রয়েছে।

আরও খবর
সাত মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে তিন হাজার ৬৯ কোটি টাকার
অননুমোদিত পণ্য বিক্রি করায় ক্যারি ফ্যামেলিকে জরিমানা
শেয়ারবাজারে আস্থা তৈরিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান
সোনালী ব্যাংকের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন
জনতা ব্যাংকে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন
স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রূপালী ব্যাংকের শ্রদ্ধা
স্বাধীনতা দিবসে ইসলামী ব্যাংকের শ্রদ্ধা নিবেদন
হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন
স্বাধীনতা দিবসে হামদর্দের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিতাস গ্যাসের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন
রাজশাহীতে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বিজনেস রিভিউ মিটিং
স্বাধীনতা দিবসে ডিএসইর শ্রদ্ধা নিবেদন

সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ , ১৩ চৈত্র ১৪২৯, ০৪ রমজান ১৪৪৪

পদ্মা ব্যাংকে মানুষের আস্থা বাড়ছে এমডি ও সিইও তারেক রিয়াজ খান

রমজান আলী

২০১২ সালে অনুমোদন দেয়া হয় নতুন প্রজন্মের ফারমার্স ব্যাংককে, যে সিদ্ধান্তকে অনেকেই বলেছিলেন ‘রাজনৈতিক বিবেচনা’। পরে নানা অনিয়মের কারণে ২০১৯ সালে নাম পরির্তন করে ওই বাংকই এখন পদ্মা ব্যাংক।

২০১৯ সাল থেকে নতুন ব্যাবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকটি। বর্তমানে ব্যাংকটির এমডি এবং সিইও তারেক রিয়াজ খান। ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা, আগামীর পদক্ষেপ জানতে সংবাদ-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন তারেক রিয়াজ খান।

ব্যাংকটির বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ ও গ্রাহকের আস্থা। তবে তারেক রিয়াজ বলছেন, পদ্মা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে, মানুষের আস্থাও বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে ১১ হাজার ৬৮৭ জন গ্রাহক বেড়েছে। তাতে ৪৫০ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। পদ্মা ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা না বাড়লে এতো নতুন গ্রাহক কোথা থেকে পেলাম... তার মানে মানুষের আস্থা বাড়ছে ব্যাংকটির প্রতি। বর্তমানে আমানতের পরিমাণ সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ জুন পর্যন্ত খেলাপি ছিল ৬৭ শতাংশ। ছয় মাসে খেলাপির পরিমাণ কমে ২০২২ ডিসেম্বর শেষে খেলাপি পরিমাণ হয়েছে ৬০ শতাংশ। ২০২৫ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার টার্গেট রয়েছে।’

তারেক রিয়াজ বলেন, ‘পাঁচটি ইসলামী উইন্ডো চালু করতে যাচ্ছে পদ্মা ব্যাংক। আশা করছি, রমজানের মধ্যে ইসলামী উইন্ডো চালু করতে পারবো। এর মাধ্যমে গ্রাহকের সেবা আরও বাড়ানো যাবে। এই উইন্ডোর মাধ্যমে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন।’

তিনি বলেন, তাদের ডেবিট কার্ড দিয়ে ‘বিনা মাশুলে’ দেশের যেকোন ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকের নিরাপদ ও দ্রুত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে কোর ব্যাংকিং সিস্টেম চালু রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে।

তারেক রিয়াজ বলেন, ‘আমানতের জন্য বিশেষ কিছু স্কিম চালু করেছি। যেখানে প্রতিদিন ব্যাংকে আমানত রেখে প্রতিদিন মুনাফা নেয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আকর্ষণীয় কিছু স্কিম চালু রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন চারটি ব্যাংকিং স্কিম রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। স্কিমগুলো হলোÑ পদ্মা নেক্সটজেন অ্যাকাউন্ট, পদ্মা মাস্টার মাইন্ড অ্যাকাউন্ট, পদ্মা স্পিরিট মান্থলি ডিপোজিট প্ল্যান এবং পদ্মা ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল। এছাড়া রয়েছে মাসিক ইনকাম স্কিম, টার্গেট ডিপোজিট স্কিম এবং পদ্মা অগ্রজ নামে আমানতের স্কিম চালু রয়েছে।

‘গ্রাহকরা যাতে ঘরে বসে সব ধরনের সেবা পেতে পারে সে জন্য রয়েছে একটি অ্যাপ, নাম পদ্মা ওয়ালেট। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ব্যাংকের একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে সব ধরণের লেনদেন করতে পারবে।

এছাড়া অনলাইনেও আমাদের ব্যাংকের সেবা মিলছে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে।’

তারেক রিয়াজ বললেন, আমানত বাড়ানো, ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ের দিকেও জোর দিচ্ছেন তারা।

‘প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি,’ বলেন তিনি।

‘পদ্মা ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব রকমের সাহায্য করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এছাড়া ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছেন। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। তাই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ব্যাংকটি,’ বললেন তিনি। তারেক রিয়াজ বলেন এই বছরটি তাদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জের’ বছর। ‘রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ।

এছাড়া গ্রাহকের চাহিদা মতো আমাদনির এলসি খোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ করোনো ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। ফলে এর বড় প্রভাব পড়েছে ব্যাংকখাতে।’

পদ্মা ব্যাংকের ৬০টি শাখা, ১৭টি এটিএম বুথ ও ৬টি উপশাখা এবং ৭টি এজেন্ট ব্যাংক রয়েছে।