প্লাটফর্মের বেশির ভাগ লাইট জ্বলে না : যাত্রীভোগান্তি

আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন এখন মাছের বাজার

নওগাঁ আত্রাই আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন এখন মাছ বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রেলস্টেশন প্রবেশ পথে প্ল্যাটফর্মের উপরে মাছ বিক্রি করে মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে তারা কি ক্ষমতার আড়ালে স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উপর মাছ বিক্রি করে তা জানেনা কেউ। তাই এখন অনেকে আহসানগঞ্জ রেলস্টেশনকে মাছ বাজার স্টেশন নামেই জানে। মাছ বিক্রি বিষয়ে মাছ ব্যবসায়ী অনেকে জিজ্ঞাসা করলে তারা কোন উত্তর দেননি। এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা বলে অভিযোগ জনসাধারণের।

১৯২৭ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন। ব্রিটিশ শাসনকালে এই স্টেশনটি ‘আত্রাই ঘাট’ নামে নামকরণ করা হয়েছিল। পরে তা পরিবর্তন করে স্টেশন প্রতিষ্ঠাতা জমিদার মুন্সী আহ্সান উল্লাহ্ মোল্লার নামে রেখে আহ্সানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন নামকরণ করা হয়। বর্তমান আহ্সানগঞ্জ রেলস্টেশনের উপর দিয়ে ৩২টি ট্রেন চলাচল করে, এর মধ্যে ৮টি ট্রেনের স্টপেজ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন স্টেশন থেকে ট্্েরনযোগে শত শত যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। গত জুন ২০২১-২২ অর্থবছরে আহসানহঞ্জ রেলস্টশন থেকে আয় হয়েছে ২,১৯,১৪৭৬৬ টাকা। এই স্টেশনে বিপুল পরিমাণ আয় হওয়া সত্ত্বেও স্টেশনের প্রবেশ পথ দোকানদারদের দখলে, ট্রেনের জন্য স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষামান যাত্রীর বসার আসন নেই, আর আসন যা রয়েছে সেগুলোতে ফল, পান, সিগারেটের দোকানসহ বিভিন্ন দোকান দিয়ে দখল করে রাখে। আবার প্ল্যাটফর্মের ওপর মটর সাইকেল রেখে ঘোরাফেরা করে। বিশেষ করে প্ল্যাটফর্মের যাত্রী ছাউনির টিন দীর্ঘদিন থেকে ঝাঝড়া হয়ে রয়েছে। যার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। স্টেশনে বিদ্যুৎ থাকলেও প্ল্যাটফর্মের বেশিরভাগ জায়গায় নেই লাইট। বিদ্যুৎ চলে গেলে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের থাকতে হয় অন্ধকারে, নেই সোলার লাইটিং এর ব্যবস্থাও। ফলে ট্রেনর সকল যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি স্টেশনের ঐতিহ্য এখন হারাতে বসেছে।

উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, আহ্সানগঞ্জ রেলস্টেশনে বেশির ভাগ জায়গা প্রভাবশালীর দখলে, যার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি। শুধু সাধারণ মানুষ নয় এই স্টেশন মাস্টার ও তাদের কিছু বলতে পারেনা। ট্রেনের যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি নাটোর আমি, আমি আত্রাইতে চাকরি করি তাই আমি ট্রেনে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি, দীর্ঘদিন ধরে দেখছি এই স্টেশন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমার মতো অপেক্ষায় থাকা ট্রেনের যাত্রীরা স্টেশনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে তার কোন ভালো ব্যবস্থাও নেয়। আবার স্টেশনে উপরে মাছ বিক্রি করায় অনেক দুর্গন্ধ ছড়ায়। স্থানীয় আরও কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, কিছু ব্যক্তি রেলস্টেশনের প্রবেশ পথ বন্ধ করে জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করে রেখেছে, আবার প্ল্যাটর্ফমের ওপর বেশির ভাগ সময় মাছ বিক্রি করে, যার কারণে যাত্রীদের ট্রেনে উঠা নামা করতে অনেক কষ্ট হয়। এবং রেলস্টশন কর্তৃপক্ষ এবং গার্ড (নিরাপত্তা প্রহরী) থাকলেও তাদের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা। এ সকল বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে আহসানগঞ্জ রেল স্টেশনের বুকিং সহকারী গ্রেট-১ (ইনর্চাজ) সুব্রত কুমার দাস বলেন, আমি এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অনেকবার জানিয়েছি। এবং মাছ বিক্রেতাদের বহুবার মাছ বিক্রি করতে মানা করেছি তারা আমার কথা শুনেনা, এখন হয় তাদের সাথে আমার মারামারি করতে হবে, না হলে আমাকে চেয়ার ছাড়া অন্য জায়গাই চলে যেতে হবে।

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ , ১৪ চৈত্র ১৪২৯, ০৫ রমজান ১৪৪৪

প্লাটফর্মের বেশির ভাগ লাইট জ্বলে না : যাত্রীভোগান্তি

আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন এখন মাছের বাজার

প্রতিনিধি,আত্রাই (নওগাঁ)

image

আত্রাই (নওগাঁ) : আত্রাই আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন -সংবাদ

নওগাঁ আত্রাই আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন এখন মাছ বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রেলস্টেশন প্রবেশ পথে প্ল্যাটফর্মের উপরে মাছ বিক্রি করে মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে তারা কি ক্ষমতার আড়ালে স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উপর মাছ বিক্রি করে তা জানেনা কেউ। তাই এখন অনেকে আহসানগঞ্জ রেলস্টেশনকে মাছ বাজার স্টেশন নামেই জানে। মাছ বিক্রি বিষয়ে মাছ ব্যবসায়ী অনেকে জিজ্ঞাসা করলে তারা কোন উত্তর দেননি। এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা বলে অভিযোগ জনসাধারণের।

১৯২৭ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন। ব্রিটিশ শাসনকালে এই স্টেশনটি ‘আত্রাই ঘাট’ নামে নামকরণ করা হয়েছিল। পরে তা পরিবর্তন করে স্টেশন প্রতিষ্ঠাতা জমিদার মুন্সী আহ্সান উল্লাহ্ মোল্লার নামে রেখে আহ্সানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন নামকরণ করা হয়। বর্তমান আহ্সানগঞ্জ রেলস্টেশনের উপর দিয়ে ৩২টি ট্রেন চলাচল করে, এর মধ্যে ৮টি ট্রেনের স্টপেজ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন স্টেশন থেকে ট্্েরনযোগে শত শত যাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। গত জুন ২০২১-২২ অর্থবছরে আহসানহঞ্জ রেলস্টশন থেকে আয় হয়েছে ২,১৯,১৪৭৬৬ টাকা। এই স্টেশনে বিপুল পরিমাণ আয় হওয়া সত্ত্বেও স্টেশনের প্রবেশ পথ দোকানদারদের দখলে, ট্রেনের জন্য স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষামান যাত্রীর বসার আসন নেই, আর আসন যা রয়েছে সেগুলোতে ফল, পান, সিগারেটের দোকানসহ বিভিন্ন দোকান দিয়ে দখল করে রাখে। আবার প্ল্যাটফর্মের ওপর মটর সাইকেল রেখে ঘোরাফেরা করে। বিশেষ করে প্ল্যাটফর্মের যাত্রী ছাউনির টিন দীর্ঘদিন থেকে ঝাঝড়া হয়ে রয়েছে। যার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। স্টেশনে বিদ্যুৎ থাকলেও প্ল্যাটফর্মের বেশিরভাগ জায়গায় নেই লাইট। বিদ্যুৎ চলে গেলে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের থাকতে হয় অন্ধকারে, নেই সোলার লাইটিং এর ব্যবস্থাও। ফলে ট্রেনর সকল যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি স্টেশনের ঐতিহ্য এখন হারাতে বসেছে।

উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, আহ্সানগঞ্জ রেলস্টেশনে বেশির ভাগ জায়গা প্রভাবশালীর দখলে, যার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের কাছে জিম্মি। শুধু সাধারণ মানুষ নয় এই স্টেশন মাস্টার ও তাদের কিছু বলতে পারেনা। ট্রেনের যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি নাটোর আমি, আমি আত্রাইতে চাকরি করি তাই আমি ট্রেনে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করি, দীর্ঘদিন ধরে দেখছি এই স্টেশন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমার মতো অপেক্ষায় থাকা ট্রেনের যাত্রীরা স্টেশনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে তার কোন ভালো ব্যবস্থাও নেয়। আবার স্টেশনে উপরে মাছ বিক্রি করায় অনেক দুর্গন্ধ ছড়ায়। স্থানীয় আরও কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, কিছু ব্যক্তি রেলস্টেশনের প্রবেশ পথ বন্ধ করে জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করে রেখেছে, আবার প্ল্যাটর্ফমের ওপর বেশির ভাগ সময় মাছ বিক্রি করে, যার কারণে যাত্রীদের ট্রেনে উঠা নামা করতে অনেক কষ্ট হয়। এবং রেলস্টশন কর্তৃপক্ষ এবং গার্ড (নিরাপত্তা প্রহরী) থাকলেও তাদের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা। এ সকল বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে আহসানগঞ্জ রেল স্টেশনের বুকিং সহকারী গ্রেট-১ (ইনর্চাজ) সুব্রত কুমার দাস বলেন, আমি এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অনেকবার জানিয়েছি। এবং মাছ বিক্রেতাদের বহুবার মাছ বিক্রি করতে মানা করেছি তারা আমার কথা শুনেনা, এখন হয় তাদের সাথে আমার মারামারি করতে হবে, না হলে আমাকে চেয়ার ছাড়া অন্য জায়গাই চলে যেতে হবে।