টাইগারদের কাছ থেকে আগ্রাসী ব্র্যান্ডের ক্রিকেট চান কোচ হাথুরু

বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শুরু হবে আজ। সফরকারীদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে উজ্জীবিত সাকিব আল হাসানের দলটি ২০ ওভারের ক্রিকেটে মাঠে দাপট দেখাবে বলেই আশা।

গতকাল চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মলনে হাথুরুসিংহে জানালেন খেলোয়াড়দের মধ্যে খুব বেশি কিছু বদলায়নি। তবে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কিছুটা বদলেছে, ‘আমার মনে হয় না খুব বেশি কিছু বদলেছে, পরিবেশ কিছুটা বদলেছে ড্রেসিং রুমের মধ্যে। আমরা যেভাবে কথা বলি, যা নিয়ে কথা বলি; চেষ্টা করছি মনস্তাত্ত্বিকভাবে নির্ভার রাখতে দলকে। ’

হাথুরু যোগ করেন, ‘তাদের বলেছি, শুধু রেজাল্টের জন্য তাদের মূল্য কমে যাবে না। তারা একই ক্রিকেটার থাকবে, আমরা একই মানসিকতায় দেখছি, তারা মূল্যবান। আমরা তাদের নিয়েছি স্কিলের জন্যই। এছাড়া কিছুই বদলায়নি, জানি না আগে কী হয়েছে; কিন্তু তাদের স্কিল একই।’

বাংলাদেশ দলের কি নতুন যুগের শুরু? এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরু বলেন, ‘আমি এটাকে নতুন যুগ হিসেবে দেখছি না। আমরা সামনেও এভাবেই নিজেদের ক্রিকেট খেলতে চাই। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবো না। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, আমি সবসময় বলি এটার মানে এই না যে গিয়েই মারতে হবে। সবদিক থেকেই আমরা আক্রমণাত্মক। দল নির্বাচনে, ফিল্ডিং প্লেসিংয়ে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে, ফিল্ডিংয়ে, ব্যাটিংয়ে আমরা আক্রমণাত্মক। ট্যাকটিক্যালি আমরা আক্রমণাত্মক থাকবো।’

হাথুুরু আরও বলেন, ‘কী হবে সেটা নিয়ে ভাবছি না। সেভাবেই খেলতে চাই, যেটা সবচেয়ে ভালো পারবো। আমার মনে হয় যখন আমরা এমন আক্রমণাত্মক খেলবো আর স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারবো, তখন দল সব সময় ভালো করবে।’

তরুণ ব্যাটার আফিফের বাদ পড়া প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহের জবাব, ‘কখনও কখনও আবার ট্যাক্টিকাল কারণেও বাদ দেয়া হয়। যদি আমরা আলাদা কিছু করতে চাই, আলাদা কাউকে দেখতে চাই; এটাও কখনও কখনও কারণ হয়।’

এখন পর্যন্ত দুটি টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছেন আফিফ। কোনটিতেই তার বলার মতো পারফরম্যান্স নেই।

দল থেকে বাদ দেয়ার আগে আফিফের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন হাথুরুসিংহে। তাকে জানিয়েছেন এই মুহূর্তে আসলে দলের দাবি। আগামীতে এই তরুণকে ফিরতে হলে মিলতে হবে একাধিক সমীকরণ, ‘সে দলের বাইরে আছে এখন। তার এখন যা করা দরকার, তাই করতে হবে। গিয়ে রান করতে হবে। আমি তার সঙ্গে কিছু জায়গায় উন্নতির ব্যাপারে কথা বলেছি। যদি সে এটা করতে পারে, দলেও যদি জায়গা ফাঁকা থাকে। তাহলে সবার মতো সেও সুযোগ পাবে।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ না খেলে পুরো আইপিএলে থাকতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। কিন্তু বিসিবি তাদের সেই চাওয়ায় সায় দেয়নি। বিসিবির এই অবস্থানে জোর সমর্থন দিচ্ছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

৩১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএলের নতুন আসর। ১ এপ্রিল মোহালিতে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামলে কলকাতা। তবে এই ম্যাচ থেকে সাকিব-লিটনের খেলা সম্ভব না। কারণ ৪ এপ্রিল থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে নামবে বাংলাদেশ। সাকিব টেস্ট দলের অধিনায়ক আর লিটন সহ-অধিনায়ক। ‘আমার মনে হয় মোস্তাফিজও আইপিএল খেলবে। আমার মনে হয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত হচ্ছে আগে দেশের হয়ে খেলা। তাদের নাম সেখানে পাঠানোর আগেই বোর্ড এটা জানিয়ে দিয়েছিল। এটাই আছে।’

মে মাসে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে গিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে।

‘আইপিএলে খেললে তাদের দক্ষতা বাড়বে। এটা সত্য কোন সন্দেহ নেই কারণ এটা হাই-ক্লাস টুর্নামেন্ট। কিন্তু তাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশের হয়ে খেলা।’

নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন : আয়ারল্যান্ড সিরিজে ফলাফলের বাইরেও কিছু জিনিস দেখতে চান তারা, ‘জেতাটা মুখ্য অবশ্য। প্রথম কথা হলো জেতা। তার ফাঁকেফাঁকে আমরা কিছু দেখার চেষ্টা করব। যেহেতু আমাদের বেঞ্চটা এখন শক্ত। খুব বেশি এখন ঘাটতি পড়ে না। সেই জায়গায় কিছু দেখার সুযোগ থাকে। এটা দলের জন্য ভালো ব্যাপার।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু থেকেই আগ্রাসী শরীরী ভাষায় খেলতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে। জড়তা কাটিয়ে খেলার ফলও মিলেছে। হাবিবুল জানান, এবারও সেই একই ধরণ দেখতে চান নির্বাচকরা, ‘আমি চাইব দলটা যে ক্রিকেটটা খেলেছে সেটাই খেলুক। ফল তো পরের কথা। যে খেলাটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছে সেটাই ধরে রাখতে চাই। ভয়হীন ক্রিকেট আরকি।’

সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ , ১৩ চৈত্র ১৪২৯, ০৪ রমজান ১৪৪৪

টাইগারদের কাছ থেকে আগ্রাসী ব্র্যান্ডের ক্রিকেট চান কোচ হাথুরু

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শুরু হবে আজ। সফরকারীদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে উজ্জীবিত সাকিব আল হাসানের দলটি ২০ ওভারের ক্রিকেটে মাঠে দাপট দেখাবে বলেই আশা।

গতকাল চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মলনে হাথুরুসিংহে জানালেন খেলোয়াড়দের মধ্যে খুব বেশি কিছু বদলায়নি। তবে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কিছুটা বদলেছে, ‘আমার মনে হয় না খুব বেশি কিছু বদলেছে, পরিবেশ কিছুটা বদলেছে ড্রেসিং রুমের মধ্যে। আমরা যেভাবে কথা বলি, যা নিয়ে কথা বলি; চেষ্টা করছি মনস্তাত্ত্বিকভাবে নির্ভার রাখতে দলকে। ’

হাথুরু যোগ করেন, ‘তাদের বলেছি, শুধু রেজাল্টের জন্য তাদের মূল্য কমে যাবে না। তারা একই ক্রিকেটার থাকবে, আমরা একই মানসিকতায় দেখছি, তারা মূল্যবান। আমরা তাদের নিয়েছি স্কিলের জন্যই। এছাড়া কিছুই বদলায়নি, জানি না আগে কী হয়েছে; কিন্তু তাদের স্কিল একই।’

বাংলাদেশ দলের কি নতুন যুগের শুরু? এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরু বলেন, ‘আমি এটাকে নতুন যুগ হিসেবে দেখছি না। আমরা সামনেও এভাবেই নিজেদের ক্রিকেট খেলতে চাই। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবো না। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, আমি সবসময় বলি এটার মানে এই না যে গিয়েই মারতে হবে। সবদিক থেকেই আমরা আক্রমণাত্মক। দল নির্বাচনে, ফিল্ডিং প্লেসিংয়ে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে, ফিল্ডিংয়ে, ব্যাটিংয়ে আমরা আক্রমণাত্মক। ট্যাকটিক্যালি আমরা আক্রমণাত্মক থাকবো।’

হাথুুরু আরও বলেন, ‘কী হবে সেটা নিয়ে ভাবছি না। সেভাবেই খেলতে চাই, যেটা সবচেয়ে ভালো পারবো। আমার মনে হয় যখন আমরা এমন আক্রমণাত্মক খেলবো আর স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারবো, তখন দল সব সময় ভালো করবে।’

তরুণ ব্যাটার আফিফের বাদ পড়া প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহের জবাব, ‘কখনও কখনও আবার ট্যাক্টিকাল কারণেও বাদ দেয়া হয়। যদি আমরা আলাদা কিছু করতে চাই, আলাদা কাউকে দেখতে চাই; এটাও কখনও কখনও কারণ হয়।’

এখন পর্যন্ত দুটি টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছেন আফিফ। কোনটিতেই তার বলার মতো পারফরম্যান্স নেই।

দল থেকে বাদ দেয়ার আগে আফিফের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন হাথুরুসিংহে। তাকে জানিয়েছেন এই মুহূর্তে আসলে দলের দাবি। আগামীতে এই তরুণকে ফিরতে হলে মিলতে হবে একাধিক সমীকরণ, ‘সে দলের বাইরে আছে এখন। তার এখন যা করা দরকার, তাই করতে হবে। গিয়ে রান করতে হবে। আমি তার সঙ্গে কিছু জায়গায় উন্নতির ব্যাপারে কথা বলেছি। যদি সে এটা করতে পারে, দলেও যদি জায়গা ফাঁকা থাকে। তাহলে সবার মতো সেও সুযোগ পাবে।’

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজ না খেলে পুরো আইপিএলে থাকতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। কিন্তু বিসিবি তাদের সেই চাওয়ায় সায় দেয়নি। বিসিবির এই অবস্থানে জোর সমর্থন দিচ্ছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

৩১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএলের নতুন আসর। ১ এপ্রিল মোহালিতে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামলে কলকাতা। তবে এই ম্যাচ থেকে সাকিব-লিটনের খেলা সম্ভব না। কারণ ৪ এপ্রিল থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে নামবে বাংলাদেশ। সাকিব টেস্ট দলের অধিনায়ক আর লিটন সহ-অধিনায়ক। ‘আমার মনে হয় মোস্তাফিজও আইপিএল খেলবে। আমার মনে হয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত হচ্ছে আগে দেশের হয়ে খেলা। তাদের নাম সেখানে পাঠানোর আগেই বোর্ড এটা জানিয়ে দিয়েছিল। এটাই আছে।’

মে মাসে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে গিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে।

‘আইপিএলে খেললে তাদের দক্ষতা বাড়বে। এটা সত্য কোন সন্দেহ নেই কারণ এটা হাই-ক্লাস টুর্নামেন্ট। কিন্তু তাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশের হয়ে খেলা।’

নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন : আয়ারল্যান্ড সিরিজে ফলাফলের বাইরেও কিছু জিনিস দেখতে চান তারা, ‘জেতাটা মুখ্য অবশ্য। প্রথম কথা হলো জেতা। তার ফাঁকেফাঁকে আমরা কিছু দেখার চেষ্টা করব। যেহেতু আমাদের বেঞ্চটা এখন শক্ত। খুব বেশি এখন ঘাটতি পড়ে না। সেই জায়গায় কিছু দেখার সুযোগ থাকে। এটা দলের জন্য ভালো ব্যাপার।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু থেকেই আগ্রাসী শরীরী ভাষায় খেলতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে। জড়তা কাটিয়ে খেলার ফলও মিলেছে। হাবিবুল জানান, এবারও সেই একই ধরণ দেখতে চান নির্বাচকরা, ‘আমি চাইব দলটা যে ক্রিকেটটা খেলেছে সেটাই খেলুক। ফল তো পরের কথা। যে খেলাটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছে সেটাই ধরে রাখতে চাই। ভয়হীন ক্রিকেট আরকি।’